০৭ মে, ২০১৫ ১৯:৩৭
নিজেদের ভিটেমাটি ভারতের হাতে চলে যাওয়ার শঙ্কায় উৎকণ্ঠিত হয়ে পড়েছেন মৌলভীবাজারের বড়লেখা উপজেলার পাল্লাতল সীমান্তের লোকজন। ভারতের লোকসভায় স্থলসীমান্ত চুক্তি বিল পাস হওয়ার খবরে উৎকণ্ঠিত হয়ে পড়েছেন এই সীমান্তবাসীরা। এই সীমান্তের প্রায় ৪শ' একর জায়গা বাংলাদেশের অপদখলে রয়েছে।
এলাকাবাসী এবং ভূমি রেকর্ড ও জরিপ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, পাল্লাতল সীমান্তের ১৩৭০ নম্বর প্রধান খুঁটির ১ নম্বর উপখুঁটি থেকে ১৩৭৪ নম্বর প্রধান খুঁটির ১ নম্বর উপখুঁটি পর্যন্ত প্রায় ৩৬০ একর জায়গা বাংলাদেশের অপদখলে রয়েছে। এর বিপরীতে ভারতের আসামের করিমগঞ্জ জেলা।
৩৬০ একরের ভেতর শতবর্ষী পাল্লাতল চা-বাগান ও পাল্লাতল পুঞ্জি (পুঞ্জিতে আদিবাসী খাসিয়া ও গারো সম্প্রদায়ের লোকজনের বসবাস) পড়েছে। দুটি স্থানে প্রায় তিন হাজার লোকের বাস।
১৯৭৪ সালে মুজিব-ইন্দিরা চুক্তি অনুযায়ী, ২০১০ সালের ডিসেম্বর থেকে সীমান্তে যৌথ জরিপ দল কাজ শুরু করে। এ সময় অপদখলীয় বেশির ভাগ জায়গা ভারতকে ছেড়ে দেওয়া হচ্ছে—এ খবরে এলাকাবাসীর মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। এলাকাবাসীর বাধায় ২০১১ সালের ২৮ আগস্ট জরিপ দলটি ফিরে যায়। জায়গাটি রক্ষার দাবিতে এলাকাবাসী বিক্ষোভ করেন। এরই একপর্যায়ে জরিপকাজ শেষ হলে ২০১১ সালের ৩ সেপ্টেম্বর পাল্লাতলের নির্দেশক মানচিত্রে (ইনডেক্স ম্যাপ) যৌথ জরিপ দল স্বাক্ষর করে। এর পরিপ্রেক্ষিতে প্রটোকল স্বাক্ষরিত হয়।
সূত্র জানায়, নির্দেশক মানচিত্রে পাল্লাতল সীমান্তের ১৩৭০ নম্বর প্রধান খুঁটির ৩ নম্বর উপখুঁটি থেকে ১৩৭১ নম্বর প্রধান খুঁটির ৬ নম্বর উপখুঁটি পর্যন্ত ৫৭ একর এবং ১৩৭২ নম্বর প্রধান খুঁটি থেকে এর ২ নম্বর উপখুঁটি পর্যন্ত ১৭ দশমিক ৫ একর বাংলাদেশের অভ্যন্তরে দেখানো হয়। বাকি জায়গা দেখানো হয় ভারতের সীমানায়।
পাল্লাতল পুঞ্জির মন্ত্রী (পুঞ্জিপ্রধান) লুকাস বাহাদুর বলেন, ‘পত্রিকা ও টেলিভিশনের খবরে জেনেছি, সীমান্ত বিল লোকসভায় পাশ হয়েছে। এ নিয়ে পাল্লাতলের চা-শ্রমিক ও আদিবাসীরা চিন্তায় পড়েছেন। এত মানুষ কোথায় যাবে, কী করে খাবে। জানি না ভাগ্যে কী আছে।’
আপনার মন্তব্য