সিলেটটুডে ডেস্ক

২৯ জানুয়ারি, ২০১৮ ১৫:০৬

‘ছাত্রদল’ থেকে ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক

বাংলাদেশ ছাত্রলীগ শেরপুর জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছেন মতিউর রহমান মতিন নামের এক ছাত্রনেতা। তার বিরুদ্ধে বিএনপি-জামায়াত সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ ওঠেছে। এনিয়ে শেরপুরে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা বিক্ষোভ করেছেন। কমিটির প্রতিবাদে শেরপুরে সোমবার (২৯ জানুয়ারি) সন্ধ্যা হরতাল ডেকেছে ছাত্রলীগের পদবঞ্চিত নেতাকর্মীরা। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে কমিটি স্থগিত করে পাঁচ সদস্যের এক তদন্ত কমিটিও গঠন করেছে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ।

জানা যায়, রোববার জেলা ছাত্রলীগের সদ্য সাবেক কমিটির সাধারণ সম্পাদক নাজমুল ইসলাম সম্রাটের নেতৃত্বাধীন অংশের ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা ঘোষিত কমিটি বাতিলের দাবিতে বিকেলে জেলা শহরে মিছিল করে। মিছিল শেষে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে নাজমুল ইসলাম সম্রাটের নেতৃত্বাধীন অংশটি সোমবার জেলায় দিনব্যাপী হরতালের ডাক দেয়।

এরআগে, গত শনিবার (২৭ জানুয়ারি) ছাত্রলীগের সভাপতি সাইফুর রহমান সোহাগ ও সাধারণ সম্পাদক এস এম জাকির হোসাইন সাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ কমিটি অনুমোদনের কথা জানানো হয়। শোয়েব হাসান শাকিলকে সভাপতি ও মতিউর রহমান মতিনকে সাধারণ সম্পাদক করে ১২ সদস্য বিশিষ্ট কমিটির অনুমোদন দেওয়া হয়।

কমিটির ৪ সহ-সভাপতি হলেন- বর্ষণ কারুয়া, রাজিব মালিক, মুনতাজ সারোয়ার ও রাহি জাওয়ারী রুবেল। যুগ্ম-সম্পাদক পদের ৪ জন হলেন- আল-আমিন হোসেন (রাকিব), আরিফ হোসাইন, মো. রাসেল রহমান (আকন্দ) ও আশিকুর রহমান আশিক। দুই সাংগঠনিক সম্পাদক হয়েছেন- মো. মেহেদী হাসান মাশুক ও রাকিবুল ইসলাম শিমুল।

জেলা ছাত্রলীগের সূত্রগুলো জানায়, সর্বশেষ ২০১০ সালে সম্মেলনের মাধ্যমে সোহাগ-সম্রাটকে সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক করে শেরপুর জেলা ছাত্রলীগের কমিটি গঠন করা হয়েছিল। সেই কমিটির সভাপতি সোহাগ উচ্চ শিক্ষার জন্য দেশের বাইরে গেলে সহ-সভাপতি জুনায়েদ নূরানি মনিকে সভাপতি করে নাজমুল আলম সম্রাটকে সাধারণ সম্পাদক রেখে ২০১২ সালে জেলা ছাত্রলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করা হয়।

এদিকে, সমালোচনা শুরু হলে কমিটি ঘোষণার পরের দিন তা স্থগিত করেছে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ। অভিযোগের ব্যাপারে অধিকতর তদন্তের জন্যে পাঁচ সদস্যবিশিষ্ট একটি কমিটিও গঠন করে তারা। ওই তদন্ত কমিটিকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।

কমিটিতে মতিউর রহমান মতিনের অনুর্ভুক্তির পর তার বিতর্কিত কিছু ফেসবুক স্ট্যাটাস সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। এতে দেখা যায়, মতিন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং আওয়ামী লীগ সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিরুদ্ধে কটূক্তিমূলক স্ট্যাটাস দিয়েছেন। তবে বর্তমানে মতিনের সেই ফেসবুক আইডি বন্ধ রয়েছে।

২০১৩ সালের ২৩ নভেম্বর ফেসবুকে মতিন লিখেন, কি দুর্ভাগ্য আমাদের বাংলাদেশের। আমরা সবাই জানি যে তারেক রহমান দুর্নীতির সাথে কতটুকু জড়িত। কিন্তু আজকের রায়ের মধ্য দিয়ে, এই বহুদলীয় সরকার জাতির সাথে বেঈমানি করল। এই আওয়ামী লীগ জানে হাসিনার ছেলে মেয়েরাও দুর্নীতিতে অনেক এগিয়ে তাই তাদের নিজেদের রক্ষা করতেই দেশের সাথে বেইমানি করল। বাঙালি জাতিকে এই সরকার ৭১ এর মত কলঙ্কিত করল। রক্ত বের হচ্ছে চোখের পানি হয়ে।

একই দিন অপর এক স্ট্যাটাসে তিনি লিখেন, শেখ হাসিনার উদ্ভট সরকারের উদ্ভট প্রশাসন যে চালাচ্ছে কিছু বিকৃত মস্তিষ্কের জনবিচ্ছিন্ন দলীয় লোক, তার বহিঃপ্রকাশ হচ্ছে ঢাকার অবিবাহিত বাসিন্দাদের বাড়ি ছাড়ার পুলিশী নির্দেশ। এর আদেশদাতা ও পরামর্শদাতা যে আসলে কতটা অপদার্থ ও নির্বুদ্ধি, তা সকল বিশ্লেষণ ও পর্যালোচনার ঊর্ধ্বে। শুধু এতটুকুই বলার আছে, এসব নির্বুদ্ধিতা ও অপদার্থতা হচ্ছে নির্মম পতনের লক্ষণ, যেমন অনেক লক্ষণ শেখ হাসিনা আর তার খুনি অনুসারীরা দীর্ঘদিন যাবত দেখিয়ে আসছে।

অভিযোগের ব্যাপারে মতিউর রহমান মতিন বলেন, আমার বিরুদ্ধে দলীয় প্রতিপক্ষরা ষড়যন্ত্র করছে।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত