সিলেটটুডে ডেস্ক

১২ ফেব্রুয়ারি , ২০১৭ ১০:৩০

পানিশূন্যতায় বিপর্যস্ত তিস্তা নদী ও জনজীবন

‘‘পানিশূন্যতায় তিস্তা নদী ও নদী পাড়ের জীবন এখন বিপর্যস্ত। তিস্তা নদীর পানির প্রবাহ সাম্প্রতিক সময়ে যেভাবে হ্রাস পেয়েছে তাতে এ অঞ্চল অচিরেই মরুভূমিতে পরিণত হবে। তিস্তার সাথে এখানকার জীবন ও জীবিকার যে নিবিড় সম্পর্ক ছিল তা প্রতিনিয়ত পরিবর্তিত হচ্ছে। নদীর পানি কমে যাওয়ায় এ অঞ্চলে শুধু শস্য উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে না, পরিবেশও ক্ষতির সম্মুখীন হয়। পরিবর্তিত হচ্ছে জলবায়ু। এ অবস্থায় তিস্তা নদী ও নদীপাড়ের মানুষকে রক্ষায় কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ জরুরী হয়ে পড়েছে।’’

শনিবার (১১ ফেব্রুয়ারি) ইন্টারন্যাশনাল রিভার, বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা), ব্লু-প্ল্যানেট ইনিশিয়েটিভ, রিভারাইন পিপল ও সলিডারিটি'র আয়োজনে গাইবান্ধা জেলার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার চন্ডিপুর ইউনিয়নের তিস্তা তীরবর্তী হরিপুর ঘাট সংলগ্ন এলাকায় ঠাকুরডাঙ্গি গ্রামে ‘তিস্তা নদী ও তিস্তা পাড়ের জীবন’ শীর্ষক গ্রামীণ নাগরিক সভায় বক্তারা এসব কথা বলেন।

তিস্তা-ব্রহ্মপুত্র বেসিনের বিভিন্ন জেলার নদীপাড়ের মানুষের সাথে ধারাবাহিক মতবিনিময় সভার অংশ হিসাবে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।

চন্ডিপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান খোরশেদ প্রামাণিক এর সভাপতিত্বে সভায় আয়োজকদের পক্ষ থেকে বক্তব্য রাখেন রিভারাইন পিপল এর পরিচালক ও বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. তুহিন ওয়াদুদ, বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা)-এর জাতীয় পরিষদ সদস্য ও বাপা সিলেট জেলার সাধারণ সম্পাদক আব্দুল করিম কিম, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী রেজিস্ট্রার আমিনুর রহমান, ব্লু-প্ল্যানেট ইনিশিয়েটিভ-এর কর্মকর্তা সাজ্জাদ খান, প্রাক্তন প্রধান শিক্ষক শরিয়তুল্যা, সমাজকর্মী সামিউল ইসলাম প্রমুখ। সভা সঞ্চালন করেন রিভারাইন পিপল কর্মী রিপন মিয়া।

ড. তুহিন ওয়াদুদ বলেন, তিস্তাকে বাঁচানো না গেলে উত্তর জনপদের জীববৈচিত্র্য ধ্বংসের মুখে পড়বে। বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের মধ্য দিয়ে তিস্তাকে বাঁচানো না গেলে প্রয়োজনে আন্তর্জাতিক আদালতের মাধ্যমে অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে।

আব্দুল করিম কিম বলেন, তিস্তা নদীতে পানি নেই। ধূধূ বালুচর আজ তিস্তা ও তিস্তাপাড়ের মানুষের বাস্তবতা। সেচ প্রকল্পের পানিসহ তিস্তাকে বাঁচিয়ে রাখতে ন্যুনতম ৫ হাজার কিউসেক পানি প্রয়োজন আছে। অভিন্ন নদী তিস্তার উজানে বিজনবিভুঁই এলাকায় ভারত গজলডোবা ব্যারাজ দিয়ে ১৯৮৭ সাল থেকে তিস্তার পানি একতরফা ভাবে প্রত্যাহার করে আসছে। ন্যায্য পানির হিস্যা আদায়ে বাংলাদেশ ভারতের উপর চাপ সৃষ্টি করতে পারছে না। এ অবস্থায় তিস্তা-ব্রহ্মপুত্র নদীর ন্যায় সংগত পানির হিস্যা আদায়ে ভারতের বিবেকবান মানুষকে যুক্ত করা জরুরী।

মতবিনিময় সভায় নদীতীরের সাধারণ মানুষেরা নদীর অতীত-বর্তমান নিয়ে সঙ্কট ও সম্ভাবনার কথা বলেন।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত