সিলেটে ছয় দফা দাবিতে শ্রমিক নেতাদের ডাকা পরিবহন ধর্মঘট স্থগিত করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (২৭ অক্টোবর) সন্ধ্যার পর প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠক শেষে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। বিকেল সাড়ে ৩টায় জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে পরিবহন শ্রমিক নেতাদের সাথে বৈঠক করেন সিলেটের জেলা প্রশাসক জয়নাল আবেদীন।

জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন, সিটি করপোরেশন কর্তৃপক্ষ এবং সড়ক ও জনপদ বিভাগের কর্মকর্তারা শ্রমিকদের দাবি বাস্তবায়নের আশ্বাসের প্রেক্ষিতে শ্রমিক নেতারা আগামী ১২ নভেম্বর পর্যন্ত পরিবহন ধর্মঘট স্থগিত করেন।

বৈঠকে সিলেট কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল সংস্কার, অবৈধ দোকানপাট উচ্ছেদ, সিলেটের সব পৌরসভায় যানবাহন থেকে পৌর ট্যাক্স আদায় বন্ধ করা, সিলেটের সব সেতুতে অতিরিক্ত টোল আদায় বন্ধ, ট্রাফিক হয়রানি ও অকারণে গাড়ি রিকুইজিশন এবং রেকারিংয়ের নামে বাণিজ্য বন্ধ করা, রিকুইজিশনকালে গাড়ির প্রয়োজনীয় জ্বালানি ও চালকের খোরাকিসহ রাতে থাকার জায়গা দেওয়া, মামলায় অতিরিক্ত জরিমানা বন্ধ করা, ট্রাফিক অফিসে মালিক শ্রমিকদের বসার ব্যবস্থা করে দেওয়া, সিলেটের সব ভাঙা রাস্তা সংস্কার করা, ব্যাটারিচালিত রিকশা, অটোরিকশা চলাচল বন্ধ করা, জাফলং বিছনাকান্দি পাথর কোয়ারি চালু করা, প্রতিশ্রুতি মোতাবেক অবিলম্বে ট্রাক টার্মিনাল নির্মাণ কাজ শেষ করা, অটোটেম্পো গাড়ির ডাম্পিং সিদ্ধান্ত বাতিল করা, ইঞ্জিন চালিত রেজিস্ট্রেশনবিহীন ট্রলি দিয়ে মালামাল বহন বন্ধ করার ব্যাপারে আলোচনা করেন।

শ্রমিকদের সব সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দিলেও পাথর কোয়ারি চালু করার বিষয়টি তার অধীনে নেই বলে জানান জেলা প্রশাসক। তবে এ ব্যাপারে ৯ নভেম্বর শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ এবং ১১ নভেম্বর অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিতের সঙ্গে শ্রমিক নেতাদের আলোচনা করার ব্যবস্থা করে দেবেন বলে আশ্বাস দেন তিনি।

বৈঠকে অংশ নেন সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শফিকুর রহমান চৌধুরী, সিলেট সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এনামুল হাবীব, ভারপ্রাপ্ত প্রধান প্রকৌশলী নুর আজিজুল রহমান, মহানগর পুলিশের উপ কমিশনার (দক্ষিণ) বাসু দেব বণিক, সড়ক ও জনপদ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মনিরুল ইসলাম, সিলেট জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুজ্ঞান চাকমা, মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার (এডিসি-ট্রাফিক) নিকোলিন চাকমা।

শ্রমিক নেতাদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সিলেট জেলা সড়ক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা সেলিম আহমদ ফলিক, সাধারণ সম্পাদক রকিব উদ্দিন রফিক, ট্রাক শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি দিলু মিয়া, কার্যকরী সভাপতি আব্দুস সালাম, সাধারণ সম্পাদক গফুর মিয়া, সিলেট জেলা সড়ক পরিবহন ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক জাকারিয়া আহমদ, অটোরিকশা শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক আজাদ মিয়া প্রমুখ।

সিলেট জেলা পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের কোষাধ্যক্ষ মোঃ শামসুল হক মানিক সিলেটটুডে টুয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, "ছয় দফা দাবির মধ্যে পাঁচটি দাবি পূরণের আশ্বাস দিয়েছেন প্রশাসন। কিন্তু পাথর কোয়ারি চালুর বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত দিতে না পারায় আমরা ১২ নভেম্বর পর্যন্ত সময় বেঁধে দিয়েছি। এর মধ্যে শিক্ষামন্ত্রী ও অর্থমন্ত্রীর সঙ্গে আমাদের বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে। সেই বৈঠকের পর আমরা পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেবো।"