তাহিরপুর প্রতিনিধি

০২ মে, ২০২০ ১৯:৫৮

করোনায় ভাল নেই কামার শিল্পী ও তাদের পরিবার

‘বর্তমান করোনা পরিস্থিতিতে ভাল নেই আমরা। সারাদিন বসে থেকেও বেচা কেনা নাই। কেমনে যে সংসার চালাব বুজে আসে না। বৈশাখ মাস আর ঈদ পূজা এলে একটু চাহিদা বাড়ে । আর সারা বছরেই কাজ না থাকায় বসে থাকতে হয়।’

কথাগুলো বলছিলেন তাহিরপুর বাজারে উপজেলার বালিজুরী ইউনিয়নের দক্ষিণকুল গ্রামের অমর পাল। তিনি জানান, বংশপরম্পরায় কামার শিল্পের সাথে জড়িত। পৈতৃক পেশা ছাড়তে পারছেন না। কারণ ছোট থেকেই এই পেশা নেশায় পরিণত হয়েছে।

তিনি আরও জানান, পরিবারের সদস্য ৯ জন। অভাবের কারণে বেশিরভাগ দিন কাটাতে হয় খেয়ে না খেয়ে। এরপরও পাচ্ছেন না সরকারি সহায়তা। তাই এই করোনাকালে তিনি খুব কষ্টে আছেন ।

অমর পালের মত জেলার ১১ উপজেলার ৫ শতাধিক কামার মানবেতর জীবনযাপন করছে।

অমর পাল জানান, নিজ বাড়িতেই তৈরি করেন বেলচা, কোদাল, দা, কাছিসহ বিভিন্ন লৌহজাত পণ্য। তৈরি করে উপজেলার বিভিন্ন বাজারে নিজেই পরিবহন করেন। এরপর দিন ভর বাজারে মানুষের চাহিদা লৌহজাত পণ্য সামগ্রীই বিক্রি করেন। এ থেকে যা লাভ হয় তা দিয়ে পরিবারের খরচ করতে হয়। কিন্তু আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহারের লৌহজাত পণ্যের চাহিদা কমে যাওয়া আর লৌহজাত পণ্য তৈরির সরঞ্জাম লোহা, কয়লাসহ অন্যান্য জিনিসপত্রের দাম বেশী হওয়ায় বেশী দাম বিক্রি করতে হয়। এর পরও লাভ হয় না। এরপরও নানান প্রতিকূলতার মাঝে কোন ভাবে ঠিকে আছেন অমর পালের মত কামার শিল্পীরা।

অমর পাল দাবি করে বলেন, কামার শিল্প একটি আদি শিল্প। এই শিল্পকে বাঁচিয়ে রাখতে সরকারী ভাবে উদ্যোগ নেওয়ার পাশাপাশি আমাদেরকে ঋণ দিলে আমরা আধুনিক প্রযুক্তির সাথে খাপখাইয়ে নিজেদের পণ্য তৈরি করতাম। না হলে একটা সময় আসবে আর এই কামার শিল্প বিলুপ্ত হয়ে যাবে।

এ ব্যাপারে তাহিরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিজেন ব্যনার্জি জানান,কামার শিল্পকে ঠিকিয়ে রাখতে তাদের সহযোগিতা করা হবে।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত