সোশ্যাল মিডিয়া ডেস্ক

৩১ অক্টোবর, ২০১৯ ১৩:১০

নিয়োগ-পদোন্নতি ঠেকাতে প্রথমে বলে বিএনপি, পরে বলে সে জামায়াত

সরকারি পর্যায়ে কোনো কর্মকর্তার নিয়োগ ও পদোন্নতি ঠেকাতে রাজনৈতিক পরিচয় অনেক সময় সামনে আনা হয় বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গত ২৮ অক্টোবর মন্ত্রিসভার নিয়মিত বৈঠকে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলমের বিদায় উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এমন মন্তব্য করেছেন।

এনিয়ে ফেসবুকে এক স্ট্যাটাস শেয়ার করেছে বাংলাদেশ অ্যাডমিনিস্টেটিভ সার্ভিস। ওই ফেসবুক স্ট্যাটাসে বলা হয়-

সিভিল সার্ভিসের সর্বোচ্চ কর্মকর্তা সদ্য অবসরপ্রাপ্ত মন্ত্রিপরিষদ সচিব জনাব শফিউল আলমকে মেধাবী, সৎ ও দক্ষ সফল কর্মকর্তা হিসেবে অভিহিত করে প্রশংসা করলেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রশাসনে দাড়ি রাখেন, নামাজ পড়েন এমন কর্মকর্তাকে বিএনপি-জামায়াত অনুসারী কর্মকর্তা হিসেবে চিহ্নিত না করতে সতর্ক করে দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, এক শ্রেণির কর্মকর্তা নিজেদের স্বার্থে এসব প্রচারণা চালান। যা কোনভাবে কাম্যই নয়। নামাজ পড়া আর দাড়ি রাখা লোক আমি পছন্দ করি।

সোমবার (২৮ অক্টোবর) মন্ত্রিসভার নিয়মিত বৈঠকে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলমের বিদায় উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেছেন বলে বৈঠক সূত্রে তার বিদায় উপলক্ষে মন্ত্রিসভার বৈঠকে একটি আবেগঘন পরিবেশের সৃষ্টি হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে তার তেজগাঁও কার্যালয়ে মন্ত্রিসভার বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন সিনিয়র মন্ত্রী এসব কথা বলেন।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব শফিউল আলমকে বিদায় জানাতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বর্তমান মন্ত্রিপরিষদ সচিবের নিয়োগের সময়ে একদল কর্মকর্তা এই নিয়োগের বিরোধিতা করেছিলেন। তারা তাকে (শফিউল আলম) জামায়াত অনুসারী কর্মকর্তা হিসেবে চিহ্নিত করে আমার কাছে অভিযোগ করেছিলেন। শফিউল আলমকে জামায়াত প্রমাণ করতে বলা হল, তখন ওই কর্মকর্তা বললেন, তিনি নিয়মিত নামাজ পড়েন, তার দাড়ি রয়েছে।

পরে প্রধানমন্ত্রী তার ব্যাপারে খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন, শফিউল আলমের পরিবার মুক্তিযুদ্ধে সক্রিয় অংশগ্রহণকারী একটি পরিবার। স্বাধীনতার সময়ে তার আপন বড় ভাই চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগের নেতা ছিলেন এবং মহান মুক্তিযুদ্ধে তিনি শহীদ হন। একজন শহীদের ভাইকে আমার সামনে জামায়াত হিসেবে উপস্থাপন করা হল।

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বলেন, শফিউল আলম একজন মেধাবী, সৎ ও দক্ষ কর্মকর্তা। তার দায়িত্ব পালনের সময়ে মন্ত্রিসভার বৈঠকসহ গুরুত্বপূর্ণ মিটিংয়ের সার-সংক্ষেপ দিনের টা দিনেই পেয়েছি। একদিনে কাজ তিনি আরেক দিনের জন্য কখনও দিন ফেলে রাখেননি। তা ছাড়া দায়িত্ব পালনকালে তিনি সর্বোচ্চ সততা ও নিষ্ঠার উদাহরণ রেখে গেছেন।

তিনি বলেন, বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের বার্ষিক কর্মসম্পাদন চুক্তি স্বাক্ষর (এপিএ) তারই ব্রেন। এ রকম ভালো ভালো কার্যক্রমের উদ্যোগ তিনি নিয়েছেন।

তিনি আরও বলেন, কোন কর্মকর্তার নিয়োগ বা পদোন্নতি ঠেকাতে প্রথমেই বলে ওই কর্মকর্তা বিএনপি। আরও পরে বলে সে তো জামায়াত।

একজন কর্মকর্তার রাজনৈতিক বিশ্বাস যেকোনো দলের প্রতি থাকতেই পারে, তা দোষের নয়। সবাই একই আদর্শে বিশ্বাসী হবেন, এটা তো কাম্য হতে পারে না।

প্রশাসনের সকল কর্মকর্তাকে সতর্ক করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, অমুক কর্মকর্তা বিএনপি, অমুকে জামায়াত বলে ফের কাউকে আখ্যায়িত করবেন না।

  • লেখাটি বাংলাদেশ অ্যাডমিনিস্টেটিভ সার্ভিসের ফেসবুক পেজ থেকে সংগৃহীত।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত