সিলেটটুডে ডেস্ক

১১ মে, ২০১৭ ১৪:৫৩

ধারালো অস্ত্রের কোপেই দমকল বাহিনীর সদস্যের মৃত্যু, বেপরোয়া নারী জঙ্গি

রাজশাহীর গোদাগাড়ীতে সন্দেহভাজন জঙ্গি আস্তানায় অভিযানের সময় জঙ্গি পরিবারের এক সদস্য ধারালো অস্ত্র নিয়ে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিস কর্মীদের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়েন। দমকল বাহিনীর এক কর্মীকে তার উপর্যপুরি কোপানোর দৃশ্যের ছবিও তুলেছেন গণমাধ্যম কর্মীরা।

মোট এক মিনির পাঁচ সেকেন্ডের এই ভিডিওটি এরই মধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। এতে দেখা যায়, পুলিশের মাইকে আত্মসমর্পণের আহ্বান উপেক্ষা করে বাইরে এসে হামলা চালায় ওই পরিবারের সদস্যরা। এদের মধ্যে দুই জন নারীও ছিলেন।

বুধবার রাতেই গোদাগাড়ী উপজেলার মাটিকাটা ইউনিয়নের হাবাসপুর মাছমারা বেনীপুর গ্রামে সন্দেহভাজন জঙ্গি আস্তানাটির সন্ধান পায় পুলিশ। বৃহস্পতিবার ভোরে আস্তানাটিকে ঘিরে অভিযানের প্রস্তুতি শুরু হয়। পুলিশ ছাড়াও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা সেখানে অবস্থান নেয়।

এক পর্যায়ে বাড়ি থেকে বের হয়ে সন্দেহভাজন জঙ্গিরা ঝাঁপিয়ে পড়ে অভিযানে যাওয়া সদস্যদের ওপর। এ সময় নিহত হন দমকল বাহিনীর কর্মী আবদুল মতিন। এর পর পরই সন্দেহভাজন জঙ্গি পরিবারের এক সদস্য ‘আত্মঘাতী’ বিস্ফোরণ ঘটায়, যাতে পাঁচ জন নিহত হয়।

এই হামলার ভিডিওটিতে ভিডিওতে দেখা যায়, এক নারী দা দিয়ে কাউকে কোপাচ্ছেন। তার পাশে লুঙ্গি পরিহিত এক পুরুষে হাতে ছিল বল্লম।

প্ররত্যক্ষদর্শী একজন স্থানীয় সাংবাদিক বলেন, বাড়িটি পুলিশ ঘিরে রাখা অবস্থায় সকাল সাড়ে সাতটা ৪০ মিনিটে ধারালো অস্ত্র, শাবল ও বল্লম হাতে কয়েকজন নারী-পুরুষ সেখান থেকে বের হয়ে ধানক্ষেতে অবস্থান নিয়ে থাকা পুলিশের দিকে ছুটে যান। তারা কয়েকটি বোমার বিস্ফোরণ ঘটান। এ সময় একজন নারী ও একজন পুরুষ মিলে দমকল  বাহিনীর সদস্য আবদুল মতিনকে এলোপাতাড়ি কোপাতে থাকেন। পাশে থাকা পুলিশ গুলি ছুড়েও তাদের নিবৃত্ত করতে পারেনি। জঙ্গিরা পুলিশের দিকেও ধেয়ে আসার চেষ্টা করে। পুলিশ গুলি করে তাদের প্রতিরোধ করে। এর মধ্যেই হামলাকারী জঙ্গিরা সবাই আত্মঘাতী বিস্ফোরণে নিহত হয় বলে পুলিশ জানায়।

পুলিশের কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন কর্মকর্তা বলেন, জঙ্গি আস্তানাগুলোতে যেহেতু প্রচুর বিস্ফোরক থাকে তাই অভিযানের সময় ফায়ার সার্ভিসের সদস্যদের সঙ্গে রাখা হয় পানি ছিটানোর জন্য। এ ছাড়া দরজা-জানালা, দেয়াল ভাঙতেও তারা সহায়তা করে। প্রাথমিক চিকিৎসার ক্ষেত্রেও ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা সহায়তা করে। এ ধরনের প্রাণরক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যকে যেভাবে হত্যা করা হয়েছে, তা বীভৎস।

আবদুল মতিনের বাড়ি গোদাগাড়ীর মাটিকাটায়। তাঁর লাশ রাজশাহী মেডিকেল কলেজ মর্গে নিয়ে যাওয়া হয়েছে ময়নাতদন্তের জন্য। মর্গ সূত্র জানিয়েছে, নিহতের শরীরে বিশেষ করে মাথায় কোপের অনেকগুলো গভীর ক্ষত রয়েছে। ধারালো অস্ত্রের আঘাতে তাঁর বাম কানটি প্রায় বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে।

জঙ্গিদের হামলা ও বিস্ফোরণে আহত চার পুলিশ সদস্য রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের দুটি ওয়ার্ডে ভর্তি আছেন। তাদের কারও কারও শরীরে বোমার স্প্লিন্টারের আঘাত রয়েছে বলে হাসপাতাল সূত্র জানিয়েছে।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত