নিজস্ব প্রতিবেদক

০২ এপ্রিল, ২০১৯ ২৩:৪৩

দক্ষিণ সুরমায় শিক্ষক লাঞ্ছনাকারী আ. লীগ নেতার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা

সিলেটের দক্ষিণ সুরমার পাঠানপাড়া এলাকায় জহির-তাহির মেমোরিয়াল উচ্চবিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষককে লাঞ্ছিত করার ঘটনায় আ. লীগ নেতা ছয়েফ খানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থাগ্রহণ করেছে বিদ্যলয়ের ম্যানেজিং কমিটি।

২৭ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ছয়েফ খান ওই বিদ্যালয়ের ম্যানিজিং কমিটিরও সদস্য ছিলেন। সোমবার অনুষ্ঠিত ম্যানিজিং কমিটির সভায় কমিটিতে তাঁর কার্যক্রম স্থগিত করা হয়।

এ তথ্য জানিয়ে জহির-তাহির মেমোরিয়াল উচ্চবিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সদস্য ও নগরীর ২৭ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর আজম খান বলেন, শিক্ষাবোর্ড ম্যানেজিং কমিটির অনুমোদন দিয়ে থাকে। তাই কাউকে কমিটি থেকে অব্যাহতি প্রদানের এখতিয়ার ম্যানেজিং কমিটির নেই। এজন্য অভিযোগের প্রেক্ষিতে ম্যানেজিং কমিটির সদস্য হিসেবে ছয়েফ খানের সকল কার্যক্রম স্থগিত করা হয়েছে।

এছাড়া শিক্ষক লা্ঞ্ছনার দায়ে অপর অভিযুক্ত বিদ্যলয়টির খন্ডকালীন শিক্ষক শমসের সিরাজ নিজেই শিক্ষক পদ থেকে অব্যাহতি নিয়েছেন বলে জানান আজম খান।

ম্যানেজিং কমিটির সভায় শিক্ষার্থীদের অন্য দাবিগুলোও মেনে নেওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।

গত শনিবার সকালে জহির তাহির উচ্চ বিদ্যালয়ে শিক্ষক লাঞ্ছনা ও শিক্ষার্থীদের উপর হামলার এ ঘটনা ঘটে।

স্থানীয় সূত্র জানিয়েছে, গত বৃহস্পতিবার জহির-তাহির মেমোরিয়াল উচ্চবিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক পদে নিয়োগ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। ১৩ জন প্রার্থীর মধ্যে আব্দুল বাছিত নামের একজনকে প্রধান শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়। তবে এ নিয়োগে আপত্তি জানায় শিক্ষার্থীরা। তাদের দাবি বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক অরবিন্দ ভট্টাচার্যকে প্রধান শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দিতে হবে।

এ দাবিতে শনিবার সকালে আন্দোলন শুরু করে শিক্ষার্থীরা। এ সময় নগরীর ২৭নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও বিদ্যালয়ের পরিচালনা কমিটির অভিভাবক সদস্য সয়েফ খান এবং বিদ্যালয়ের খন্ডকালীন শিক্ষক শমসের সিরাজ শিক্ষার্থীদের হুমকিধামকি দেন। তারা ক্লাসে ফিরতে শিক্ষার্থীদের নির্দেশ দেন। কিন্তু তাদের নির্দেশে কর্ণপাত না করায় তারা শিক্ষার্থীদের মারধর ও ধাক্কা দিয়ে ক্লাসে প্রবেশ করান। এতে বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির এক ছাত্র ও সপ্তম শ্রেণির এক ছাত্রী আহত হয়। পরে বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক অরবিন্দ ভট্টাচার্যের কক্ষে গিয়ে তাকে লাঞ্ছিত করেন তাঁরা।

শিক্ষার্থীদের উপর হামলা ও শিক্ষক লাঞ্ছনার প্রতিবাদে রোববার শিববাড়ি এলাকায় বিক্ষোভ করে বিদ্যালয়টির বর্তমান ও সাবেক শিক্ষার্থীরা। বিক্ষোভ থেকে তারা চার দফা দাবি জানায়।

দাবিগুলো হচ্ছে- অরবিন্দ ভট্টাচর্যকে প্রধান শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ প্রদান, তদন্তের মাধ্যমে লাঞ্চনাকারীদের দৃষ্ঠান্তমূলক শাস্তি ও প্রকাশ্যে ক্ষমা চাওয়া, হামলার শিকার দুই শিক্ষার্থীর যাবতীয় চিকিৎসার খরচ বহন এবং অভিভাবক সদস্য ছয়েফ খান ও বিদ্যালয়ের খন্ডকালিন শিক্ষক শমসের সিরাজ সুহেলেকে সার্বিক দায়িত্ব থেকে বহিষ্কার করা।

শিক্ষার্থীরা জানায়, ম্যানিজিং কমিটির সভায় অভিযুক্ত দু'জনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হলেও সহকারী প্রধান শিক্ষক অরবিন্দ ভট্টাচার্যকে প্রধান শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ প্রদানের দাবির ব্যাপারে কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত