নিজস্ব প্রতিবেদক

০৯ অক্টোবর, ২০১৯ ০১:২০

শীঘ্রই সিলেট-চট্টগ্রাম রুটের ট্রেনে এসি বগি সংযোজন করা হবে: পররাষ্ট্র মন্ত্রী

পররাষ্ট্র মন্ত্রী ড. এ. কে. আব্দুল মোমেন বলেছেন, এ বছর আমরা এশিয়ার ৪৫টি দেশের মধ্যে জিডিপি’র প্রবৃদ্ধিতে সবার থেকে এগিয়ে রয়েছি। বর্তমান সরকার দারিদ্র বিমোচনে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। আগামী ৫ বছরের মধ্যে অতিদারিদ্রের হার শতকরা ৫ ভাগে নেমে আসবে বলে আমরা আশাবাদী, বর্তমানে যা ১১ ভাগে রয়েছে।

তিনি বলেন, দেশের উন্নয়নের জন্য যে কোন প্রকল্প প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে গেলে তা অনুমোদন হবে এতে কোন সন্দেহ নেই। তবে এক্ষেত্রে স্থানীয় সামাজিক সংগঠন ও রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দকে উদ্যোগী হতে হবে। সঠিক উদ্যোগ গ্রহণ না করলে সুফল পাওয়া যাবে না।

মঙ্গলবার রাতে সিলেট চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রি’র উদ্যোগে এক মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। চেম্বার কনফারেন্স হলে আয়োজন চেম্বারের নবনির্বাচিত কমিটির সাথে এ মতবিনিময় সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সিলেট সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী, সিলেট জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক শফিকুর রহমান চৌধুরী, সিলেট মহানগর আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক সাধারণ সম্পাদক ও সিলেট চেম্বারের সদ্য প্রাক্তন প্রশাসক আসাদ উদ্দিন আহমদ ও সিলেট সদর উপজেলার চেয়ারম্যান আশফাক আহমদ। মতবিনিময় সভায় সভাপতিত্ব করেন সিলেট চেম্বারের সভাপতি আবু তাহের মোঃ শোয়েব।  

এতে পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, বর্তমানে বৃহত্তর সিলেটের ৫ জন মন্ত্রী ও ১ জন উপদেষ্টা কেবিনেটে রয়েছেন। এ সুযোগ সিলেটবাসীকে কাজে লাগাতে হবে। সিলেটের জন্য উপযোগী প্রকল্প ও প্রস্তাব মন্ত্রণালয়গুলোতে পাঠাতে হবে। তিনি বলেন, ট্যুরিস্ট স্পটগুলোর উন্নয়ন ও ঢাকা-সিলেট মহাসড়ককে ৬ লেনে রূপান্তরের জন্য ইতোমধ্যে টাকা বরাদ্দ হয়েছে, অচিরেই এর কাজ শুরু হবে।

তিনি উল্লেখ করেন, সিলেট-চট্টগ্রাম রুটে ট্রেনের এসি বগি না থাকায় শ্রীমঙ্গলের চা নিলাম কেন্দ্রের কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে এবং পর্যটন বাঁধাগ্রস্থ হচ্ছে। এ ব্যাপারে তিনি রেলমন্ত্রীর সাথে কথা বলেছেন এবং রেলমন্ত্রী যথাশীঘ্র সম্ভব সিলেট-চট্টগ্রাম রুটে ট্রেনের এসি বগি সংযোজন করা হবে বলে জানিয়েছেন। তিনি সিলেটে নির্মিত বঙ্গবন্ধু হাই-টেক পার্কে প্লট বরাদ্দের লক্ষ্যে যথাযথভাবে আবেদন করার জন্য ব্যবসায়ীদের প্রতি আহবান জানান। তিনি বলেন, ব্যবসায়ীরা সরকারের উন্নয়ন অংশীদার। ব্যবসায়ীদের বাদ দিয়ে উন্নয়ন সম্ভব নয়।

তিনি সিলেট চেম্বারের নবনির্বাচিত কমিটিকে অভিনন্দন জানিয়ে বলেন, এবারের নির্বাচন অত্যন্ত সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে সম্পন্ন হয়েছে। এরকম একটি সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজনের জন্য তিনি সিলেট চেম্বারের সদ্য প্রাক্তন প্রশাসক, নির্বাচন বোর্ড ও আপীল বোর্ডকে ধন্যবাদ জানান। তিনি সিলেট চেম্বারের নবনির্বাচিত প্রেসিডিয়াম ও পরিচালকবৃন্দকে ফুল দিয়ে বরণ করেন এবং সকলের প্রতি শুভকামনা জানান।     

সভাপতির বক্তব্যে সিলেট চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রি’র সভাপতি আবু তাহের মোঃ শোয়েব বলেন, জাতির  পিতা  বঙ্গবন্ধু  শেখ  মুজিবুর  রহমানের স্বপ্নের সোনার  বাংলা  বিনির্মাণে প্রধানমন্ত্রী  জননেত্রী শেখ  হাসিনার  নেতৃত্বে উন্নয়নের  মহাসড়কে  দৃপ্ত পদে  এগিয়ে  চলেছে বাংলাদেশ। তারই ধারাবাহিকতায় মাননীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন এমপি তার মেধা ও কূটনৈতিক তৎপরতা দিয়ে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সাথে বাংলাদেশের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে তুলেছেন।

