হৃদয় দাশ শুভ, শ্রীমঙ্গল

০৫ ডিসেম্বর, ২০১৮ ১২:৩৭

মৌলভীবাজার-৪: দল গোছাচ্ছে আ.লীগ, মাঠে নেই বিএনপি

মৌলভীবাজার-৪ (শ্রীমঙ্গল-কমলগঞ্জ) সংসদীয় আসনে বর্তমান সাংসদ আব্দুস শহীদের মনোনয়ন নিশ্চিত হওয়ার পর থেকে এলাকায় সাংগঠনিক কর্মকাণ্ড জোরদার করেছে আওয়ামী লীগ। চলছে ঘরোয়া বৈঠক, দলের অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠন এবং বিভিন্ন সামাজিক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে মতবিনিময়।

অন্যদিকে বিএনপির নেতা-কর্মীরা বলছেন, গ্রেপ্তার-আতঙ্ক ও পুলিশি হয়রানির মুখে তারা মাঠে দাঁড়াতে পারছেন না। তবে এলাকায় জামায়াতে ইসলামীর কোনো সক্রিয়তাও চোখে পড়েনি।

এই আসনে বিএনপি থেকে মনোনয়ন পেয়েছেন দলের জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য মুজিবুর রহমান ও তার পুত্র মুঈদ আশিক চিশতী। এ ছাড়া একই আসনে গণফোরামের শান্তিপদ ঘোষও মনোনয়ন পেয়েছেন। তবে এই আসনে শেষ পর্যন্ত কে সংসদ নির্বাচন করবেন, তা জোটগতভাবে এখনো সিদ্ধান্ত হয়নি।

বিএনপির নেতা-কর্মীরা বলছেন, এই মুহূর্তে কর্মী-সমর্থকদের বেশির ভাগ বাড়িতে থাকতে সাহস পাচ্ছেন না। আনুষ্ঠানিক প্রচারণা শুরুর আগেই বিরোধীদের দমনে গণগ্রেপ্তার ও গায়েবি মামলার মধ্য দিয়ে প্রবল ভয়ের পরিবেশ তৈরি করা হয়েছে। এতে কাগজে-কলমে নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক বলা হলেও তা কতটা প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ হবে, সে ব্যাপারে তাঁরা সন্দিহান।

এদিকে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা জানাচ্ছেন, আব্দুস শহীদের সঙ্গে এই আসনের জন্য মৌলভীবাজার জেলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মনসুরুল হক, মৌলভীবাজার জেলা আওয়ামীলীগের আইন বিষয়ক সম্পাদক আজাদুর রহমান আজাদ, মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড কাউন্সিলের সাবেক সভাপতি আহাদ চৌধুরী, শ্রীমঙ্গল উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান রনধীর কুমার দেব এবং কমলগঞ্জ উপজেলা চেয়ারম্যান ও আওয়ামীলীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য রফিকুর রহমান মনোনয়ন ফরম তুলেছিলেন। আব্দুস শহীদ দলীয় মনোনয়ন নিশ্চিত হওয়ার পর থেকে তিনি সবাইকে ঐক্যবদ্ধ করার ওপর জোর দিয়েছেন।

নির্বাচনী প্রস্তুতির ব্যাপারে শ্রীমঙ্গল উপজেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক শহীদ হোসেন ইকবাল বলেন, ‘এলাকায় আরও দুই-একজন মনোনয়নপ্রত্যাশী ছিলেন। কিন্তু এখন সবাই বিভেদ ভুলে আব্দুস শহীদের পক্ষে কাজ করছেন। আমাদের প্রাথমিক উদ্দেশ্য ছিল দলের বিভেদ দূর করা। এ ক্ষেত্রে আমরা পুরোটাই সফল হয়েছি।’

তিনি আরো জানান, এর মধ্যে  নির্বাচনী কার্যালয় খোলার সিদ্ধান্ত হয়েছে। ৯ ডিসেম্বরের আগেই সব এলাকায় কার্যালয় তৈরির কাজ শেষ করা হবে।

শ্রীমঙ্গল উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক রাজু দেব রিটন বলেন, এই মুহূর্তে কেন্দ্রভিত্তিক কমিটি গঠনের কাজ চলছে। প্রচার-প্রচারণার ধরন কেমন হবে, সে ব্যাপারে আলোচনা চলছে।

বিপরীত চিত্র পাওয়া যায় বিএনপির নেতাদের বক্তব্যে। দলীয় মনোনয়ন পাওয়া মুজিবুর রহমান বলেন, ‘একটা স্বাস্থ্যকর, প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি হওয়ার কোনো সম্ভাবনা আমরা দেখছি না। বিএনপির এই নেতা আরও বলেন, ‘বিরোধীদের জন্য নির্বাচনী প্রস্তুতি নেওয়ার কোনো সুযোগই এই সরকার রাখেনি।’

বিদ্যমান পরিস্থিতি নিয়ে শ্রীমঙ্গল পৌর বিএনপির সভাপতি মোছাব্বির আলী মুন্না সিলেটটুডে টোয়েন্টিফোরকে বলেন, ‘যেভাবে ধরপাকড় চলছে, তাতে কৌশলগত কারণেই আমাদের মাঠে থাকা সম্ভব হচ্ছে না। আনুষ্ঠানিক প্রচারণা শুরুর আগে সেই সুযোগ আসবে বলেও মনে হচ্ছে না। কিন্তু আওয়ামী লীগ বিভিন্ন জায়গায় মিছিল মিটিং করছে আর আমরা কোন ধরনের সভা করতে গেলেই পুলিশের বাধার সম্মুখীন হচ্ছি ৷

আপনার মন্তব্য

আলোচিত