আন্তর্জাতিক ডেস্ক

১৬ মে, ২০২১ ১৩:৩৭

বিশ্বে দৈনিক সংক্রমণ ও মৃত্যু নিম্নমুখী

করোনাভাইরাস

বিশ্বে গত ২৪ ঘণ্টায় প্রাণঘাতী রোগ করোনায় দৈনিক আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা নিম্নমুখী। শনিবার (১৬ মে) বিশ্বজুড়ে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ৬ লাখ ২৭ হাজার ১৮২ জন নতুন রোগী, আর এ রোগে মারা গেছেন ১১ হাজার ৮৮২ জন।

আগের দিন শুক্রবার বিশ্বের বিভিন্ন দেশে করোনায় আক্রান্ত নতুন রোগীর সংখ্যা ছিল ৬ লাখ ৯০ হাজার ৮৩২ জন। এ রোগে ওই দিন মারা গিয়েছিলেন ১২ হাজার ৫১১ জন।

করোনা মহামারি শুরুর পর থেকে এ রোগে আক্রান্ত, মৃত ও সুস্থ হয়ে ওঠা রোগীদের হালনাগাদ সংখ্যা প্রদানকারী ওয়েবসাইট করোনাভাইরাস ওয়ার্ল্ডোমিটার এ তথ্য জানিয়েছে।

প্রায় দু’মাস ধরে করোনায় দৈনিক আক্রান্ত ও মৃত্যুর হিসেবে বিশ্বের দেশগুলোর মধ্যে শীর্ষে আছে ভারত। শনিবারও এ রোগে সবেচেয়ে বেশি আক্রান্ত ও মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে সে দেশটিতে।

এই দিন ভারতে নতুন রোগীর তালিকায় নাম লিখিয়েছেন ৩ লাখ ১০ হাজার ৮২২ জন, মারা গেছেন ৪ হাজার ৯০ জন। দেশটিতে এ পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন মোট ২ কোটি ৪৬ লাখ ৮৩ হাজার ৬৫ জন, মারা গেছেন ২ লাখ ৭০ হাজার ৩১৯ জন।

দৈনিক আক্রান্ত ও মৃত্যুর তালিকায় ভারতের পরেই অবস্থান করছে ব্রাজিল। দক্ষিণ আমেরিকার বৃহত্তম এই দেশটিতে শনিবার করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ৬৯ হাজার ৩০০ জন, মারা গেছেন ২ হাজার ৬৫ জন। দেশটিতে এ পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন মোট ১ কোটি ৫৫ লাখ ৯০ হাজার ৬১৩ জন, মারা গেছেন ৪ লাখ ৩৪ হাজার ৮৫২ জন।

প্রায় দেড় বছর আগে মহামারি শুরুর পর থেকে এখন পর্যন্ত বিশ্বের দেশগুলোর মধ্যে করোনায় আক্রান্ত ও মৃত্যুর হিসেবে শীর্ষে আছে যুক্তরাষ্ট্র। তবে সম্প্রতি দেশটিতে ক্রমশ কমে আসছে করোনায় দৈনিক আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা।

২৪ ঘণ্টায় দৈনিক আক্রান্ত ও মৃতের তালিকায় বর্তমানে তৃতীয় অবস্থানে থাকা যুক্তরাষ্ট্রে শনিবার করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ২৫ হাজার ৬০৯ জন, মারা গেছেন ৪৯৯ জন। যুক্তরাষ্ট্রে এখন পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন মোট ৩ কোটি ৩৬ লাখ ৯৫ হাজার ৮৮৩ জন, মারা গেছেন মোট ৫ লাখ ৯৯ হাজার ৮৬৩ জন।

একদিনে করোনায় আক্রান্ত ও মৃত্যুর তালিকায় বর্তমানে চতুর্থ শীর্ষস্থানীয় দেশটির নাম আর্জেন্টিনা। দক্ষিণ আমেরিকার দ্বিতীয় বৃহত্তম এই দেশটিতে শনিবার করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ২১ হাজার ৪৬৯ জন, মারা গেছেন ৪০০ জন। মহামারি শুরুর পর থেকে এ পর্যন্ত আর্জেন্টিনায় করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন মোট ৩২ লাখ ৯০ হাজার ৯৩৫ জন, মারা গেছেন ৭০ হাজার ২৫৩ জন।

করোনাভাইরাস ওয়ার্ল্ডোমিটারের তথ্য অনুযায়ী, গত বছর মহামারি শুরুর পর থেকে এ পর্যন্ত বিশ্বে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন মোট ১৬ কোটি ৩১ লাখ ৬২ হাজার ৯৪ জন, মারা গেছেন মোট ৩৩ লাখ ৮৩ হাজার ৫ জন।

অবশ্য প্রাণঘাতী ভাইরাসটির সঙ্গে লড়াই করে সুস্থ হয়ে ওঠার হারও কম নয়। করোনায় আক্রান্ত হওয়ার পর এ পর্যন্ত বিশ্বজুড়ে সুস্থ হয়ে উঠেছেন ১৪ কোটি ১৪ লাখ ৫৯  হাজার ৪২৪ জন।

এছাড়া বিশ্বে সক্রিয় করোনা রোগীর সংখ্যা বর্তমানে ১ কোটি ৮৩ লাখ ১৯ হাজার ৬৬৫ জন। এদের মধ্যে মৃদু উপসর্গ বহন করছেন ১ কোটি ৮২ লাখ ১৬ হাজার ৭০৬ জন. গুরুতর অবস্থায় আছেন ১ লাখ ২ হাজার ৯৫৯ জন।

২০১৯ সালের ডিসেম্বরে চীনের উহান শহরে প্রথম শনাক্ত হয় প্রাণঘাতী সার্স-কোভ-২ ভাইরাস, যা বিশ্বে সাধারণভাবে পরিচিতি পায় করোনাভাইরাস নামে। শনাক্ত হওয়ার তিন মাসের মধ্যে বিশ্বজুড়ে মহামারি আকারে ছড়িয়ে পড়ে এই ভাইরাসটি।

যুক্তরাষ্ট্রসহ বিভিন্ন দেশ যদিও অভিযোগ করে আসছে, চীনের গবেষণাগারে এই ভাইরাসটি কৃত্রিমভাবে প্রস্তুত করা হয়েছে, তবে চীন বরাবরই এই অভিযোগ অস্বীকার করে বলছে, প্রাকৃতিকভাবেই আবির্ভাব ঘটেছে সার্স-কোভ-২ ভাইরাসটির।

গত বছর ফেব্রুয়ারি মাসে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা করোনাকে মহামারি হিসেবে ঘোষণা করে। ২০২০ সালের প্রথম সাত-আট মাসে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ব্যাপক আক্রান্ত ও মৃত্যুর পর ওই বছরের শেষ দিকে কিছুটা কমে এসেছিল করোনা সংক্রমণ। এর মধ্যে বিভিন্ন কোম্পানির করোনা প্রতিরোধী টিকা বাজারে এসে যাওয়ায় গণটিকাদান কর্মসূচিও শুরু করেছে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ।

তবে গত মার্চ থেকে বিভিন্ন দেশে, বিশেষ করে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোতে ফের ব্যাপকভাবে বাড়তে শুরু করেছে করোনায় আক্রান্ত ও মৃত্যুর হার। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বর্তমানে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ পার করছে দক্ষিণ এশিয়া।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত