
০৫ ফেব্রুয়ারি , ২০২৫ ২৩:৩৯
প্রশাসনের অনুমতি না পাওয়ার কারণে সিলেটে একুশে বইমেলা স্থগিত করেছে সিলেটে প্রকাশক পরিষদ। বুধবার সিলেট প্রকাশক পরিষদের সাধারণ সম্পাদক সুফি সুফিয়ান স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে বইমেলা স্থগিতের কথা জানানো হয়।
বিজ্ঞপিতে সিলেট সিটি করপোরেশনের (সিসিক) বিরুদ্ধে অসহযোগিতারও অভিযোগ আনেন সুফি। তার দাবি, প্রকাশক পরিষদকে একুশে বইমেলার জন্য কেন্দ্রীয় শহিদ মিনার চত্বর বরাদ্দ দিয়ে আবার বাতিল করেছে।
৬ ফেব্রুয়ারি থেকে সিলেট কেন্দ্রিয় শহীদ মনিারে ১০ দিনব্যাপী একুশে বইমেলার আয়োজন করেছিলো সিলেট প্রকাশক পরিষদ।
প্রকাশক পরিষদের সাধারণ সম্পাদক সুফি সুফিয়ান বইমেলা স্থগিতের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ‘সিসিক বইমেলার বরাদ্দ দিয়ে অদৃশ্য কারণে আবার বাতিল করেছে। এ জন্য সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করে আমরা সিসিকের অসহযোগিতার কারণে মেলা স্থগিত করতে বাধ্য হয়েছি। এ ব্যাপারে আমাদের বক্তব্যসংবলিত একটি সংবাদ বিজ্ঞপ্তি গণমাধ্যমকে দেওয়া হয়েছে।’
‘অসহযোগিতা’ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে বুধবার সিসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা রেজাই রাফিন সরকার বলেন, ‘বইমেলা বাতিল করা হয়নি। আয়োজকদের বলা হয়েছিল পুলিশ ক্লিয়ারেন্স দেওয়ার জন্য। তারা সেটি দিতে পারেননি। পাবলিক প্লেসে পুলিশ ক্লিয়ারেন্স ছাড়া অনাকাঙ্ক্ষিত অঘটন ঘটনার শঙ্কা থাকে।’
প্রকাশক পরিষদ থেকে বলা হয়, অতীতে কোনো মেলায় এ রকম পুলিশ ক্লিয়ারেন্স চাওয়া হয়নি। এমনকি একই স্থানে আরও দুটি বইমেলা করা হয়েছে। এগুলোর জন্য সিসিক ক্লিয়ারেন্স চায়নি। এটি ছিল বইমেলার বরাদ্দ বাতিলের একটি কৌশল। শেষ মুহূর্তে মেলা স্থগিতের কারণে প্রকাশকদের আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়তে হয়েছে বলে তারা অভিযোগ করেন।
বইমেলার প্রচারণা থেকে জানা গেছে, উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকার কথা ছিল বাংলাদেশ প্রেস ইনস্টিটিউটের (পিআইবি) মহাপরিচালক ও লেখক-সাংবাদিক ফারুক ওয়াসিফের। উদ্বোধক হিসেবে উপস্থিত থাকার কথা ছিল সিলেট সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র ও বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আরিফুক হক চৌধুরীর।
এদিকে বইমেলার বরাদ্দ দিয়ে আবার সেটা বাতিল করায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন সংস্কৃতিকর্মীসহ নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা। ‘সংক্ষুব্ধ নাগরিক আন্দোলন’ সিলেটের সমন্বয়ক আব্দুল করিম বলেন, ‘বইমেলার আয়োজনের জন্য প্রথমে যারা আবেদন করেছিলেন সুযোগটা তাদেরই দেওয়া উচিত ছিল। অতীতে বইমেলাগুলো স্বাভাবিকভাবে হয়েছে। এখন পরিবর্তিত অবস্থায় সিসিক হয়তো চাপে পড়েছে। নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি না থাকলে আমলাদের এ রকম চাপ মোকাবিলার সাধ্য নেই। সিসিকের এই কাজটি অনুচিত হয়েছে। ঊর্ধ্বতনদের এ ব্যাপারে খোঁজ নেওয়া দরকার।’
কবি মালেকুল হক ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘সিলেটে ২১টি প্রকাশনা সংস্থা রয়েছে। এবারের বইমেলাকে জুলাই বিপ্লবে শহিদদের উৎসর্গ করা হয়েছিল। মেলার জন্য শহিদ মিনার চত্বর বরাদ্দ পেয়ে প্রকাশক পরিষদ একাধিকবার সিটি করপোরেশন ও পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে। কিন্তু অদৃশ্য শক্তির ভয়ে তারা (সিসিক) অনুমতি দেয়নি বলে আমরা জেনেছি। এটা সংস্কৃতির ওপর আঘাত বলে আমরা মনে করি।’
আপনার মন্তব্য