আজ শনিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২৪

Advertise

প্রসঙ্গ তিন সিটি করপোরেশান নির্বাচন : টক-ঝাল-মিষ্টি, পর্ব-২

রেজা ঘটক  

ঢাকা সিটি করপোরেশান দক্ষিণের নির্বাচন নিয়ে কথা বলার আগে কিছু পরিসংখ্যানে একটু চোখ বুলিয়ে নেওয়া যাক।

এক নজর ঢাকা সিটি দক্ষিণ :
মোট ওয়ার্ড সংখ্যা ৫৬ টি। মেয়র প্রার্থী ২০ জন। কাউন্সিলর সাধারণ আসনে ৫৪৮ জন। কাউন্সিলর সংরক্ষিত আসনে ১০৫ জন। সাধারণ ওয়ার্ডের সংখ্যা ৫৭টি। সংরক্ষিত ওয়ার্ডের সংখ্যা ১৯টি। মোট ভোট কেন্দ্রের সংখ্যা ৮৮৯টি। মোট ভোট কক্ষের সংখ্যা ৪৭৪৬টি। অস্থায়ী মোট কেন্দ্রের সংখ্যা ১টি। অস্থায়ী ভোট কক্ষের সংখ্যা ৬১২টি। মোট ভোটার সংখ্যা ১৮,৭০ ৭৫৩ জন। পুরুষ ভোটার সংখ্যা ১০,৯,২৮৬ জন। নারী ভোটার সংখ্যা ৮,৬১,৪৬৭ জন।



ঢাকা দক্ষিণের মেয়র প্রার্থীরা হলেন: মির্জা আব্বাস, ড. এসএম আসাদুজ্জামান রিপন, মোহাম্মদ সাঈদ খোকন, হাজী সাইফুদ্দিন আহমেদ মিলন, আক্তারুজ্জামান আয়াতুল্লাহ, আব্দুল খালেক, জাহিদুর রহমান, আবু নাসের হোসাইন, বাহারানে সুলতান বাহার, এএসএম আকরাম, শাহিন খান, দিলীপ ভদ্র, শহিদুল ইসলাম, শফিউল্লাহ চৌধুরী, আব্দুর রহমান, বজলুর রশীদ ফিরোজ, মশিউর রহমান, গোলাম মাওলা রনি, রেজাউল করিম চৌধুরী এবং অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ আইয়্যুব হোসেন।



নির্বাচনী ফলাফল:
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে মেয়র পদে নির্বাচিত হন আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী মোহাম্মদ সাঈদ খোকন। ৮৮৯টির মধ্যে ৮৮৬ কেন্দ্রের ঘোষিত ফলাফলে ইলিশ প্রতীকের মোহাম্মদ সাঈদ খোকন পেয়েছেন ৫ লাখ ৩৫ হাজার ২৯৬ ভোট। তার প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী মির্জা আব্বাস মগ প্রতীকে পেয়েছেন ২ লাখ ৯৪ হাজার ২৯১ ভোট।



গোলযোগের কারণে তিনটি কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ স্থগিত হলেও ওই সব কেন্দ্রের ভোটের যোগফল দুই প্রার্থীর ব্যবধানের চেয়ে কম হওয়ায় রিটার্নিং কর্মকর্তা মিহির সারওয়ার মোর্শেদ আওয়ামী লীগ সমর্থিত মোহাম্মদ সাঈদ খোকনকে বিজয়ী ঘোষণা করেন।



ঢাকা দক্ষিণের অন্য মেয়র প্রার্থীদের মধ্যে আব্দুর রহমান ফ্লাস্ক প্রতীকে ১৪,৭৮৪ ভোট, সোফা প্রতীকে জাতীয় পার্টির সাইফুদ্দিন মিলন ৪৫১৯ ভোট, চরকা প্রতীকে আবু নাছের মোহাম্মদ মাসুদ হোসাইন ২,১৯৭ ভোট, টেবিল ঘড়ি প্রতীকে রেজাউল করিম চৌধুরী ২,১৭৩ ভোট, জাহাজ প্রতীকে শাহীন খান ২,০৭৪ ভোট, আংটি প্রতীকে গোলাম মওলা রনি ১,৮৮৭ ভোট, বাস প্রতীকে শহীদুল ইসলাম ১,২৩৯ ভোট, টেবিল প্রতীকে সিপিবি-বাসদের বজলুর রশীদ ফিরোজ ১,০২৯ ভোট, ল্যাপটপ প্রতীকে জাহিদুর রহমান ৯৮৮ ভোট, কমলা লেবু প্রতীকে বিএনপি নেতা আসাদুজ্জামান রিপন ৯২৮ ভোট, ক্রিকেট ব্যাট প্রতীকে এএসএম আকরাম ৬৮২ ভোট, হাতি প্রতীকে দিলীপ ভদ্র ৬৬৯ ভোট, কেক প্রতীকে আব্দুল খালেক ৫৫০ ভোট, ময়ূর প্রতীকে শফিউল্লাহ চৌধুরী ৫১২ ভোট, চিতা বাঘ প্রতীকে মশিউর রহমান ৫০৮, লাউ প্রতীকে মো. আকতারুজ্জামান আয়াতুল্লাহ ৩৬২ ভোট, ঈগল প্রতীকে আইয়্যুব হোসেন ৩৫৪ ভোট এবং শার্ট প্রতীকে বাহরানে সুলতান বাহার ৩১৩ ভোট পেয়েছেন।



সাঈদ খোকন দুই লাখ একচল্লিশ হাজার পাঁচ (২,৪১,০০৫) ভোটের ব্যবধানে মির্জা আব্বাসকে পরাজিত করে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশানে মেয়র নির্বাচিত হয়েছেন। তিনটি সিটি নির্বাচনের মধ্যে তিনি সবচেয়ে বড় ব্যবধানে নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বীকে হারিয়েছেন।



প্রশ্ন: ৮৮৯টি ভোটকেন্দ্রের ৪৭৪৬টি ভোটকক্ষে একজন করে পোলিং এজেন্ট দেবার সামর্থ কয়জন মেয়র প্রার্থীর ছিল?
মন্তব্য: ঢাকা সিটি দক্ষিণের প্রধান দুই প্রতিদ্বন্দ্বী সাঈদ খোকন ও মির্জা আব্বাস ছাড়া অন্য কোনো মেয়র প্রার্থীর সেই সামর্থ্য ছিল না। যিনি তৃতীয় হয়েছেন তার প্রাপ্ত ভোটের ব্যবধান প্রধান দুই প্রতিদ্বন্দ্বীর চেয়ে খুবই নগন্য।



ঢাকা সিটি দক্ষিণে ২০ জন মেয়র প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বীতা করলেও মূল লড়াই হয়েছে আওয়ামীলীগ সমর্থিত প্রার্থী ও বিএনপি সমর্থিত প্রার্থীর মধ্যে। অন্যান্য ১৮ জন মেয়র প্রার্থী এই নির্বাচনে ন্যূনতম ভোট পেতে ব্যর্থ হয়েছেন। এমনকি ৮৮৯টি ভোট কেন্দ্রের ৪৭৪৬টি ভোট কক্ষে পোলিং এজেন্ট দেবার মত সক্ষমতাও তাদের ছিল না।



ঢাকা সিটি দক্ষিণে তুলনামূলক বেশি ভোট কাস্ট হয়েছে। প্রার্থী বাছাইয়ে আওয়ামীলীগ সমর্থিত প্রার্থী সাঈদ খোকন তুলনামূলকভাবে বিএনপি সমর্থিত মির্জা আব্বাসের চেয়ে এগিয়ে ছিলেন। সাঈদ খোকন ঢাকার প্রাক্তন মেয়র মোহাম্মদ হানিফের সুযোগ্য সন্তান। এমনকি ঢাকা সিটি করপোরেশানকে দুইভাগে ভাগ না করলেও সাঈদ খোকন হতেন আওয়ামীলীগ সমর্থিত মেয়র প্রার্থী। সেই তুলনায় বিএনপি প্রাক্তন মেয়র সাদেক হোসেন খোকাকে বাদ দিয়ে মির্জা আব্বাসকে মেয়র প্রার্থী করায় খোকার বিরাট সমর্থকগোষ্ঠীর সমর্থন মির্জা আব্বাস পেতে ব্যর্থ হয়েছেন। সাদেক হোসেন খোকা যুক্তরাষ্ট্রে পলাতক থাকলেও ঢাকা সিটি দক্ষিণের নির্বাচনে তিনি দূর থেকেও মির্জা আব্বাসের জন্য এক নাম্বার শত্রু হিসেবে ভূমিকা পালন করতে পেরেছেন।



আওয়ামীলীগের বিদ্রোহী প্রার্থী ছিলেন হাজী সেলিম যিনি নির্বাচনের আগেই সাঈদ খোকনকে সমর্থন করে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়িয়েছিলেন, যা ভোটের রাজনীতিতে সাঈদ খোকনের জন্য আশির্বাদ হিসেবে কাজ করেছে। অন্যদিকে সাদেক হোসেন খোকা মাঠে অনুপস্থিত থাকলেও মির্জা আব্বাসের জন্য তার ভূমিকা অভিশাপ হিসেবে কাজ করেছে।



মির্জা আব্বাস পলাতক থেকে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করেছেন। যা সাধারণ ভোটারদের কাছে কোনো ধরনের অনুকম্পা বা বাড়তি আকর্ষণ পেতে ব্যর্থ হয়েছে। বরং মির্জা আব্বাস যদি পলাতক না থেকে প্রকাশ্যে বের হয়ে এসে ভোটারদের বাড়ি বাড়ি নির্বাচনী ক্যাম্পেইন করতেন, সেক্ষেত্রে তা ভোটারদের বেশি আকর্ষণ করতে পারতো। আর যদি তখন মির্জা আব্বাসকে পুলিশ গ্রেফতারও করতো তাহলে বরং সাধারণ মানুষের এক ধরনের সমর্থন তিনি অটোমেটিক পেলেও পেতে পারতেন।



তাছাড়া বিগত ৫ জানুয়ারি থেকে বিএনপি যেভাবে মাঠে না থেকে গুহা থেকে হরতাল অবরোধ জ্বালাও পোড়াও পেট্রোলবোমার যে নেগেটিভ রাজনীতি করে জনসাধারণের বিপক্ষে দাঁড়িয়ে সন্ত্রাসী কার্যক্রম করেছে, সেই কার্যক্রমের মূল হোতা বা পরিকল্পকদের একজন ছিলেন মির্জা আব্বাস। সাধারণ নাগরিক ভোট দেবার সময় তেমন একজন বিধ্বংসী নেতাকে ভোটপ্রদানে বর্জন করবে এটাই বরং স্বাভাবিক চিত্র। কেবল বিএনপি'র অন্ধ সমর্থক ছাড়া কোনো সাধারণ ভোটারের সমর্থন এমন নেতার পাবার প্রশ্নই ওঠে না। বরং এখনো যে এমন একজন দুশমন টাইপের নেতা দুই লাখের উপরে ভোট পেয়েছেন, এই খবরটি আঁতকে ওঠার মতো।



মানুষ হত্যার রাজনীতি করে যে নেতার প্রকাশ্যে জনসাধারণের সামনে আসার মত স্বাভাবিক সাহস নেই, তাকে যে জনসাধারণ প্রত্যাখ্যান করবে সেটাই তো স্বাভাবিক। বরং সে তুলনায় মির্জা আব্বাসের স্ত্রী আফরোজা আব্বাস হয়তো জনসাধারণের অনেক কাছাকাছি যাবার দুঃসাহস দেখিয়েছেন। বিএনপি বরং আফরোজা আব্বাসকে প্রার্থী করলে ঢাকা সিটি দক্ষিণে হয়তো আরো প্রতিদ্বন্দ্বীতাপূর্ণ নির্বাচন হতো। প্রার্থী বাছাইয়ে বিএনপি কোনো দক্ষতা দেখাতে পারেনি।



বিএনপি নির্বাচনে ভোটের দিন অর্ধেক সময় হাতে রেখে অত্যন্ত পরিকল্পিতভাবেই নির্বাচন বর্জন করেছে। একজন পলাতক আসামীকে বাঁচানোর জন্য এটা বিএনপির সেই পুরনো কৌশল। তাই মওদুদের নির্বাচন বর্জনের সংবাদ সম্মেলনে আফরোজা আব্বাসের উপস্থিতি সেই পূর্ব পরিকল্পনাকেই প্রমাণ করে।



মির্জা আব্বাসকে বিএনপি একবার সিলেকশানে বিনা ভোটে ঢাকার মেয়র বানিয়েছিল। তখন মির্জা আব্বাস ঢাকাবাসীর জন্য কোনো অবদান রাখতে ব্যর্থ হয়েছেন। বরং দুর্নীতি ও দখল বাণিজ্যে তিনি আগের রেকর্ড ভঙ্গ করেছেন। যা সাধারণ ভোটারদের দৃষ্টি এড়ায়নি।



মেয়র প্রার্থী হিসেবে মির্জা আব্বাসকে আওয়ামীলীগকে মোকাবেলা করার আগে নিজ দলের সাদেক হোসেন খোকাকে মোকাবেলা করতেই নির্বাচনের সময়ক্ষণ ফুরিয়ে গেছে। গ্রেফতারি পরোয়ানা এড়িয়ে একজন পলাতক আসামী যে মেয়র হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করতে পেরেছে, তার সকল ক্রেডিট তার স্ত্রী আফরোজা আব্বাসের।



মির্জা আব্বাসের বিরুদ্ধে বর্তমানে ফৌজদারী মামলা রয়েছে ৩৭টি, আর অতীতে ছিল ২৪টি। নির্বাচনী হলফনামায় পেশা হিসেবে তিনি উল্লেখ করেছেন ব্যবসা, মির্জা এন্টারপ্রাইজ। শিক্ষাগত যোগ্যতা স্নাতক পাস।



বাৎসরিক আয় দেখিয়েছেন, বাড়ি ভাড়া, অ্যাপার্টমেন্ট ও দোকান অন্যান্য ভাড়া বাবদ ১ কোটি ৫ লাখ ৮১,৫৪৩ টাকা। শেয়ার, সঞ্চয়পত্র ও ব্যাংক আমানত থেকে বাৎসরিক আয় ৬ কোটি ২৭ লাখ ১৫,২৯০ টাকা। এছাড়া অন্যান্য খাতে ১ লাখ ৭৪,২৫০ টাকা।



অস্থাবর সম্পদ দেখিয়েছেন, নগদ টাকা ৫০ লাখ টাকা, ব্যাংকে জমা ১০ লাখ ৬২,১২৩ টাকা; বন্ড ৩৫ কোটি ৬ লাখ ৭৯,১০০ টাকা ও ৪২ কোটি ৪৮ লাখ ৩৫,৮৪৫ টাকা। স্থায়ী আমানত রয়েছে ১০ কোটি ৬৫ লাখ ৫৭,১৪৯ টাকা, ৯৭ লাখ ৫০,০০০ টাকার একটি গাড়ি। স্বর্ণালঙ্কার রয়েছে ২ লাখ টাকা, ইলেক্ট্রনিক সামগ্রী ১০ লাখ টাকা, আসবাবপত্র ৭ লাখ টাকা ও অন্যান্য ৯০ লাখ টাকা। সব মিলিয়ে মির্জা আব্বাস প্রায় ১০০ কোটির টাকার মালিক বলে হলফনামায় উল্লেখ করেছেন।



মির্জা আব্বাস হলফনামায় যে তথ্য স্বীকার করেছেন, তা থেকেই বোঝা যায়, বিএনপি শাসনামলে মন্ত্রী থাককালে কি পরিমাণ দুর্নীতি ও অবাধ সম্পত্তির তিনি মালিক হয়েছেন। কিন্তু তার আসল সম্পত্তি হলফনামায় প্রকাশ করা সম্পত্তির চেয়ে কয়েক গুণ বেশি। সাধারণ মানুষ এই মিথ্যাকে গ্রহণ করেনি। এমন একজন ব্যক্তি ঢাকার মেয়র নির্বাচিত হলে তিনি যে আরো সম্পত্তি বানাতেই আত্মনিয়োগ করবেন, এই উপলব্ধি সাধারণ ভোটারদের মধ্যে কাজ করেছে, যা নির্বাচনে সরাসরি প্রভাব ফেলেছে।



বিএনপি সমর্থকদের মধ্যে ভোটকেন্দ্র পাহারা দেওয়া, প্রতিটি ভোটকেন্দ্রের প্রতিটি ভোটকক্ষে পোলিং এজেন্ট রাখা এবং সাধারণ ভোটারদের কেন্দ্রে আনায় উৎসাহের চেয়ে কখন মওদুদীয় সূত্রের সেই ভোট বর্জনের নির্দেশ আসে সেই অপেক্ষাই বেশি কার্যকর ছিল। তাই গোটা ভোটের দিন বিএনপি সমর্থকদের মধ্যে এক ধরনের ছেড়ে দে মা কেঁদে বাঁচি মার্কা একটা দায়সারা উপস্থিতি ছিল। যা মওদুদের সেই পূর্বপরিকল্পিত ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে মুহূর্তে মিলিয়ে যায়।



ভোটে অংশগ্রহণ করেও বিএনপি একটি অপকৌশল নিয়ে নির্বাচন বর্জন করে সাধারণ ভোটারদের সঙ্গে তামাশা করেছে। যে দুই লাখের বেশি ভোটার তাদের সমর্থন দিয়েছে, তারা তো কেউ অপরাধ করেনি। ভোট বর্জনের সোজা মানে দাঁড়াল সেই দুই লাখের বেশি সমর্থকদের মতামতকেও বিএনপি একেবারে আমলে নেয়নি। যা সাধারণ ভোটারদের জন্য একটি অশনিসংকেত।



ধ্বজভঙ্গ বিএনপি'র সঙ্গে আওয়ামীলীগের এভাবে পুরো শক্তি নিয়ে মাঠে থাকাটা গণতন্ত্রের জন্য মোটেও শুভ সংকেত নয়। ঢাকা সিটি দক্ষিণে এমন কি সুইডিশ অ্যাম্বাসিডর পর্যন্ত পর্যন্ত ভোট দেখতে গিয়ে লাঞ্চিত হয়েছেন। যা দেশের ভাবমুর্তি খাটো করেছে।



বাংলাদেশে নির্বাচন কমিশনকে যতদিন শক্তিশালী করা না হবে ততদিন ভোটের রাজনীতিতে প্রশাসনিক অপতৎপরতা বন্ধ হবে না।



বর্তমান নির্বাচন কমিশন ভোট আয়োজন শেষ করাকেই শুধু দায়িত্ব মনে করেছে। কিন্তু বাংলাদেশে ভোটারদের সচেতনতা বাড়াতে এই কমিশনের কোনোই ভূমিকা নজরে আসেনি। বর্তমান নির্বাচন কমিশনকে মনে হয়েছে সরকার যতটুকু চেয়েছে তার চেয়ে উদার হস্তে সরকার দলীয়দের ফেবার দেবার খায়েস বেশি ছিল। যা সরকারের ভাবমুর্তিকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে। এমনকি এই কমিশন নির্বাচনী আচরণবিধি মানতে প্রার্থীদের বাধ্য করাতে পর্যন্ত পারেনি।



কোনো কোনো পত্রিকায় একজন নির্বাচন কমিশনারের তাড়া খাওয়ার খবর এসেছে। যা কমিশনের জন্য মোটেও সুখের অভিজ্ঞতা নয়। নির্বাচন পর্যবেক্ষকদের কাছ থেকে আশানুরূপ তৎপরতা সিটি নির্বাচনে অনুপস্থিত ছিল।



ঢাকা সিটি দক্ষিণের নির্বাচনে সংঘটিত কিছু কিছু কেন্দ্রের যেসব ঘটনা পত্রিকায় এসেছে, সেগুলো বিজয়ী দলের ভাবমুর্তিকে খাটো করেছে। এসব না করলেও সাঈদ খোকন হয়তো বিজয়ী হতেন। তবুও এসব ছোটখাটো ঘটনা সেই বিজয়কে বরং কলংকিত করল।



ঢাকা সিটি দক্ষিণের নবনির্বাচিত মেয়র জনাব মোহাম্মদ সাঈদ খোকন, আপনাকে অভিনন্দন। নির্বাচনের আগে আপনি বলেছিলেন নগরপিতা হিসেবে নয় নগরপুত্র হিসেবে ঢাকার উন্নয়নে ভূমিকা রাখবেন। নাগরিকরাই আপনার সেনাবাহিনী। সেই কথাটি যেন আপনার মনে থাকে। আশা করি, নির্বাচনে দেওয়া প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী আপনি ঢাকাকে গড়ে তোলার কাজে এখন পুরোপুরি আত্মনিয়োগ করবেন। আপনার বাবাকে ঢাকাবাসী যেভাবে সম্মান করতো, আপনি সেই সম্মানকে আরো উঁচু স্তরে নিয়ে যাবেন, এটাই প্রত্যাশা করি। ঢাকা সিটি দক্ষিণের একজন বাসিন্দা হিসেবে আপনি এখন আমারও মেয়র। আপনার নতুন জীবন কর্মময় হোক। সেই শুভ কামনা রইল।


রেজা ঘটক, সাহিত্যিক, নির্মাতা

মুক্তমত বিভাগে প্রকাশিত লেখার বিষয়, মতামত, মন্তব্য লেখকের একান্ত নিজস্ব। sylhettoday24.com-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে যার মিল আছে এমন সিদ্ধান্তে আসার কোন যৌক্তিকতা সর্বক্ষেত্রে নেই। লেখকের মতামত, বক্তব্যের বিষয়বস্তু বা এর যথার্থতা নিয়ে sylhettoday24.com আইনগত বা অন্য কোনো ধরনের কোনো দায় গ্রহণ করে না।

আপনার মন্তব্য

লেখক তালিকা অঞ্জন আচার্য অধ্যাপক ড. মুহম্মদ মাহবুব আলী ৪৮ অসীম চক্রবর্তী আজম খান ১১ আজমিনা আফরিন তোড়া ১০ আনোয়ারুল হক হেলাল আফসানা বেগম আবদুল গাফফার চৌধুরী আবু এম ইউসুফ আবু সাঈদ আহমেদ আব্দুল করিম কিম ৩২ আব্দুল্লাহ আল নোমান আব্দুল্লাহ হারুন জুয়েল ১০ আমিনা আইরিন আরশাদ খান আরিফ জেবতিক ১৭ আরিফ রহমান ১৬ আরিফুর রহমান আলমগীর নিষাদ আলমগীর শাহরিয়ার ৫৪ আশরাফ মাহমুদ আশিক শাওন ইনাম আহমদ চৌধুরী ইমতিয়াজ মাহমুদ ৭১ ইয়ামেন এম হক এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন একুশ তাপাদার এখলাসুর রহমান ৩৭ এনামুল হক এনাম ৪২ এমদাদুল হক তুহিন ১৯ এস এম নাদিম মাহমুদ ৩৩ ওমর ফারুক লুক্স কবির য়াহমদ ৬৩ কাজল দাস ১০ কাজী মাহবুব হাসান কেশব কুমার অধিকারী খুরশীদ শাম্মী ১৭ গোঁসাই পাহ্‌লভী ১৪ চিররঞ্জন সরকার ৩৫ জফির সেতু জহিরুল হক বাপি ৪৪ জহিরুল হক মজুমদার জাকিয়া সুলতানা মুক্তা জান্নাতুল মাওয়া জাহিদ নেওয়াজ খান জুনাইদ আহমেদ পলক জুয়েল রাজ ১০২ ড. এ. কে. আব্দুল মোমেন ১২ ড. কাবেরী গায়েন ২৩ ড. শাখাওয়াৎ নয়ন ড. শামীম আহমেদ ৪১ ডা. আতিকুজ্জামান ফিলিপ ২০ ডা. সাঈদ এনাম ডোরা প্রেন্টিস তপু সৌমেন তসলিমা নাসরিন তানবীরা তালুকদার তোফায়েল আহমেদ ৩১ দিব্যেন্দু দ্বীপ দেব দুলাল গুহ দেব প্রসাদ দেবু দেবজ্যোতি দেবু ২৭ নাজমুল হাসান ২৪ নিখিল নীল পাপলু বাঙ্গালী পুলক ঘটক প্রফেসর ড. মো. আতী উল্লাহ ফকির ইলিয়াস ২৪ ফজলুল বারী ৬২ ফড়িং ক্যামেলিয়া ফরিদ আহমেদ ৪২ ফারজানা কবীর খান স্নিগ্ধা বদরুল আলম বন্যা আহমেদ বিজন সরকার বিপ্লব কর্মকার ব্যারিস্টার জাকির হোসেন ব্যারিস্টার তুরিন আফরোজ ১৮ ভায়লেট হালদার মারজিয়া প্রভা মাসকাওয়াথ আহসান ১৯০ মাসুদ পারভেজ মাহমুদুল হক মুন্সী মিলন ফারাবী মুনীর উদ্দীন শামীম ১০ মুহম্মদ জাফর ইকবাল ১৫৩ মো. মাহমুদুর রহমান মো. সাখাওয়াত হোসেন মোছাদ্দিক উজ্জ্বল মোনাজ হক ১৪ রণেশ মৈত্র ১৮৩ রতন কুমার সমাদ্দার রহিম আব্দুর রহিম ৫৫ রাজু আহমেদ ১৬ রাজেশ পাল ২৮ রুমী আহমেদ রেজা ঘটক ৩৮ লীনা পারভীন শওগাত আলী সাগর শাওন মাহমুদ