নিজস্ব প্রতিবেদক

২৪ নভেম্বর, ২০১৭ ১৬:৩৯

দক্ষিণ সুরমায় আদালতের স্থিতাদেশ থাকা ভূমিতে গ্রামীণফোনের টাওয়ার!

দক্ষিণ সুরমার বরইকান্দি ইউনিয়নের কাজিরখলা গ্রামে আদালতের স্থিতাদেশ থাকা একটি ভূমি অবৈধভাবে লিজ প্রদানের অভিযোগ উঠেছে। লিজ নেওয়া ওই জমিতে টাওয়ার নির্মাণ করছে বেসরকারী মোবাইল অপারেটর প্রতিষ্ঠান গ্রামীণফোন। বিরোধপূর্ণ ভুমিতে টাওয়ার নির্মান নিয়ে উভয়পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে।

জানা যায়, বরইকান্দি কাজিরখলা মহল্লার ১৬৩৭ নং দাগের ভূমি নিয়ে দোয়েল আহমদ চৌধুরী গং ও বদরুল হক গংদের মধ্যে বিরোধ চলছে।  ভূমির মালিকানা নিয়ে সিলেট যুগ্ম জেলা জজ আদালতে একটি স্বত্ব মামলাও বিচারাধিন রয়েছে। মামলা নং ৭৪/০৭।

এই মামলার প্রেক্ষিতে ২০০৮ সালের ২৬ মে এই ভূমির উপর স্থিতাবস্থা জারি করেন  আদালত। যা এখনো বহাল রয়েছে।  

তবে এই ভূমির দখলদার বদরুল হক চলতি বছরে এই বাসার ছাদ গ্রামীণফোণকে বছরে দেড় লাখ টাকা ভাড়ার চুক্তিতে ৫ বছরের জন্য লীজ প্রদান করেন। এরপর গ্রামীণফোন ওই বাসার ছাদে টাওয়ার নির্মান শুরু করে। এ নিয়ে উত্তেজনা দেখা দেয়।

টাওয়ার নির্মাণ বন্ধ রাখতে বদরুল হক গং গ্রামীণফোন কর্তৃপক্ষের কাছে লিখিত আবেদনও করেন।

এ ব্যাপারে গ্রামীণফোন লিমিটেডের এক্সটার্নাল কমিউনিকেশন্স বিভাগের প্রধান সৈয়দ তালাত কামাল জানান, অতি সম্প্রতি এই ভূমির মালিকানা সংক্রান্ত বিরোধের বিষয়ে আমরা অবহিত হয়েছি এবং প্রয়োজনীয় কাগজপত্র প্রাপ্তি ও পর্যালোচনা সাপেক্ষে গ্রামীণফোন লিঃ এর টাওয়ার সংক্রান্ত বিষয়ে দেশের প্রচলিত আইন মোতাবেক যথাযথ ব্যাবস্থা গ্রহণ করা হবে।

তবে অভিযোগ রয়েছে, অতি সম্প্রতি ওই টাওয়ারের জন্য বিদ্যুৎসংযোগ নেওয়া হয়েছে। পুলিশ উপস্থিত থেকে বিরোধপূর্ণ এই ভূমিতে বিদ্যুৎতের মিটার লাগানোতে সহযোগীতা করে।

মামলার বাদি দোয়েল আহমদ চৌধুরী অভিযোগ করেন, পুলিশের উপস্থিতিতেই সম্প্রতি বিরোধপূর্ণ ভূমিতে বিবাদীরা গ্রামীণফোনের টাওয়ারের জন্য বিদুতের মিটার স্থাপন করেন। তাঁর অভিযোগ, গ্রামীণফোন লিমিটেডকে লিখিতভাবে বিষয়টি অবগত করলেও কর্তৃপক্ষ বিষয়টি আমলে নেননি।
   
এ ব্যাপারে দক্ষিন সুরমা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খায়রুল ফজল জানান, গ্রামীণফোনের নির্মিতব্য টাওয়ারের বাড়ির মালিক লিখিত অভিযোগ করেছিলেন- তাঁর বসত ঘরের বিদুতের মিটার লাগানো সময় প্রতিপক্ষের হামলা হতে পারে। এ প্রেক্ষিতে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। কিন্তু ঘটনাস্থলে গিয়ে পুলিশ জানতে পারে যে, বিদুতের মিটারটি গ্রামীণফোনের টাওয়ারের জন্য লাগানো হচ্ছে।

ওসি বলেন, এ ভূমি নিয়ে আদালতের স্থিতাবস্থা থাকায় বিষয়টিও জানতে পারে পুলিশ। পরে পুলিশ সেখান থেকে চলে আসে। তিনি জানান, বিষয়টি জেলা প্রশাসনও অবগত আছেন।

এ ব্যাপারে বরইকান্দি ইউনিয়নের ১ নং ওয়ার্ডের সদস্য মোহাম্মদ আশিক বলেন, ইউনিয়ন পরিষদে বাদির লিখিত আবেদনের প্রেক্ষিতে ঘটনাস্থলে গিয়ে আদালতের নির্দেশ অমান্য করার বিষয়টি আমরা দেখতে পাই। আমরা বাদিগণকে কাজ বন্ধ রাখার অনুরোধ করলেও তারা তা মানেননি। উল্টো পুলিশের সহায়তায় টাওয়ারের কাজ চলছে।

তিনি বলেন, এ বিষয়টি নিয়ে উপজেলা ও জেলা প্রশাসনও অবগত রয়েছেন। কিন্তু বিবাদিগণ প্রভাশালী হওয়ায় তারা আদালতের স্থিতাবস্থা অমান্য করে আসছেন।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত