সিলেটটুডে ডেস্ক

২৮ এপ্রিল, ২০২১ ১৩:৫৬

গণচিতায় জ্বলছে দিল্লি

ভারতের করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) মহামারি ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। দেশটিতে গত ২৪ ঘণ্টায় করোনায় মৃতের সংখ্যা তিন হাজার ছাড়িয়েছে। এতে করে মৃতদেহ সৎকার করতে গিয়ে চাপে পড়েছে শ্মশানগুলো। এমনকি শ্মশানের কর্মীরা দিনরাত কাজ করেও পরিস্থিতি সামল দিতে পারছেন না। ফলে দেশটির রাজধানী দিল্লিতে অস্থায়ীভাবে অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া সম্পাদনের জন্য গণচিতার ব্যবস্থা করেছেন কর্তৃপক্ষ।

আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম বিবিসি জানায়, বাড়তি চাহিদা সামল দিতে শহরের বিভিন্ন পার্ক ও ফাঁকা স্থানে মৃতদেহ সৎকার করা হচ্ছে। আর চাহিদা বেড়ে যাওয়ার কারণে মৃতদের পরিবারের সদস্যদের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া সম্পাদনের জন্য লাশ নিয়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থাকতে হচ্ছে।

করোনার দ্বিতীয় আঘাতে সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় ভারতে মৃত্যুর সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। গত সোমবার শুধুমাত্র দিল্লিতেই ৩৮০ জনের মৃত্যু হয়েছে। এতে করেই শ্মশানের জন্য অতিরিক্ত স্থানের প্রয়োজন হয়।

দিল্লির সরাই কালা খান শ্মশানে মৃতদেহ সৎকারের জন্য অতিরিক্ত ২৭ চিতা তৈরি করা হয়েছে। এছাড়াও পার্শ্ববর্তী একটি পার্কে আরও ১২টি অস্থায়ী চিতা বানানো হয়। একইসঙ্গে কর্মকর্তারা যমুনা নদীর তীরেও অস্থায়ী চিতা তৈরি করার জন্য স্থান খুঁজছেন।

শ্মশানের এক কর্মী ভারতের শীর্ষ সংবাদমাধ্যম দ্য হিন্দু’কে জানান, শ্মশানে একসঙ্গে ২২টি মৃতদেহ সৎকারের সক্ষমতা রয়েছে। তারা ভোর থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত একটানা কাজ করে যাচ্ছেন।

ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, দিল্লি প্রশাসন পার্কগুলোর গাছ কেটে অত্যেষ্টিক্রিয়ায় ব্যবহারের জন্য এক প্রকার অনুমতি দিয়েছে। একইসঙ্গে অত্যেষ্টিক্রিয়ার জন্য কাঠের টুকরা করা ও অন্য আচার-অনুষ্ঠানে শ্মশানের কর্মীদের সহায়তার জন্যও মৃতের পরিবারের সদস্যদের অনুরোধ করা হয়েছে।

পূর্ব দিল্লির গাজীপুর শ্মশান একটি গাড়ি পার্কে আরও ২০টি অস্থায়ী চিতা যুক্ত করা হয়েছে। এক কর্মকর্তা ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস’কে জানান, শ্মশানে একটি মৃতদেহ সৎকারের জন্য তিন থেকে চার ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হয়েছে। কারণে একটি দেহ জ্বলতে ছয় ঘণ্টা সময় লাগে।

দিল্লির জন্য শ্মশানগুলোর অবস্থাও এমন গুরুতর। সেন্টার ফর হলিস্টিক ডেভেলপমেন্ট নামের একটি সংস্থা রোগীদের অক্সিজেনসহ প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সরঞ্জাম ও খাবার সরবরাহ করে থাকে। এছাড়াও অত্যেষ্টিক্রিয়ার কাছে সহায়তা প্রদান করে থাকে। সংস্থাটির পরিচালক সুনীল কুমার আলেদিয়া বিবিসিকে জানিয়েছেন, অনেক স্থানে চিতা সম্প্রসারণের জায়গা আর নেই।

দিল্লিতে অত্যেষ্টিক্রিয়া সম্পাদনের এ চাহিদা আরও বাড়তে পারে। কারণ দুই কোটি লোকের অবাসস্থল দিল্লির হাসপাতলগুলো করোনা রোগী দিয়ে ভর্তি এবং অক্সিজেনও দুর্লভ বস্তুতে পরিণত হয়েছে।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত