বড়লেখা প্রতিনিধি

০৯ জানুয়ারি, ২০২০ ০০:১২

পুনর্মিলনীকে ঘিরে বড়লেখার লাইসিয়াম স্কুলে উৎসবের আমেজ

কেউ গানের রিহার্সেল দিচ্ছেন। কেউ করছেন নাচের রিহার্সেল। আবার কেউ আল্পনা আঁকছেন। কেউ তৈরি করছে র‌্যালির জন্য প্ল্যাকার্ড। এভাবেই এগিয়ে চলছে মৌলভীবাজারের বড়লেখা উপজেলার রোকেয়া খাতুন লাইসিয়াম স্কুল অ্যান্ড কলেজের রজতজয়ন্তী এবং প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানের প্রস্তুতি।

বুধবার (৮ জানুয়ারি) রোকেয়া খাতুন লাইসিয়াম স্কুল অ্যান্ড কলেজে গিয়ে সবার মধ্যে এরকমই নানারকম কর্ম-তৎপরতা দেখা গেছে। আগামী শনিবার (১১ জানুয়ারি) প্রতিষ্ঠানটির ২৫ বছর পূর্তি উপলক্ষে রজতজয়ন্তী এবং প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের পুনর্মিলনী উৎসব।  

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, এলাকার শিক্ষা বিস্তারে ১৯৯৪ সালে উপজেলা সদরের মহুবন্দ এলাকায় রোকেয়া খাতুন লাইসিয়াম স্কুল অ্যান্ড কলেজের প্রতিষ্ঠিত হয়। প্লে থেকে দ্বিতীয় শ্রেণির ১০০ শিক্ষার্থী আর ১১জন শিক্ষক দিয়ে শ্রেণিপাঠ শুরু। প্রতিষ্ঠাকালীন প্রধান শিক্ষক ছিলেন কলিন আহমদ চৌধুরী। বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতাদের মধ্যে ছিলেন আনোয়ারুল আলম চৌধুরী, ডা. নজরুল ইসলাম, কৃপেশ দেবনাথ, আব্দুল হাফিজ চৌধুরী আবু, গোলাম কিবরিয়া চৌধুরী লুকু, পার্থ সারথি আচার্য, জুবায়ের আহমদসহ বেশ কজন শিক্ষানুরাগী। এরইমধ্যে প্রতিষ্ঠানটি অর্জন করেছে অনেক সুনাম। শ্রেণি ও শিক্ষার্থীর সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। পুরোনো ক্যাম্পাসের পাশাপাশি নতুন ক্যাম্পাস তৈরি হয়েছে। একটি টিনশেডের ঘর দিয়ে কার্যক্রম শুরু হয়েছিল। এখন সেখানে তিন তলা ভবন হয়েছে। নতুন ক্যাম্পাসে চার তলা ভবনের কাজ চলছে। এখন প্লে থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষার্থীর সংখ্যা প্রায় সাড়ে বারোশ। শিক্ষক ৬৩জন। কর্মচারী ১১জন। এবার থেকে কলেজের কার্যক্রম শুরু হওয়ার কথা রয়েছে। প্রতিষ্ঠানটির ২৫ বছরের ধারাবাহিকতাকে স্মরণীয় করে রাখতে রজতজয়ন্তী এবং প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের পুনর্মিলনীর আয়োজন করা হয়েছে।

রজতজয়ন্তী উদযাপন পরিষদ সূত্রে জানা গেছে, উৎসবে অংশ নেওয়ার জন্য প্রায় ১ হাজার প্রাক্তন ও বর্তমান শিক্ষার্থী নাম নিবন্ধন করেছেন। উৎসবকে রঙিন ও সফল করতে নেওয়া হয়েছে সকল ধরনের প্রস্তুতি। চলছে প্রাক্তন ও বর্তমান শিক্ষার্থীদের নাচ-গানের রিহার্সেল। কেউ র‌্যালির জন্য তৈরি করছে প্ল্যাকার্ড। বুধবার বিকেল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ক্যাম্পাসে রং-তুলিতে আঁকা হয়েছে আল্পনা। শিক্ষার্থীদের সাথে নিয়ে আল্পনা আঁকার উদ্বোধন করেন জেলা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক সালেহ এলাহী কুটি। এসময় উদযাপন কমিটির আহবায়ক ও বড়লেখা পৌরসভার মেয়র আবুল ইমাম মো. কামরান চৌধুরী, প্রধান শিক্ষক ইকবাল আহমদ, স্কুলের শিক্ষানুরাগী সদস্য মো. জয়নাল আবেদীনসহ শিক্ষকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। এরপর নতুন ও পুরোনো ক্যাম্পাসের সড়ক জুড়ে এই আল্পনা আঁকা শুরু হয়। বুধবার (৮ জানুয়ারি) রাত ১১ টায় এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত শিক্ষার্থীরা সড়কে আল্পনা আঁকছিল।

প্রাক্তন শিক্ষার্থী ফাহিম আহমদ হামিম বুধবার (৮ জানুয়ারি) রাত সাড়ে ১০টায় বলেন, ‘রজতজয়ন্তী এবং প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের পুনর্মিলনী উপলক্ষে বিকেল থেকে আল্পনা আঁকা শুরু হয়। প্রায় ২ কিলোমিটার সড়কে আলপনা আঁকা হচ্ছে। এতে সাবেক ও বর্তমান শিক্ষক, শিক্ষার্থীরা অংশ নিয়েছেন।’

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি থাকবেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ূ পরিবর্তন মন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন। দিনব্যাপী আয়োজনে থাকবে র‌্যালি, উদ্বোধনী অনুষ্ঠান, বর্তমান ও প্রাক্তন শিক্ষার্থী এবং অতিথি শিল্পীদের অংশগ্রহণে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। রাতে অনুষ্ঠান শেষ হবে আতশবাজির মধ্য দিয়ে।

উদযাপন কমিটির আহবায়ক ও বড়লেখা পৌরসভার মেয়র আবুল ইমাম মো. কামরান চৌধুরী বুধবার (৮ জানুয়ারি) রাত ১১টায় বলেন, ‘প্রতিষ্ঠানটির ২৫ বছরের গৌরবের ইতিহাস নিয়ে শিক্ষার্থীদের মাধ্যমে এই অনুষ্ঠান সাজানো হয়েছে। নতুন ক্যাম্পাসে অনুষ্ঠান হবে। প্রায় ৪ হাজার মানুষের উপস্থিতি হবে; এটা আশা করছি। ক্যাম্পাসে এত মানুষের জায়গা হবে না। তাই পাশের একটি জমিতে বড় পর্দার মাধ্যমে তাদের অনুষ্ঠান দেখানোর ব্যবস্থা করছি। বড়লেখায় রজতজয়ন্তী বা পুনর্মিলনী আগে হয়নি। আমরা এটার উদ্যোগ নিয়েছি। এতে শিক্ষার্থী, শিক্ষক, অভিভাববকসহ সকল পর্যায়ের মানুষ অনুষ্ঠানকে সফল করতে সাহায্য করছেন। যার যার অবস্থান থেকে দু’হাত তুলে সাহায্য করছেন। আমরা সকলের কাছে কৃতজ্ঞ। একটি সফল অনুষ্ঠান হবে। এটা প্রত্যাশা করছি।’

আপনার মন্তব্য

আলোচিত