সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি

০৪ ফেব্রুয়ারি , ২০২০ ২০:৫২

হাওরে বাঁধের কাজ সঠিক সময়ে শেষ করার নির্দেশ বিভাগীয় কমিশনারের

সিলেটের বিভাগীয় কমিশনার মো. মশিউর রহমান বলেছেন, সুনামগঞ্জে ২০১৭ সালের বন্যায় ফসলহানীর পর ফসলরক্ষা বাঁধ নির্মাণের নীতিমালায় ঠিকাদারি প্রথা বাতিল করে স্থানীয়দের ও প্রশাসনকে সম্পৃক্ত করা হয় এবং পিআইসি কমিটি গঠন করা হয়। এখন যদি পিআইসি কমিটি কাজে ব্যর্থ হয় তাহলে আমাদের কাছে ফসলরক্ষার কাজে বিকল্প কিছুই থাকবে না। তাই আমাদের যারা পিআইসি কমিটিতে রয়েছে এবং প্রকল্পগুলো রয়েছে তা আমাদের নির্ধারিত সময়ের মধ্যে শেষ করতে হবে। এক্ষেত্রে আমি সকল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের নির্দেশনা প্রদান করছি যে আপনারা পিআইসিদের নিয়ে বসেন। আপনারা প্রত্যেক কাজ সঠিকভাবে ও নির্ধারিত সময়ে যেনো শেষ করা যায় সে লক্ষ্যে পরিকল্পনা করেন।

তিনি আরো বলেন, যেসকল পিআইসি কাজগুলোকে অপরিকল্পিত ও অপ্রয়োজনীয় বলা হয়েছে সেগুলো পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী, জেলা প্রশাসক ও উপজেলা মনিটরিং কমিটির সবাই এগুলো দেখবেন। প্রত্যেকের কথাগুলো গুরুত্বসহকারে শুনে এগুলোর কার্যক্রম শুরু করবেন। সকলের মতামত দেওয়ার অধিকার রয়েছে এবং পিআইসিসহ সকল সরকারি কর্মকর্তারর জবাদিহিতার অবশ্যই রয়েছে। তাই আমি সকলের কাছে অনুরোধ করবো শুধু অভিযোগ না দিয়ে কিভাবে কাজটা করলে সহজ হবে এবং আমাদের ফসলরক্ষার বাঁধের কাজে উন্নয়ন হবে সেই মতামত দিবেন।

মঙ্গলবার (৫ ফেব্রুয়ারী) বিকেল ৫ ঘটিকায় সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসক সম্মেলন কক্ষে সুনামগঞ্জ জেলার বিভিন্ন উপজেলার হাওর রক্ষা বাঁধ সংক্রান্ত মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

বিভাগীয় কমিশনার বলেন, কয়েকটি হাওরের দেরিতে পানি নামার কারণে যদি কাজ শুরু হতে বিলম্ব তাহলে আপনারা সেটার জন্য অন্য একটি পরিকল্পনা করেন। প্রয়োজন লোকবল ৫ জনে জায়গায় ১০ জন নিবেন এবং যন্ত্রপাতি একটি জায়গার দুইটি প্রয়োজন হলে অবশ্যই আমরা দিবো। আমরা চাই বাঁধের কাজ সঠিক সময়ে শেষ হোক এবং বর্তমানে যে ক্লোজারগুলো রয়েছে সেগুলো শেষ করেন।

বাঁধের কাজ পরিদর্শন বিষয়ে বিভাগীয় কমিশনার বলেন, আমি বাঁধের কাজ দেখে হতাশ না। আমরা ইনশাল্লাহ নির্ধারিত সময় ২৮ ফেব্রুয়ারির মধ্যে কাজ শেষ করতে পারবো বলে ধারণা করতে পারি। তাছাড়া যেসকল উপজেলা কর্মকর্তারা এখনো বাঁধের প্রয়োজনীয়তা বিষয়ক কারিগরি প্রতিবেদন জমা দেননি তারা দ্রুত সেটা জমা দিয়ে দিবেন, জমা না দিলে পরিবর্তিতে কোন সমস্যা হলে সেটা আপনাকেই দেখতে হবে আমরা দেখবো না।

অন্যদিকে মতবিনিময় সভায় দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জেবুন নাহার শাম্মী হাওরের ফসল রক্ষা বাঁধের প্রয়োজনীয়তা বিষয়ক কারিগরি প্রতিবেদনের ক্ষেত্রে স্থানীয় সরকারের উপজেলা প্রকৌশলীদের অসহোগিতাকে দায়ী করেন।
 
এ বিষয়ে স্থানীয় সরকার (এলজিইডি)’র নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মাহবুব আলম বলেন, লোকবল সংকট থাকার কারণে তারা সব জায়গায় সঠিক সময়ে যেতে পারছেন না। জেলায় ২০৯টি পদের বিপরীতে ১০০টি পদ শুন্য থাকা এবং ২০১৭-১৮ সালের ফসলরক্ষা কাজের প্রি-ওয়ার্ক না পাওয়ার কথাও জানান। তিনি বলেন, আমি সকল কর্মকর্তাদের নির্দেশনা প্রদান করে দিবো এবং দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলার প্রকৌশলীকেও আমি নির্দেশ প্রদান করবো যাতে দ্রুত বাঁধের প্রয়োজনীয়তা বিষয়ক কারিগরি প্রতিবেদন প্রদান করবেন।

জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আব্দুল আহাদের সভাপতিত্বে মতবিনিময় সভায় বক্তব্য রাখেন, স্থানীয় সরকারের উপ-পরিচালক মো. এমরান হোসেন, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মো. শরিফুল ইসলাম, রাসেদুল ইসলাম চৌধুরী, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মাহবুবুর রহমান, জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হায়দার চৌধুরী লিটন, জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী শবিবুর রহমান, গণপূর্তের নির্বাহী প্রকৌশলী আল-আমিন বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু সুফিয়ান, আলী আমজাদ, হাওর বাঁচাও সুনামগঞ্জ বাঁচাও আন্দোলন কমিটির সভাপতি বিজন সেন রায়, সিনিয়র আইনজীবী রইছ উদ্দিন আহমেদ প্রমুখ।

এসময় সুনামগঞ্জ জেলার ১১ টি উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা ও সহকারি কমিশনাররা উপস্থিত ছিলেন।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত