সিলেটটুডে ডেস্ক

২২ মার্চ, ২০১৮ ২১:৪২

‘স্টার সানডে’ উদযাপনের টাকা যোগাতেই খালা ও নানীকে খুন

স্টার সানডে উদযাপনের টাকা যোগাড় করতে পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী চুরির সময় গুলশানে নারী বেসেত চিরান (৬৫) ও তার মেয়ে সুজাতা চিরানকে (৪০) খুন করা হয়েছে বলে জানিয়েছে র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‍্যাব)।

খুনের ঘটনায় শেরপুরের নালিতাবাড়ি এলাকা থেকে সঞ্জীব চিরান (২১), রাজু সাংমা ওরফে রাসেল, প্রবীণ সাংমা (১৯) ও শুভ চিসিম ওরফে শান্তকে (১৮) গ্রেপ্তার করে র‍্যাব -১।

গ্রেপ্তারদের স্বীকারোক্তির ভিত্তিতে এসব তথ্য জানান র‍্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার মুফতি মাহমুদ খান।

বৃহস্পতিবার (২২ মার্চ) দুপুরে কারওয়ান বাজার এলাকায় র‍্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান।

মুফতি মাহমুদ খান বলেন, গত এক মাস আগে সঞ্জীব তার বন্ধু শান্ত ও প্রবীণের সঙ্গে খালা সুজাতার বাসায় চুরির পরিকল্পনা করেন। সঞ্জীব ধারণা করে, খালার পরিবারের সবাই চাকরি করেন তাই তাদের বাসায় পাঁচ থেকে ছয় লাখ টাকা থাকতে পারে। ইস্টার সানডে উপলক্ষে আনন্দ ফুর্তি করার জন্য এ চুরির পরিকল্পনা করেন তারা।

প্রায় এক বছর আগে সুজাতার স্বামী আশিষ সঞ্জীবকে ঢাকায় সিকিউরিটি গার্ডের চাকরি দেয়। বেতন বেশি দাবি করায় এক মাস পরে চাকরি ছেড়ে শেরপুরে চলে যান আশিষ। তখন থেকেই খালা সুজাতার বাসায় আসা-যাওয়া ছিল সঞ্জীবের।

চুরির পরিকল্পনা অনুযায়ী গত ১৯ তারিখ বন্ধু শান্ত ও প্রবীণকে নিয়ে ঢাকায় আসে সঞ্জীব। ঢাকার কুড়িলে একটি আবাসিক হোটেলে কর্মরত তাদের বন্ধু রাজুকে ঢাকায় আসার বিষয়টি জানায় এবং রাজুর আরেক বন্ধুর বাসায় সেদিন রাত্রিযাপন করেন।

মুফতি মাহমুদ খান আরও বলেন, পরদিন ২০ মার্চ সকালে সঞ্জীব, শান্ত ও প্রবীণ রাজুর কর্মস্থলে যায় এবং রাজুকে তাদের পরিকল্পনার কথা জানায়। রাজুর কাছ থেকে একটি ছুরি নেয় সঞ্জীব। তারপর তারা চারজন মিলে সকাল নয়টায় বেসেতের বাসার নিচে যায়। সেসময় বাসায় অনেকে থাকায় তারা সারাদিন বাইরে ঘোরাঘুরি করেন। পরে আনুমানিক বিকেল ৩টার দিকে তারা বেসেতের বাসায় প্রবেশ করেন। তখন বেসেত ও তার মেয়ে মায়াবী বাসায় ছিল। আত্মীয় হিসেবে বেসেত তাদেরকে চা-বিস্কিট খেতে দেয়। পরে খালা বেসেত সঞ্জীবকে দুইশ’ টাকা দিয়ে দেশীয় মদ আনতে বলেন।

সঞ্জীব মদ নিয়ে আসলে সবাই মিলে মদ পান করে এবং পরিকল্পনা অনুযায়ী সুজাতাকে বেশি মদ পান করিয়ে নেশাগ্রস্ত করে ফেলেন। এ সময় সুজাতার মেয়ে মায়াবী তার কর্মস্থলে চলে যায়। তখন তারা চারজন চুরি করতে উদ্ধত হলে বাসায় সুজাতার মা বেসেত চলে আসেন। তাদের পরিকল্পনা বাধাগ্রস্ত হতে পারে ভেবে প্রথমে বেসেতকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেন তারা। তারপর ওই বাসা থেকে আরেকটি ছুরি ও সঙ্গে আনা ছুরি দিয়ে মদ্যপ সুজাতাকে কুপিয়ে খুন করেন শান্ত ও সঞ্জীব। তখন ঘরে অনেক খোঁজাখুঁজি করেও টাকা না পেয়ে বাসা থেকে বের হয়ে যায়।

বাসা থেকে বের হয়ে আব্দুল্লাহপুর এসে নালিতাবাড়ির টিকিট কাটে এবং তাদের ব্যবহৃত ছুরি কাউন্টারের পেছনে ফেলে যায়। তারা গ্রেপ্তার এড়াতে সীমান্ত এলাকা দিয়ে ভারতে পালিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করেছিল বলেও জানান র‍্যাবের এই কর্মকর্তা।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত