
২৯ জানুয়ারি, ২০২৫ ২১:২৫
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থান চলকালে সিলেটের গোলাপগঞ্জে গুলিতে নিহত মো. সানি আহমদ (২২) এর লাশ কবর থেকে তুলা হয়েছে। গত ৪ আগস্ট গুলিতে সানি মারা যান। প্রায় পাঁচ মাস পর বুধবার কবর থেকে তার লাশ উত্তোলন করা হয়।
বুধবার সকালে আদালতের নির্দেশে উপজেলা সহকারী কমিশনার ভূমি ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ফয়সাল মাহমুদ ফুয়াদের নেতৃত্বে লাশটি উত্তোলন করা হয়। সানির নিজ এলাকা উপজেলার আমুড়া ইউনিয়নের শিলঘাট এলাকা থেকে লাশটি উত্তোলনের পর ময়নাতদন্তের জন্য সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
জানা যায়, শেখ হাসিনা সরকারের পতনের আগের দিন গত ৪ আগস্ট গোলাপগঞ্জে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মসূচি চলাকালে পুলিশ, বিজিবি গুলিতে ৭ জন নিহত হন। তাদের মধ্যে সানি আহমদও ছিলেন। এ ঘটনায় সানি আহমদের পিতা কয়ছর আহমদ প্রথমে ২৭ আগস্ট ১১৯ জন আসামির নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা ৮০থেকে ৯জনকে আসামি করে গোলাপগঞ্জ মডেল থানার একটি মামলা দায়ের করেন। এরপর ২ সেপ্টম্বর দুপুরে একই ঘটনায় সিলেটের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের ২য় আদালতে নিহত সানি আহমদের পিতা কয়ছর আহমদ আরেকটি মামলা দায়ের করেন। বর্তমানে একই ঘটনায় দুটি মামলা চলমান রয়েছে।
লাশ উত্তোলনের সময় উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ফয়সাল মাহমুদ ফুয়াদ, সানি হত্যা মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও সিআইডির পরিদর্শক ইফতেখার আহমদসহ সিআইডির টিম ও গোলাপগঞ্জ মডেল থানার পুলিশ উপস্থিত ছিলেন।
উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ফয়সাল মাহমুদ ফুয়াদ বলেন, আদালতের নির্দেশে সানির লাশ ময়নাতদন্তের জন্য তোলা হয়েছে।
ছাত্র-জনতার আন্দোলনে সিলেটে নিহতদের মধ্যে সানির আহমদের মরদেহ প্রথম কবর থেকে তোলা হল।
সানির লাশ তোলার পর তার বাবা কয়ছর সাংবাদিকদের বলেন, “সঠিক ও ন্যায় বিচারের আশায় আমার ছেলের লাশ উত্তোলন করা হয়েছে৷ আমি প্রশাসনের কাছে ন্যায় বিচার দাবি করছি।”
স্থানীয় ইউপি সদস্য আব্দুল গফফার কুটি বলেন, “সানিসহ উপজেলায় যারা নিহত হয়েছেন, তাদের হত্যার সঙ্গে যারা জড়িত সঠিক তদন্তের মাধ্যমে তাদেরকে আইনের আওতায় আনার দাবি করছি।”
পুলিশ ও আদালত সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, মামলার তদন্ত কর্মকর্তার আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গতবছরের ৪ ও ৫ সেপ্টেম্বর পৃথকভাবে সিলেটের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমলি আদালত-২ এর বিচারক আবিদা সুলতানা মলি গোলাপগঞ্জে নিহত ছয়জনের লাশ তোলার আদেশ দেন।
গোলাপগঞ্জে ছাত্র-আন্দোলনে গুলিতে নিহত অন্যরা হলেন- উপজেলার নিশ্চিন্ত গ্রামের মৃত তৈয়ব আলীর ছেলে নাজমুল ইসলাম (২৪), দক্ষিণ রায়গড় গ্রামের মৃত সুরই মিয়ার ছেলে হাসান আহমদ জয় (২০), বারকোট গ্রামের মৃত মকবুল আলীর ছেলে তাজ উদ্দিন (৪০), দত্তরাইল বাসাবাড়ি এলাকার আলাই মিয়ার ছেলে মিনহাজ আহমদ (২৩) ও ঘোষগাঁও ফুলবাড়ি গ্রামের মোবারক আলীর ছেলে গৌছ উদ্দিন (৩৫)।
আপনার মন্তব্য