তিনি বলেন, বর্তমান সরকারের আমলে সিলেটে অনেকগুলো মেগা প্রজেক্ট বাস্তবায়িত হয়েছে এবং হচ্ছে যার মধ্যে শ্রীহট্ট ইকোনমিক জোন, বঙ্গবন্ধু হাই-টেক পার্ক, শ্রীমঙ্গলে চা নিলাম কেন্দ্র, তামাবিলে পূর্ণাঙ্গ স্থলবন্দর, বাদাঘাটে নতুন জেলখানা ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য। তিনি সিলেট চেম্বারের আবেদনের প্রেক্ষিতে সিলেটে ১০০ একর জমি নিয়ে মাল্টি সেক্টরাল ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্ক স্থাপনের পরিকল্পনাকে স্বাগত জানান। তিনি বলেন, সিলেটে মাল্টি সেক্টরাল ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্ক স্থাপিত হলে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প যেমন সমৃদ্ধ হবে তেমনি আমদানী নির্ভরতা কমিয়ে এখান থেকে উৎপাদিত পণ্য ভারতের সেভেন সিস্টার ও বিদেশে রপ্তানী করা যাবে। তিনি সিলেটের পর্যটন খাতের উন্নয়নে রাতারগুল, বিছনাকান্দি, লালাখাল, টাঙ্গুয়ার হাওড় ও অন্যান্য দৃষ্টিনন্দন ট্যুরিস্ট স্পটগুলোর যাতায়াত ব্যবস্থা ও অবকাঠামোগত উন্নয়নের দাবী জানান। এছাড়াও তিনি সিলেট-আখাউড়া রেলপথ দ্রুত সংস্কার, সিলেট-তামাবিল মহাসড়ক সংস্কার, সিলেটে পুণরায় গ্যাস সংযোগ চালু, বিদ্যুৎ বিতরণ ব্যবস্থার সংস্কার সহ বিভিন্ন দাবী দাওয়া তুলে ধরেন। তিনি প্রধানমন্ত্রীর রাষ্ট্রীয় সফরে বিভাগীয় চেম্বার হিসেবে সিলেট চেম্বার অব কমার্সের পক্ষ থেকে প্রতিনিধি অন্তর্ভুক্ত করার দাবী জানান।

সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন সিলেট চেম্বারের সিনিয়র সহ সভাপতি চন্দন সাহা, সিলেট চেম্বারের সাবেক সভাপতি ফারুক আহমদ মিছবাহ, সিলেট মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি আফজাল রশীদ চৌধুরী, সিলেট জেলা সিএন্ডএফ এজেন্ট গ্রুপের সভাপতি শাহ আলম, জালালাবাদ ভেজিটেবল এন্ড ফ্রোজেন ফিস এক্সপোর্টার্স গ্রুপের সভাপতি ও এফবিসিসিআই এর সাবেক পরিচালক মোঃ হিজকিল গুলজার, সিলেট চেম্বারের পরিচালক মোঃ এমদাদ হোসেন, সাবেক পরিচালক আমিরুজ্জামান চৌধুরী।  

এসময় উপস্থিত ছিলেন কাস্টম্স এক্সাইজ এন্ড ভ্যাট কমিশনারেট সিলেট এর কমিশনার গোলাম মোঃ মুনীর, যুগ্ম কমিশনার মিনহাজ উদ্দিন, এনএসআই এর অতিরিক্ত পরিচালক মনসুর আহমেদ, বাংলাদেশ ব্যাংক এর নির্বাহী পরিচালক মাকসুদা বেগম, সিলেট চেম্বারের সহ সভাপতি তাহমিন আহমদ, পরিচালক মোঃ মামুন কিবরিয়া সুমন, মাসুদ আহমদ চৌধুরী, মোঃ এমদাদ হোসেন, মোঃ সাহিদুর রহমান, পিন্টু চক্রবর্তী, মুশফিক জায়গীরদার, এহতেশামুল হক চৌধুরী, আব্দুর রহমান, ফালাহ উদ্দিন আলী আহমদ, মোঃ আব্দুর রহমান (জামিল), হুমায়ুন আহমেদ, মোঃ আতিক হোসেন, আলীমুল এহছান চৌধুরী, ওয়াহিদুজ্জামান চৌধুরী, মোঃ আমিনুজ্জামান জোয়াহির, খন্দকার ইসরার আহমদ রকী, সিলেট চেম্বারের নির্বাচন বোর্ডের চেয়ারম্যান এডভোকেট মোঃ নাসির উদ্দিন খান, সদস্য এডভোকেট সৈয়দ শামীম আহমদ, এডভোকেট মোঃ জুনেল আহমদ, আপীল বোর্ডের চেয়ারম্যান এডভোকেট এ কে এম শমিউল আলম, সদস্য এডভোকেট মোঃ রাজ উদ্দিন, হারুন আল রশিদ দিপু, নির্বাচন বোর্ডের সাবেক সভাপতি বিজিত চৌধুরী, সিলেট চেম্বারের সাবেক সিনিয়র সহ সভাপতি এম. মুহিবুর রহমান, সাবেক সহ সভাপতি জুবায়ের আহমদ চৌধুরী, মোঃ আতিকুর রহমান, ইফতেখার আহমদ সোহেল, সিলেট মেট্রোপলিটন চেম্বারের ১ম সহ সভাপতি শফিউল আলম নাদেল, মোঃ খয়রুল হুসেন, সিলেট প্রেসক্লাবের সভাপতি ইকরামুল কবির, সাধারণ সম্পাদক ইকবাল মাহমুদ, সিলেট অনলাইন প্রেসক্লাবের সভাপতি মুহিত চৌধুরী, জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক মাহি উদ্দিন আহমেদ সেলিম, আটাব সিলেটের সভাপতি আব্দুল জব্বার জলিল।     

আপনার মন্তব্য

আলোচিত