নিজস্ব প্রতিবেদক

২৯ মার্চ, ২০১৬ ১৪:৫১

সিলেটে ফিরে মায়ের সাথে একই হাসপাতালে ভর্তি হলেন কারামুক্ত আরিফ

সিলেট সিটি কর্পোরেশনের সাময়িক বরখাস্তকৃত মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী সিলেটের মাউন্ট এডোরা হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। একই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন তাঁর মা আমিনা খাতুন।

মঙ্গলবার দুপুর বারোটার দিকে অসুস্থ মায়ের সাথে দেখার পর ৪০৫নং কেবিনে তাকে ভর্তি করে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

এর আগে সোমবার ১৫ দিনের অন্তর্বর্তীকালীন জামিনে কারামুক্ত হয়ে পেয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হন আরিফ।

মঙ্গলবার ভোররাত সাড়ে ৪টার দিকে সিলেটে উদ্দেশ্যে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ত্যাগ করেন। সকাল সোয়া ১১টায় তিনি সিলেট এসে কুমারপাড়ায়  নিজ বাসভবনে কিছু সময় কাটান।

এরপর সকাল এগারোটার দিকে অসুস্থ মা আমিনা খাতুনকে দেখতে মাউন্ট এডোরা হাসপাতালের যান আরিফুল হক।

বার্ধক্যজনিত কারণে দুই সপ্তাহেরও বেশি সময় থেকে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন আমিনা খাতুন। প্রতিদিনই তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হচ্ছে।

এসময় ছেলেকে কাছে পেয়ে আনন্দে আত্মহারা আরিফের মা আক্ষেপ করে বলেন, ''আমার ছেলে দীর্ঘদিন থেকে জেলে, আমি অসুস্থ। এতদিন কেউই আমার খোঁজ নেয়নি। এমনকি আজ সকালেও কেউ  আসেনি। এখন আমার ছেলে আসছে এজন্য লোকের অভাব নেই।''

জানা যায়, আরিফুল হক নিজেও বিভিন্ন জটিল রোগে আক্রান্ত। মায়ের সাথে তিনিও একই হাসপাতালে ভর্তি হন।

এ সময় আরিফুল হককে দেখতে হাসপাতালে হাজির হন সিলেট সিটি কর্পোরেশনের কাউন্সিলর এবিএম জিল্লুর রহমান উজ্জ্বল, তৌফিকুল হাদী, মোস্তাক আহমদ, জাবেদ আহমদ, রাজিক মিয়া, মহিলা কাউন্সিলর সাহানারা বেগম, সালেহা কবির শেপী, কুহিনূর ইয়াসমিন ঝর্ণা, শামীমা স্বাধীন, সিলেট মহানগর বিএনপির সভাপতি নাসিম হোসাইন, সাধারণ সম্পাদক বদরুজ্জামান সেলিম, সিলেট জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক এমরান চৌধুরী, মহানগর বিএনপি নেতা মঈন উদ্দিন সুহেল, মহানগর ছাত্রদলের সাংগঠনিক সম্পর্ক আব্দুর রকিব চৌধুরী, রজব আহমদ, সৈয়দ আমিনুর হক , আশরাফ উদ্দিন রুবেল হাজী দিনার প্রমুখ।

এছাড়াও সিলেটে কর্মরত বিভিন্ন সাংবাদিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দও আরিফুল হক চৌধুরীকে দেখতে হাসপাতালে যান।

গত রবিবার সকাল ১১টায় আরিফের নিজের অসুস্থতা এবং মায়ের অসুস্থতার প্রেক্ষিতে হবিগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ আদালত থেকে বিস্ফোরক মামলায় জামিন লাভ করেন। হবিগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মোহাম্মদ আতাবুল্লাহ তার ১৫ দিনের জামিন মঞ্জুর করেন।

এর আগে গত ২২ মার্চ হাইকোর্ট থেকে প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী শাহ এএমএস কিবরিয়া হত্যা মামলায় ১৫ দিনের জামিন পেয়েছিলেন আরিফ। তবে বিস্ফোরক মামলা থাকার কারণে তিনি মুক্তি পাননি।

বার্ধক্যজনিত রোগে ভোগা আরিফুল হকের মা নগরীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন। তাঁর অবস্থা সঙ্কটাপন্ন বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।

প্রসঙ্গত, ২০১৪ সালের ২১ ডিসেম্বর মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সিআইডির সিলেট অঞ্চলের সহকারী পুলিশ সুপার মেহেরুন নেছা পারুল মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী, হবিগঞ্জের তৎকালীন মেয়র জি কে গউছ এবং সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক সচিব হারিছ চৌধুরীসহ ১১ জনের নাম যোগ করে কিবরিয়া হত্যা মামলার সংশোধিত সম্পূরক অভিযোগপত্র জমা দেন। পরদিন আরিফসহ অন্যদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারী পরোয়ানা জারি করা হয়।

পরে ওই বছরের ৩০ ডিসেম্বর আত্মসমর্পণ করেন আরিফ। এরপর থেকে তিনি কারাগারেই ছিলেন।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত