জাহাঙ্গীর আলম খায়ের, বিশ্বনাথ

১৫ জানুয়ারি, ২০২০ ২৩:০৬

বিশ্বনাথের বড়বিলে ‘পলো বাওয়া’ উৎসব

সুরমা নদী থেকে নৌকা নিয়ে খাজাঞ্চী নদী, বাসিয়া নদী কিংবা মাকুন্দা নদী পথ দিয়ে সহজেই বের হওয়া যেত। হাওর, জলাশয় ও নদীতে  উৎসবের আমেজে পলো বাওয়া হতো, ধরা পড়তো বড় বড় মাছ। কিন্তু এখন সে এক রুপ কথার গল্প। দখল, দুষণ আর ভরাটের কারণে, পলো বাওয়াতো দুরের কথা, না নদীতে নৌকা চলে, না বাজারে পাওয়া যায় দেশিও মাছ। কিন্তু তারপরও থেমে নেই সিলেটের বিশ্বনাথবাসী। প্রাচীণ সেই ঐতিহ্যকে তারা লালন করে যাচ্ছেন আজও।

প্রতি বছরের মতো এবারও বুধবার হয়ে গেলো উপজেলার গোয়াগহরি গ্রামের বড়বিলে ঝপ ঝপা ঝপ ‘পলো বাওয়া’ উৎসব। দিনভর গ্রামের ছেলেবুড় সকলেই মেতেছিলেন পলো দিয়ে মাছ ধরায়। সেই আদিকাল থেকেই ‘বড় বিলে’ বছরের পহেলা মাঘ ‘পলো বাওয়া’ উৎসব পালন করেন গোয়াহরি গ্রামবাসী। এবছরও এর বেতিক্রম হয়নি। সকাল ১১টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত ছেলে-বুড়ো সকলেই ওই বড় বিলে মাছ ধরায় মেতেছিলেন, আহা সে কী আনন্দ!

এদিকে ‘বড় বিলে’ গ্রামবাসীর সঙ্গে মাছ ধরায় অংশ নিতে যুক্তরাজ্য প্রবাসী রহমত আলী, সামছুল ইসলাম, আর উল্লাহ, মনোহর আলী, সৌদী প্রবাসী আজির উদ্দিনসহ যুক্তরাজ্য ও মধ্যপ্রাচ্যে বসবাসকারী প্রবাসীরা দেশে ফিরেছেন। সকলের সঙ্গে তারাও পলো দিয়ে মাছ ধরায় অংশ নিয়েছেন। যদিও ‘পলো বাইছ’ কিন্তু পলো ছাড়াও, ঠেলা জাল, হাতা জাল ইত্যাদি নিয়ে মাছ ধরায় মেতেছিলেন গ্রামবাসী। অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার কাতলা, রুই, বোয়াল, ষোল, গজার ও কার্ফু মাছ বেশি পাওয়ায় হাঁসি মুখে বাড়ি ফিরেছেন আব্দুর রউফ, ইকবাল হোসেন, সালমান হোসেন, তজম্মুল আলী, লাল মিয়া, সাদিকুর রহমানসহ অনেকেইে।

গোয়াহরি গ্রামের ইউপি সদস্য গোলাম হোসেন সমকালকে বলেন, প্রায় ২শ’ বছর আগ থেকে তারা বছরের পহেলা মাঘ তারিখে ‘পলো বাওয়া’কে উৎসব হিসেবে পালন করছেন। তার মতে বৃহত্তর সিলেটের মধ্যে তাদের বড় বিলেই কেবল আনন্দ উল্লাসের সঙ্গে পলো বাওয়া হয়ে থাকে।  

আপনার মন্তব্য

আলোচিত