শাকিলা ববি, হবিগঞ্জ

২৯ মার্চ, ২০১৬ ১৬:২৪

মাধবপুরে গালি দেওয়ায় শিশু ইসমাইলকে হত্যা করেন ভাবি

আদালতে স্বীকারোক্তি

মাধবপুরে গালি দেওয়ায় শিশু ইসমাইলকে হত্যা করেছেন তার ভাবি শাপলা। মঙ্গলবার তিনি আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে এমন তথ্য দিয়েছেন। দুপুরে হবিগঞ্জের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট নিশাত সুলতানার আদালতে তার জবানবন্দি রেকর্ড করা হয়।

মঙ্গলবার (২৯ মার্চ) বেলা দেড়টায় হবিগঞ্জ পুলিশ সুপার কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান পুলিশ সুপার জয়দেব কুমার ভদ্র।

জবানবন্দিতে শাপলা জানান, তার দেবর ইসমাইল প্রায়ই তার কাছে টাকা চাইতো। না দিলেই অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করতো। ঘটনার দিন সকাল ৯টায় বাসায় কেউ ছিলনা। এ সময় ইসমাইল ভাবির কাছে টাকা চেয়ে না পেয়ে গালিগালাজ করে। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে শাপলা বেগম তার গলা চেপে ধরেন। শাপলার ভাষ্য মতে শুধুমাত্র ভয় দেখানোর উদ্দেশ্যে সে ইসমাইলকে গলা টিপে ধরে হত্যার উদ্দেশ্যে নয়। এক পর্যায়ে শ্বাসপ্রশ্বাস বন্ধ হয়ে সে মারা যায়। তাৎক্ষণিক দিশেহারা হয়ে শাপলা বেগম দেবর ইসমাইলকে ঘরের ভেতর ধানের গোলায় লুকিয়ে রাখেন। উদ্দেশ্য ছিল পরে সুবিধামতো সময়ে লাশ পুকুরে ফেলে দেবেন।

সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার জয়দেব কুমার ভদ্র জানান, নিহত শিশু ইসমাইলের বাবা রজব আলী ২৬ মার্চ সন্ধ্যায় সন্তান নিখোঁজের বিষয়ে থানায় সাধারণ ডায়রি করেন। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে বেতার বার্তা, মাইকিং ও পোস্টারিংয়ের ব্যবস্থা করে। ২৮ মার্চ বাড়ির ধানের গোলার নিচ থেকে লাশ উদ্ধারের পর প্রাথমিক ভাবে নিহতের বাবা রজব আলী, মা রহিমা বেগম, ভাই জুয়েল মিয়া ও তার স্ত্রী শাপলা বেগম এবং বোন রুমা আক্তারকে আটক করে থানায় নেয়া হয়। ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদে শাপলা হত্যাকাণ্ডের কথা স্বীকার করেন। পরে হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার করায় ইসমাইলের ভাবী শাপলা ছাড়া অন্যদের পুলিশ ছেড়ে দেয়।

এ ঘটনায় ইসমাইলের পিতা রজব আলী তার বড় ছেলের বউ শাপলা বেগমকে একমাত্র আসামী করে মাধবপুর থানায় মামলা দায়ের করেন।

প্রেস ব্রিফিংয়ের সময় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শহীদুল ইসলাম, সহকারী পুলিশ সুপার মাসুদুর রহমান মনির ও মাধবপুর থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোল্লা মোঃ মুনির হোসেন উপস্থিত ছিলেন।

উল্লেখ্য, মাধবপুর উপজেলা সদরের দক্ষিণ মাধবপুর এলাকার বাসিন্দা রজব আলীর ছেলে শিশু ইসমাইল ২৬ মার্চ সকালে বাবার নিকট থেকে ২০ টাকা নিয়ে বাসা থেকে বের হয়। এর পর থেকে তাকে আর খোঁজে পাওয়া যাচ্ছিলনা। দিনভর ছেলেকে না পেয়ে সন্ধ্যায় বাবা থানায় সাধারণ ডায়রি করেন। পরে ২৮ মার্চ বাড়ির ধানের গোলার নিচ থেকে লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত