শ্রীমঙ্গল প্রতিনিধি

১৫ জানুয়ারি, ২০২০ ২০:২৬

বন্ধুর হাতেই খুন হয় শ্রীমঙ্গলের সেই স্কুলছাত্র

মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলের মো. ইব্রাহিম মিয়া রকি ও সাব্বির মিয়া একে অপরের বন্ধু। আনুমানিক ১ মাস পূর্বে তাদের দুই জনের মধ্যে সিনিয়র-জুনিয়র নিয়ে ঝামেলা বাঁধে। এক পর্যায়ে তাদের মধ্যে হাতাহাতিরও ঘটনা ঘটে। পরে কেটে যায় এক মাস। কারো সাথে কারো কোন কথাবার্তা, এমনকি কোন যোগাযোগ পর্যন্ত ছিল না। তবে সাব্বির মিয়া প্রতিশোধ নিতে মনে মনে সুযোগ খুঁজতে থাকে।

এদিকে গত ১৩ জানুয়ারি সাব্বির রকিকে হত্যার পরিকল্পনা করে। পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী সাব্বির তার আরেক বন্ধু মো. ফয়সল মিয়ার সাথে শ্রীমঙ্গল রেল স্টেশন রোডে দেখা করে হত্যার ছক সাজায়। সে মোতাবেক সাব্বির রকিকে ফোন করে জিজ্ঞাস করে যে সে কোথায় আছে। রকি জানায়, সে রেলগেইট এলাকায় আছে। পরে সাব্বির মিয়া ও ফয়সাল মিয়া শ্রীমঙ্গলের ভানুগাছ রোডের রেলগেইট এলাকায় গিয়ে রকিকে একটি অনুষ্ঠানে নিয়ে যাবার কথা বলে দক্ষিণ ভাড়াউড়া চা বাগানে নিয়ে যায়। আর সেখানেই খুন করা মো. ইব্রাহিম মিয়া রকিকে।

এমনটাই ১৬৪ ধারার জবানবন্দীতে জানান মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে মো. ইব্রাহিম মিয়া রকিকে হত্যার ঘটনায় জড়িত সাব্বির মিয়া ও ফয়সল মিয়া। এর আগে বুধবার (১৫ জানুয়ারি) সকালে আসামীদেরকে মৌলভীবাজার চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করা হলে তারা হত্যার ঘটনা স্বীকার করে নিয়ে ১৪৬ ধারায় জবানবন্দি দেয়।

জবানবন্দীতে তারা আরও জানায়, ভাড়াউড়া চা বাগানে নিয়ে সাব্বির মিয়া রকির মুখে হাত দিয়ে চেপে ধরে মাটিতে শুয়ে দেয়, পরে ফয়সাল মিয়া রকির হাতে ধরে এবং সাব্বির মিয়া রকির মুখে স্কচটেপ দিয়ে মুখে ও গলায় পেঁচিয়ে প্রায় ১০ মিনিট গলায় হাত দিয়ে চেপে ধরে বুকের উপরে বসে থাকে। তখন ফয়সাল মিয়া রকির পা চেপে ধরে রাখে।

পরে রকি নিস্তেজ হওয়ার পর তারা দুইজন মিলে ভিকটিমের জ্যাকেটে ধরে টেনে গাছের কাছে আনে এবং রকির পরহিত প্যান্টের বেল্ট গলায় সাথে পেঁচিয়ে গাছের সাথে বেঁধে রাখে। পরে তারা দুজনে বাড়িতে চলে আসে।

এর আগে মঙ্গলবার (১৪ জানুয়ারি) রাতে শ্রীমঙ্গল থানা পুলিশ হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের তথ্য প্রযুক্তির সাহায্যে সনাক্ত করে শ্রীমঙ্গলের সিন্দুরখান রোডস্থ খাসগাঁও এলাকার স্টেশন রোড থেকে সাব্বির মিয়া ও খাসগাঁও এলাকা হতে ফয়সাল মিয়াকে গ্রেপ্তার করে।

এর আগে মঙ্গলবার সকাল ১১টায় শ্রীমঙ্গলের ফিনলের বুরবুরিয়া চা বাগানের বধ্যভূমির পাশের একটি গাছের সাথে বাঁধা অবস্থায় মো. ইব্রাহিম মিয়া রকির মরদেহ উদ্ধার করে শ্রীমঙ্গল থানা পুলিশ। লাশের সার্বিক অবস্থা দেখে পুলিশ বুঝতে পারে তাকে কেউ খুন করে গাছের সাথে বেঁধে রেখে গেছে। পরে এ হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদ্ঘাটনে নামে পুলিশ। হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের সনাক্ত করতে মৃতদেহের সাথে থাকা চাদরের ব্যবহারকারী ও তথ্য প্রযুক্তির মাধ্যমে হত্যাকাণ্ডে জড়িত আসামীদের সনাক্ত করা হয়।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত