তাহিরপুর প্রতিনিধি

২৫ ফেব্রুয়ারি , ২০২০ ২০:০৪

আট কিলোমিটারের মধ্যে পাঁচ কিলোমিটারই ঝুঁকিপূর্ণ

তাহিরপুর-বাদাঘাট সড়ক

সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার তাহিরপুর-বাদাঘাট সড়কের দৈর্ঘ্য ৮ কিলোমিটার।  ৮ কিলোমিটার সড়ক কথা। যার পাঁচ কিলোমিটার সড়কই এখন ঝুঁকিপূর্ণ। ফলে প্রতিদিনই ছোট-বড় দুর্ঘটনার মুখোমুখি হচ্ছে এ সড়ক দিয়ে চলাচলকারী যানবাহন ও যাত্রীরা। এছাড়া এ সড়ক দিয়ে চলাচলকারী পর্যটক-দর্শনার্থীদের পাশাপাশি সীমান্তের ৩ টি শুল্ক ষ্টেশনের প্রায় ৮ শতাধিক ব্যবসায়ীসহ ৪টি ইউনিয়নের সহস্রাধিক মানুষ চলাচল করে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে।

জানা যায়, জেলার ১১টি উপজেলার মধ্যে তাহিরপুর উপজেলাটি অর্থনৈতিক ও পর্যটন সমৃদ্ধ হলেও যোগাযোগ ব্যবস্থা নাজুক। উপজেলার ৭টি ইউনিয়নের মধ্যে ব্যবসা বাণিজ্যের প্রাণ কেন্দ্র বাদাঘাট ইউনিয়নের বাদাঘাট বাজার ছাড়াও ৪টি ইউনিয়নের লোকজন, বাদাঘাট বাজার হয়ে উপজেলার ৩টি শুল্ক ষ্টেশনের ব্যবসায়ী, শিমুল বাগান, যাদুকাটা নদী, বারেকটিলা, শহীদ সিরাজ লেকসহ বিভিন্ন পর্যটন স্পট দেখতে আসা হাজার হাজার পর্যটক ও দর্শনার্থীরা লাইটেস, মোটরসাইকেল, মালবাহী ট্রাক নিয়ে চলাচলের সহজ পথ হিসেবে এই সড়কটি সবাই ব্যবহার করছে। কিন্তু সড়কের পাথর উঠে গর্ত, বিভিন্ন স্থানে ভাঙ্গন থাকায় প্রয়োজনীয় সংস্কাকার না হওয়ায় চলাচল করতে গিয়ে প্রতিদিনেই দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছে চলাচলকারী যানবাহন ও মানুষজন। তাই উপজেলার সাড়ে তিন লক্ষাধিক জনসাধারণের ও দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আগত হাজার হাজার পর্যটকগনের দাবী দ্রুত সড়কটি প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার।

স্থানীয় সরকার প্রকৌশলী অধিদপ্তর (এলজিইডি) তাহিরপুর উপজেলা কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, উপজেলার তাহিরপুর-বাদাঘাট দূরত্ব ৮কিলোমিটার। ১৯৯৩ সালে এলজিইডি তাহিরপুর-বাদাঘাট সড়কটি নির্মাণের উদ্যোগ গ্রহণ করেন মাটির সড়ক তৈরি করা হয়। পরে বিভিন্ন চড়াই উতরাই পেরিয়ে ২০১১-১২অর্থ বছর পর্যন্ত সড়কের ৬ কিলোমিটার কাজ পাকা করা হয়েছে। পরে গত ২০১৮ সালের শুরুর দিকে এই সড়কটিতে তিনটি ভাগ করে মেরামতের জন্য প্রায় ৪ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয় সরকার। এই সড়কের বৌলাই নদী উপর নির্মিত ব্রিজ থেকে সূর্যেরগাঁও পর্যন্ত ৭৫০ মিটার ও টাকাটুকিয়া ব্রিজে দুই পাশে মিলিয়ে বল্ক দিয়ে ২৫ ফুট সড়কের কাজ হয়েছে। কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ ভাঙ্গন অংশে (হুসনারঘাট, পাতারগাও) কোন কাজ হয় নি।

এই বিষয়ে স্থানীয় সরকার প্রকৌশলী অধিদপ্তর (এলজিইডি) সদ্য বিদায়ী প্রকৌশলী সাইদুল্লাহ মিয়া জানান, এই সড়কটি প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ প্রকল্পের অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এখনও অনুমোদন হয়নি। অনুমোদন হলে এ সড়ক কাজ শুরু হবে।

তাহিরপুর-বাদাঘাট সড়কটি চলাচলের উপযোগী না হওয়ায় উপজেলাবাসীর গলারকাটা হয়ে দাঁড়িয়ে ক্ষোভের সাথে জানান মোটরসাইকেল চালক হান্নান মিয়া। তিনি আরও জানান, হাজার হাজার পর্যটক প্রতিদিন এই সড়ক দিয়ে প্রাইভেটকার, সিএনজি, লেগুনা, টমটম চলাচল করছে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে। এই সড়কটির বিষয়ে বার বার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানোর পরও কোন ব্যবস্থাই নিচ্ছে না।

এ সড়ক দিয়ে চলাচলকারী তাহিরপুর বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় এন্ড কলেজের শিক্ষক সোহেল আহমদ সাজু জানান, তাহিরপুর-বাদাঘাট রাস্তাটি খুবেই গুরুত্বপূর্ণ। এই রাস্তা ভাঙ্গা ছোড়া থাকায় যাতায়াতে চরম দুর্ভোগ আর পরিবহনে অতিরিক্ত টাকা দিতে হচ্ছে সবাইকে। জোড়া তালি দিয়ে চলছে। বর্তমানে চলাচল করা খুবেই কঠিন।

তাহিরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিজেন ব্যনার্জি জানান, গুরুত্বপূর্ণ তাহিরপুর-বাদাঘাট সড়কটির স্থানে স্থানে ভাঙ্গনের কারণে প্রতিদিন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পর্যটকসহ স্থানীয় এলাকাবাসী বিভিন্ন ধরনের যানবাহন চলাচল করেছে। পর্যটন শিল্পের বিকাশের স্বার্থে ও জনদূর্ভোগ লাগবে গুরুত্ব সহকারে সে অনুযায়ী প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হয়েছে।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত