নোয়াখালী সংবাদদাতা

১৬ জুন, ২০২৩ ১৯:২২

পাল্টাপাল্টি হামলা: কোম্পানীগঞ্জে বিএনপির ৩৪৩ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা

প্রতীকী ছবি

নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জে আওয়ামী লীগ-বিএনপির পাল্টাপাল্টি হামলার ঘটনায় বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের ৩৪৩ জন নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতার ওপর হামলার অভিযোগে মামলা হয়েছে।

মামলায় বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের ৯৩ জন নেতাকর্মীর নাম উল্লেখ করা হয়েছে এবং অজ্ঞাত পরিচয় আরও ২০০ থেকে ২৫০ জনকে আসামি করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (১৫ জুন) রাতে হামলার শিকার কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মো. আলমগীর হোসেন বাদী হয়ে কোম্পানীগঞ্জ থানায় এ মামলা দায়ের করেন।

ওই মামলায় ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীদের হামলার শিকার উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব মাহমুদুর রহমান রিপনকে ৩ নম্বর ও বসুরহাট পৌরসভা যুবদলের আহ্বায়ক ওবায়দুল হক রাফেলকে ১০ নম্বর আসামি করা হয়েছে।

এছাড়া মামলায় ২ নম্বর আসামি করা হয়েছে উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক নুরুল আলম শিকদার, ৪ নম্বর আসামি করা হয়েছে বসুরহাট পৌরসভা বিএনপির সভাপতি আবদুল মতিন লিটন, ৮ নম্বর আসামি করা হয়েছে উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক ফজলুল কবির ফয়সাল এবং উপজেলা যুবদলের সদস্য সচিব জায়দুর রহমান রাজনকে ৬ নম্বর আসামি করা হয়েছে।

মামলায় এজাহার ও ভুক্তভোগী সূত্রে জানা যায়, কোম্পানীগঞ্জ উপজেলায় হাসনা মওদুদ ও ফখরুল গ্রুপ আলাদা ভাবে বিভক্ত হয়ে নিজেদের কর্তৃত্ব ফলানোর জন্য গত কিছু দিন যাবত দফায় দফায় মারামারিতে লিপ্ত হয়ে কোম্পানীগঞ্জ এলাকায় ভীতিকর পরিবেশ সৃষ্টি করছেন। গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেল ৫টার দিকে স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা আলমগীর হোসেন বাড়ি থেকে ওষুধ কিনতে বসুরহাট বাজারে যান। বাড়ি থেকে বাজারে যাওয়ার পথে বিএনপির নেতাকর্মীরা ‘বহুদিন আওয়ামী লীগের লোককে পিটি না’ বলে তার ওপর হামলা চালায়। ওই সময় হামলাকারীরা তাকে লোহার রড, হকিস্টিক ও লাঠিসোটা দিয়ে পিটিয়ে আহত করে। তার পকেটে থাকা ২৩ হাজার ৫শত টাকা ছিনিয়ে নেয়। একপর্যায়ে স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা আলমগীরের চিৎকার শুনে স্থানীয় লোকজন এগিয়ে এলে বিএনপি নেতাকর্মীরা কয়েক রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছোড়ে ও ককটেল বিস্ফোরণ করে আতঙ্ক সৃষ্টি করে পালিয়ে যায়।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সাবেক সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদের সহধর্মিণী কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সদস্য সাবেক এমপি হাসনা জসিম উদদীন মওদুদ অভ্যন্তরীণ কোন্দলের অভিযোগ নাকচ করে বলেন, বিনা উসকানিতে বৃহস্পতিবার বিকেল ৫টার দিকে উপজেলার হাসপাতাল গেইটে বসুরহাট পৌরসভা যুবদলের আহ্বায়ক রাফেলকে লোহার রড দিয়ে মাথা পাটিয়ে দেয় যুবলীগ, ছাত্রলীগ,স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতাকর্মীরা। ওই সময় সেচ্ছাসেবক দল নেতা সাইমুনও হামলার শিকার হন। পরে আহত যুবদল নেতা রাফেল ও সাইমুনকে দেখতে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যাওয়ার পথে কোম্পানীগঞ্জ থানার সামনের সড়কে উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব মাহমুদুর রহমান রিপনকে যুবলীগ, ছাত্রলীগ,স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতাকর্মীরা লোহার রড দিয়ে পিটিয়ে গুরুতর আহত করে। আহতদের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীরা বিএনপির নেতাদের ওপর হামলা করে উল্টো তাদের অপকর্ম ঢাকার জন্য বিএনপি নেতাদের নামে মামলা করেছে।

কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হাসান রনি জানান, বিএনপির দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। পরে ওই সংঘর্ষের জের ধরে উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আলমগীর হোসেনের ওপর বিএনপির নেতাকর্মীরা হামলা চালায়। বিএনপির দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষের জের ধরে বিএনপির নেতাকর্মীরা তাদের নেতাদের ওপর হামলা চালায়।

কোম্পানীগঞ্জ থানার ডিউটি অফিসার উপ-পরিদর্শক (এএসআই) মো.আনোয়ার হোসেন জানান, বৃহস্পতিবার রাতে মো. আলমগীর হোসেন বাদী হয়ে ৯৩ জনের নাম উল্লেখ করে এই মামলা দায়ের করেন।

কোম্পানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সাদেকুর রহমান মামলা দায়েরের সত্যতা নিশ্চিত করেন। তবে এ বিষয়ে পরে জানাবেন বলে তিনি আর কোন মন্তব্য করেননি।

উল্লেখ্য,এর আগে গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলের দিকে নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জের বসুরহাট বাজারের হাসপাতাল গেইট ও থানার সামনের সড়ক ও কলেজ গেইটে আওয়ামী লীগ-বিএনপির মধ্যে পাল্টাপাল্টি হামলার ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব মাহমুদুর রহমান রিপন (৪৯) ও বসুরহাট পৌরসভা যুবদলের আহ্বায়ক ওবায়দুল হক রাফেল (৩৮) সেচ্ছাসেবক দল নেতা সাইমুন (২৫) ও কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মো.আলমগীর হোসেন (৪০) আহত হন।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত