শাকিলা ববি, হবিগঞ্জ

২৯ আগস্ট, ২০১৬ ২৩:৫২

গণধর্ষণ সইতে না পেরে মারা যায় শিশু সুলতানা

দাবি হবিগঞ্জ পুলিশের

হবিগঞ্জের বাহুবলে ছয় জন মিলে টানা ধর্ষণ করে শিশু সুলতানা (৯)কে। নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে একপর্যায়ে মারা যায় সে। রোববার রাত ৯টায় হবিগঞ্জ পুলিশ সুপার কার্যালয়ে প্রেস ব্রিফিংয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শামসুর রহমান এ তথ্য জানান।

তিনি জানান, ১৬ আগস্ট তেল আনতে  দোকানে যাওয়ার সময় বাবলু, অলি মিয়া, মুককান্দির সিজিল মিয়া, হামিদনগরের সিজিল, মুখলেছ ও শামীম শিশু সুলতানাকে মুখ বেধেঁ অটোরিকশাতে করে বাবলুর বাড়িতে নিয়ে যায়। বাবুলের বাড়িতে তারা ৬ জন শিশু সুলতানাকে পালাক্রমে ধর্ষণ করে। এদের নির্যাতন সইতে না পেরে এক পর্যায়ে শিশু সুলতানা  মারা যায়। দুইদিন বাবুলের বাড়িতেই লাশটি লুকিয়ে রাখে তারা। পরে লাশ পঁচে গন্ধ বের হলে  ১৯ আগস্ট রাতে তারা সুলতানার লাশ ধানক্ষেতে ফেলে যায়।

এএসপি বলেন , উত্তরসুর গ্রামের মোঃ আফজাল মিয়ার মেয়ে সুলতানা প্রতিদিনই তার বাবার ট্রাক্টরের তেল আনার জন্য বাজারে যেত। প্রতিদিনের ন্যায় ১৬ আগষ্ট দুপুরে বাজার থেকে তেল আনতে গিয়ে নিখোঁজ হয় সুলতানা। এ নিখোঁজের ঘটনায় ১৭ আগষ্ট বাহুবল থানায় সাধারন ডায়রী করেন তার পিতা। পরবর্তীতে ১৯ আগষ্ট সকালে উত্তরসূরী গ্রামের পশ্চিমে ফজলু মিয়ার ধানী জমিতে সুলতানার লাশ পাওয়া যায়। ১৯ আগষ্ট সুলতানার পিতা আফজাল মিয়া বাদী হয়ে বাহুবল থানায় মামলা দায়ের করেন। ঐদিনই অলি মিয়া ও মুককান্দির সিজিল মিয়াকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

গত ২৩ আগষ্ট পুলিশ সুপার মামলাটি জেলা গোয়েন্দা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেন। শনিবার ডিবি পুলিশ গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে এ মামলার অন্যতম আসামী বাবলু ও হামিদনগরের সিজিল মিয়াকে আটক করে। রোববার বিকেলে হবিগঞ্জ সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ কাওছার আলমের আদালতে এ হত্যাকান্ডের লোমহর্ষক স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয় ধর্ষক বাবুল মিয়া (৩০)।

তিনি আরো জানান, আসামী বাবলু ও সিজিলকে গ্রেফতারের সময় তাদেরকে পর্ণ মুভি দেখা অবস্থায় পাওয়া গেছে।  এ ঘটনায় তদন্ত করতে গিয়ে আরো জানা গেছে আসামী বাবলু, অলি মিয়া, মুককান্দির সিজিল মিয়া, হামিদনগরের সিজিল, মুখলেছ ও শামীম খারাপ চরিত্রের লোক। তাদের বিরোদ্ধে এর আগেও বিভিন্ন বয়সী নারীদেকে শ্লীলতাহানীর অভিযোগ রয়েছে।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এ হত্যাকান্ডের পেছনে বিগত ইউপি নির্বাচনের কোনো সংশ্লিষ্টতা পাওয়া যায়নি।  উল্লেখ্য গত শনিবার ভোরে ডিবি পুলিশ অভিযান চালিয়ে বাবুল ও এ মামলার অন্যতম আসামী আব্দুস সামাদের ছেলে  সিজিল মিয়াকে আটক করে। সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যের মাঝে উপস্থিত ছিলেন সহকারি পুলিশ সুপার সাজিদুর রহমান, রাসেলুর রহমান, এএসপি হেডকোয়ার্টার সুদিপ্ত রয়, ডিবির ওসি কেএম আজিমিরীজ্জামান প্রমুখ।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত