আন্তর্জাতিক ডেস্ক

১৬ মে, ২০১৫ ১৮:১০

মিশরের সাবেক প্রেসিডেন্ট মুরসির মৃত্যুদণ্ড

কারাগার ভেঙে বন্দি ছিনতাইয়ের মামলায় মিশরের সাবেক প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মুরসিকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন দেশটির একটি আদালত। একই দণ্ড দেওয়া হয়েছে আরও ১০৫ জনকে।

শনিবার (১৬ মে) রাজধানী কায়রোর অপরাধ আদালত (ক্রিমিনাল কোর্ট) এ আদেশ দেন। 

স্থানীয় আইন অনুযায়ী, এখন মতামত চাইতে এ রায় দেশের সর্বোচ্চ ধর্মীয় কর্তৃত্বধারী গ্র্যান্ড মুফতির কাছে পাঠানো হবে। তিনি রায়ের বিষয়ে মতামতের পাশাপাশি রাষ্ট্রের করণীয় সম্পর্কে পরামর্শ দেবেন। তার পরামর্শের পর আগামী ২ জুন মামলার চূড়ান্ত দণ্ড ঘোষণা করা হবে।

স্থানীয় সংবাদমাধ্যম জানায়, সর্বোচ্চ কর্তৃত্বধারী হলেও গ্র্যান্ড মুফতির মতামত মানতে বাধ্য নন আদালত। তবে, শনিবার ঘোষিত এই রায়ের পাশাপাশি আদালতের চূড়ান্ত রায়ের বিরুদ্ধেও আপিলের সুযোগ পাবেন দণ্ডিত মুরসিসহ তার সহযোগীরা। 

বলা হচ্ছে, আদালত যদি চূড়ান্ত রায়েও মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখেন কিংবা মুরসি আপিল করে হেরে যান, তবে মিশরের ইতিহাসে তিনিই প্রথম প্রেসিডেন্ট হিসেবে ফাঁসিতে ঝুলবেন।

আইনজীবীদের বরাত দিয়ে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম জানায়, কারাগার ভাঙার মামলা ছাড়াও শনিবার গুপ্তচরবৃত্তির একটি মামলারও রায় ঘোষণা করেন একই আদালত। ওই রায়ে মুরসির দল নিষিদ্ধঘোষিত মুসলিম ব্রাদারহুডের নেতা মোহাম্মদ এল-বালত্যাগী ও খায়রাত এল-শাতারসহ ১৬ জনকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়। এই রায়ও পাঠানো হবে গ্র্যান্ড মুফতির কাছে। তার মতামতের পর ২ জুন দেওয়া হবে এ মামলার চূড়ান্ত রায়ও।

ফিলিস্তিনের হামাস, লেবাননের হেজবুল্লাহ ও ইরানের রেভ্যুলুশনারি গার্ডসহ বিদেশি বিভিন্ন শক্তির কাছে রাষ্ট্রের গোপন তথ্য পাচারের দায়ে মুরসিসহ ৩৫ জনকে অভিযুক্ত করা হয়। তবে, এই মামলায় মৃত্যুদণ্ড থেকে নিস্তার পেয়ে যান মুরসিসহ ১৯ জন।

সংবাদমাধ্যম আরও জানায়, ২০১২ সালে সরকারবিরোধী বিক্ষোভকারীদের গ্রেফতার ও নির্যাতনের নির্দেশ দিয়ে সহিংসতায় উস্কানি দেওয়ার অভিযোগে দায়ের করা একটি মামলায় দোষী সাব্যস্ত করে গত এপ্রিলেই মুরসিকে ২০ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। ওই মাসেই ব্রাদারহুডের আধ্যাত্মিক নেতা মোহাম্মদ বদিইসহ বেশ কয়েকজন শীর্ষ নেতাকে বিভিন্ন হত্যা মামলায় মৃত্যুদণ্ড দেন আদালত। অবশ্য, ওই রায়ের বিরুদ্ধে তাদের আপিলের কার্যক্রম চলছে।

আরব বসন্তের ঢেউয়ে ২০১১ সালের এপ্রিলে স্বৈরশাসক হোসনি মোবারকের পতন হলে পরের বছরের নির্বাচনে জয় লাভ করে প্রথম গণতান্ত্রিক প্রেসিডেন্ট হিসেবে ক্ষমতা নেন মুরসি। কিন্তু তার রাষ্ট্র পরিচালনায় অব্যবস্থাপনার অভিযোগ তুলে ধর্মনিরপেক্ষ ও অন্যান্য বিরোধীরা বিক্ষোভ শুরু করলে ব্যাপক সহিংসতা শুরু হয়। এর প্রেক্ষিতে ৩ জুলাই মুরসিকে ক্ষমতাচ্যুত করে সেনাবাহিনী। তাকে ক্ষমতাচ্যুত করে বন্দি করা সেনাপ্রধান আবদেল ফাত্তাহ এল সিসিই এখন মিশরের প্রেসিডেন্ট।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত