সিলেটটুডে ডেস্ক

০৮ মে, ২০১৮ ১৬:৫৬

সিলেট জেলা গণতন্ত্রী পার্টিতে আরিফ সভাপতি, জুনেদুর সম্পাদক

গণতন্ত্রী পার্টির কেন্দ্রীয় সভাপতি ব্যারিস্টার মোহাম্মদ আরশ আলী বলেছেন, মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় দুর্নীতিমুক্ত ও অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়তে সকল গণতান্ত্রিক ও প্রগতিশীল শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। দেশে ১৪ দলীয় জোটের নেতৃত্বে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তির সরকার ক্ষমতাসীন। কিন্তু পরিপূর্ণ একটি অসাম্প্রদায়িক-প্রগতিশীল রাষ্ট্র ও শোষণহীন সমাজ কাঠামো এখনো গড়ে উঠেনি। তাই আপামর মানুষের অর্থনৈতিক মুক্তির লক্ষ্যে একটি দেশপ্রেমিক সরকারের নেতৃত্বে দেশে শোষণহীন সমাজ ব্যবস্থা গড়ে তোলার রাজনৈতিক প্রক্রিয়া এগিয়ে নিতে গণতন্ত্রী পার্টির নেতা-কর্মীদের দৃঢ় পদক্ষেপে এগিয়ে আসতে হবে।

সোমবার (৭ মে) বিকেলে নগরীর শহীদ সোলেমান হল মিলনায়তনে গণতন্ত্রী পার্টি সিলেট জেলা কমিটির কাউন্সিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথাগুলো বলেন।

পার্টির কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য ও জেলা কমিটির সিনিয়র সহসভাপতি প্রকৌশলী আইয়ুব আলীর সভাপতিত্বে এবং কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য ও জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক মো. আরিফ মিয়ার সঞ্চালনায় এতে প্রধান বক্তা ছিলেন পার্টির কেন্দ্রীয় প্রেসিডিয়ামের অন্যতম সদস্য মুক্তিযোদ্ধা মাহমুদুর রহমান বাবু।

বিশেষ অতিথি ছিলেন পার্টির কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক ডা. শাহাদাত হোসেন। শুরুতে সাংগঠনিক রিপোর্ট পেশ করেন জেলা সাধারণ সম্পাদক মো. আরিফ মিয়া। রিপোর্টের উপর আলোচনায় অংশ নেন জেলা কমিটির সহসভাপতি বিপুল বিহারী দে ও আব্দুল কুদ্দুছ সরদার, সাংগঠনিক সম্পাদক গুলজার আহমদ, প্রচার সম্পাদক এনামুল করিম এনাম, শিক্ষা সম্পাদক অধ্যাপক প্রাণকান্ত দাস প্রমুখ।

স্বাগত বক্তব্য রাখেন সহসভাপতি মাছুম আহমদ। শোক প্রস্তাব পাঠ করেন গুলজার আহমদ। শোক প্রস্তাবে উত্থাপিত প্রয়াত ব্যক্তিবর্গের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে দাঁড়িয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।
 
ব্যারিস্টার মোহাম্মদ আরশ আলী বলেন, দেশের অর্থনীতি ধ্বংসকারী রাঘব-বোয়াল ঋণখেলাপীদের তালিকা অবশ্যই জনসমক্ষে প্রকাশ এবং এদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। তিনি ঋণখেলাপীদের অপকর্ম ঢাকা দিতে জনগণের ট্যাক্সের টাকায় গড়ে উঠা সরকারি তহবিল থেকে ভর্তুকি বন্ধের জোর দাবি জানান।

প্রধান বক্তা পার্টির কেন্দ্রীয় প্রেসিডিয়ামের অন্যতম সদস্য মুক্তিযোদ্ধা মাহমুদুর রহমান বাবু বলেন, অস্বীকার করার উপায় নেই যে দেশে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি ক্ষমতাসীন। কিন্তু বাস্তব অর্থে সুশাসন নেই। বেড়ে চলেছে বেপরোয়া ঘুষ-দুর্নীতি আর লুটপাট। তিনি দু:খ প্রকাশ করে বলেন, যে মহান উদ্দেশ্য নিয়ে আমাদের দলের নেতা-কর্মীরা মুক্তিযুদ্ধে গিয়েছিল, সে দেশ গঠন এখনও বাস্তবে রূপ পায়নি। আমাদেরকে মকসুদে মঞ্জিলে পৌঁছাতে রাজনৈতিক পদক্ষেপ নিতে হবে।
 
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক ডা. শাহাদাত হোসেন বলেন, কালো টাকার মালিকদের বিরুদ্ধে আমাদের সোচ্চার হতে হবে। এ চক্রটি দেশ থেকে অর্থ পাচারে লিপ্ত। এরা যাতে আর সংসদে জনগণের প্রতিনিধিত্ব করতে না পারে, সে লক্ষ্যে কার্যকর ভূমিকা গ্রহণ করতে হবে।

তিনি বলেন, বাংলাদেশের আদি সংবিধান ধারণ করে যে দলটি, সেটি হলো আমাদের গণতন্ত্রী পার্টি। ৭২-এর সংবিধানের মুল ৪টি ধারা আমাদের দলের গঠনতন্ত্রে সন্নিবেশিত করা হয়েছে। পরিবারতান্ত্রিক ও কায়েমি নেতৃত্বের রাজনৈতিক কবল থেকে বেরিয়ে যৌথ নেতৃত্ব গড়ে তোলার জন্য গণতন্ত্রী পার্টির সৃষ্টি হয়েছিল। বিগত ২৭ বছর থেকে আমরা এর ধারাবাহিকতা রক্ষা করে চলেছি।

তিনি দলে তারুণ্যের সমাবেশ ঘটাতে গণতন্ত্রী পার্টির সহযোগী ছাত্র সংগঠন জাতীয় ছাত্র ঐক্য সহ যুব, মহিলা, কৃষক ও শ্রমিক সংগঠন গড়ে তোলার জোর দেন। তিনি বলেন, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ১৪ দলীয় জোটে গণতন্ত্রী পার্টি ১০টি আসন দাবি করবে। এর মধ্যে সিলেট বিভাগের সিলেট-২ (দক্ষিণ সুরমা-ফেঞ্চুগঞ্জ-বালাগঞ্জ) ও সুনামগঞ্জ-২ (দিরাই-শাল্লা)’র আসনটি অবশ্যই থাকবে। এ ব্যাপারে তিনি দলীয় নেতৃত্বকে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের আহবান জানান।

কাউন্সিলের দ্বিতীয় অধিবেশনে হাজী মো. আরিফ মিয়াকে সভাপতি এবং জুনেদুর রহমান চৌধুরীকে সাধারণ সম্পাদক করে ৫১ সদস্য বিশিষ্ট গণতন্ত্রী পার্টির সিলেট জেলা কমিটি গঠন করা হয়।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত