নিজস্ব প্রতিবেদক

০৪ অক্টোবর, ২০১৬ ০০:২৯

‘প্রেমে প্রত্যাখ্যাত হয়েই’ খাদিজাকে কুপায় ছাত্রলীগ নেতা, আহতকে ঢাকায় প্রেরণ

প্রেমে প্রত্যাখাত হওয়ার 'প্রতিশোধ' নিতেই খাদিজা আক্তার নামের সিলেট সরকারী মহিলা কলেজের ছাত্রীকে কুপিয়ে জখম করা হয়। সোমবার বিকেলে এমসি কলেজ ক্যাম্পাসে প্রকাশ্যে কুপিয়ে জখম করে বদরুল আলম নামের এক শাবি ছাত্র। বদরুল শাবি ছাত্রলীগের সহসম্পাদক।

গুরুতর আহত খাদিজাকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় সোমবার মধ্যরাতে ঢাকায় প্রেরণ করা হয়েছে। এঘটনার পর এমসি কলেজের শিক্ষার্থীরা হামলাকারী বদরুলকে গনপিটুনি দিয়ে পুলিশের হাতে তুলে দেয়। গণপিটুনিতে আহত বদরুলকেও ওসমানী হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

আক্রান্ত ছাত্রী খাদিজা আক্তার সিলেট সরকারি মহিলা কলেজের স্নাতক দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী। পরীক্ষা দিতে সে সোমবার এমসি কলেজে গিয়েছিলো।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, সিলেট সদর উপজেলার মোগলগাঁও ইউনিয়নের হাউসা গ্রামের মাসুক মিয়ার মেয়ে খাদিজা আক্তার নার্গিসের বাড়িতে লজিং থাকত শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবি) অর্থনীতি বিভাগের শেষ বর্ষের ছাত্র ও শাবি ছাত্রলীগের সহসম্পাদক বদরুল আলম। সেখানে থাকাকালে মেয়েটির কাছে প্রেম নিবেদন করে সে। নার্গিস বারবার প্রত্যাখ্যান করে। বিকেলে পরীক্ষা দিয়ে বের হওয়ার পর এমসি কলেজ মসজিদের পেছনে শিক্ষার্থীদের সামনে দা দিয়ে কোপাতে থাকে বদরুল। প্রত্যক্ষদর্শী লোকজন নার্গিসের চিৎকার শুনে এগিয়ে যায়। তারা নার্গিসকে সংকটাপন্ন অবস্থায় উদ্ধার করে এবং বদরুলকে গণধোলাই দিয়ে পুলিশে দেয়। বদরুল সুনামগঞ্জের ছাতক উপজেলার সুনাইঘাতি গ্রামের সাইদুর রহমানের ছেলে।
 
এ ব্যাপারে এমসি কলেজের মনোবিজ্ঞান বিভাগের বিভাগীয় প্রধান প্রফেসর সালেহ আহমদ বলেন, ‘কিছু ছাত্র এসে একটি মেয়েকে কুপিয়ে দুই টুকরো করে ফেলেছে বলে আমাদের জানায়। সঙ্গে সঙ্গে পুলিশ এসে হামলাকারী যুবককে জনতার কবল থেকে উদ্ধার করে। আমরা ওই মেয়েকে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে পাঠাই।’
 
প্রত্যক্ষদর্শী ইমরান কবির বলেন, ‘একটি মেয়েকে কোপাতে দেখে এগিয়ে যাই। কলেজ কর্তৃপক্ষ ও অন্যান্যের সহায়তায় আমরা মেয়েটিকে হাসপাতালে নিয়ে আসি। চিকিৎকরা বলেছেন, তার রক্তের প্রয়োজন। আমরা কিছু রক্তের ব্যবস্থা করে দিয়েছি। তার অবস্থা সংকটাপন্ন বলে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন।’
 
এদিকে এ ঘটনার পর বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা সিলেট-তামাবিল সড়ক অবরোধ করে। এমসি কলেজের শিক্ষার্থীরা জানান, মঙ্গলবার সকাল ১১টায় এ ঘটনার প্রতিবাদে মানববন্ধন কর্মসূচির আয়োজন করা হয়েছে।
 
প্রেম সংক্রান্ত বিরোধের জেরে খাদিজার ওপর হামলা হতে পারে বলে জানিয়েছেন সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের এডিসি (উত্তর) জিদান আল মুসা। তিনি জানান, জনতার সহায়তায় হামলাকারীকে আটক করা হয়েছে। মেয়ের চিকিৎসার জন্য কলেজ কর্তৃপক্ষসহ সবাই  চেষ্টা করছেন।
 

আপনার মন্তব্য

আলোচিত