১৭ ডিসেম্বর, ২০১৬ ১৬:০৯
আজ ১৭ ডিসেম্বর রাঙামাটি হানাদার মুক্ত দিবস। ১৯৭১ সালের এই দিনে রাঙামাটি শত্রু মুক্ত হয়েছিলো। বিজয় দিবসের দুইদিন পর রাঙামাটিতে আনুষ্ঠানিকভাবে উত্তোলন করা হয় স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা। মিত্রবাহিনীর পূর্বাঞ্চল কমান্ডের অধিনায়ক জেনারেল সুজন সিং ও শেখ ফজলুল হক মনি শহরের পুরাতন কোর্ট বিল্ডিং মাঠে স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলন করেছিলেন।
১৯৭১ সালের মার্চে মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে মে মাসে পাকবাহিনীর সৈন্যরা রাঙামাটি, রামগড় ও বান্দরবান দখল করে। এরপর মুক্তিযুদ্ধের ১নং সেক্টরের আওতায় সর্বপ্রথম ৫ মে ২৫ জন সদস্যের পার্বত্য চট্টগ্রামের মুক্তিযোদ্ধা দল গঠন করা হয়। পরবর্তীতে এ দলের হেমদা রঞ্জন ত্রিপুরাকে কমান্ডার হিসেবে নিযুক্ত করা হয়। এরপর শুরু হয় পাকবাহিনীর সঙ্গে যুদ্ধ।
জানা যায়, ১৫ ডিসেম্বর মিত্র ও মুক্তিবাহিনীর সদস্যরা বরকলে পাকবাহিনীর উপর আক্রমণ শুরু করে। যৌথবাহিনীর রকেট লঞ্চার ও এলএমজি থেকে অনবরত গুলি চালিয়ে যেতে থাকে। পাক সৈন্যরা যৌথবাহিনীর উপর সেলিং করতে থাকে। এদিন সকাল থেকে বিকাল ৩টা পর্যন্ত উভয়পক্ষে তুমুল যুদ্ধ চলে।
যৌথবাহিনীর আক্রমণে টিকতে না পেরে পাক সৈন্যরা পিছু হটে এবং মিত্র ও মুক্তিবাহিনীর সদস্যরা অগ্রসর হয়ে দখল করে নেয় পাক ক্যাম্প। আর পাক সৈন্যরা রাঙামাটি ছেড়ে যাওয়ার সময় শহরের মানিক ছড়ি ব্রিজ ধ্বংস করে দিয়ে যায়। মিত্রবাহিনীর পূর্বাঞ্চল কমান্ডের অধিনায়ক জেনারেল সুজন সিং ও শেখ ফজলুল হক মনি ভারতীয় হেলিকপ্টার যোগে ১৭ ডিসেম্বর রাঙামাটির পুরাতন কোর্ট বিল্ডিং মাঠ বর্তমানে শহীদ শুক্কুর স্টেডিয়ামে অবতরণ করেন।
পাকবাহিনী রাঙামাটি ছেড়ে গেলেও তাদের সহযোগী মিজো বাহিনীর কিছু সৈন্য থেকে যাওয়ায় রাঙামাটি মুক্ত হতে সময় নেয়। ১৭ ডিসেম্বর স্বাধীন দেশের পতাকা উত্তোলনের সময় যুদ্ধের ধ্বংসস্তূপের মধ্যদিয়ে স্বজন হারাদের ব্যথা ভুলে হাজার হাজার উৎফুল্ল জনতা সেদিন রাস্তায় নেমে আসে।
আপনার মন্তব্য