হবিগঞ্জ প্রতিনিধি

৩১ ডিসেম্বর, ২০২১ ১৮:৩৯

সাইফুল হত্যা: স্বাস্থ্যকর্মীদের কর্মবিরতিতে চরম ভোগান্তি, গ্রেপ্তার হয়নি কেউ

হবিগঞ্জে মেডিকেল টেকনোলজিস্ট সাইফুল ইসলাম হত্যার ঘটনায় তৃতীয় দিনের মতো কর্মবিরতি পালন করেছেন হবিগঞ্জ জেলা সদর আধুনিক হাসপাতালের চিকিৎসক, নার্স, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা। জরুরি বিভাগ ছাড়া অন্য কোথাও কোন চিকিৎসা সেবা পাননি সাধারণ মানুষ।

ঘটনার ৩দিনেও পুলিশও কাউকে আটক করতে পারেনি। এতে ক্ষোভ দেয়া দিয়েছে সাইফুলের স্বজন, সহকর্মীদের ও বন্ধু মহলে।

শুক্রবার বিকেলে হবিগঞ্জ জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেছেন ২০০৯ সালের এসএসসি ও ১১ সালের এইচএসসি ব্যাচের শিক্ষার্থীরা। এসময় তারা ৭২ ঘণ্টার মধ্যে সাইফুলের খুনিদের গ্রেপ্তার না করলে সারাদেশে ৯ সালের এসএসসি ও ১১ সালের এইচএসসি ব্যাচের পরীক্ষার্থীরা আন্দোলনে নামবে বলেও হুশিয়ারি দিয়েছেন।

মানববন্ধন শেষে শহরে বিক্ষোভ মিছিলও করেছেন তারা।

এদিকে, বৃহস্পতিবার রাতে সাইফুলের বোন বাদী হয়ে হবিগঞ্জ সদর মডেল থানায় অজ্ঞাত কয়েকজনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেছেন।

এর আগে বুধবার দুপুরে সিলেট বিভাগে স্বাস্থ্য সেবা বন্ধের হুশিয়ারি দিয়ে ৪৮ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দেন সিলেট বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক হিমাংশু লাল দাশ।

শুক্রবার হবিগঞ্জ সদর আধুনিক হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. মুমিন উদ্দিন বলেন, আমাদের দেয়া ৪৮ ঘণ্টার আল্টিমেটাম শেষ হলেও এখন পর্যন্ত জড়িতদের গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ।

তিনি বলেন, আমরা সবাই বসে সিদ্ধান্ত নেবো পরবর্তী কর্মসূচি কী হবে।

শুক্রবার দুপুরে হবিগঞ্জ সদর হাসপাতালে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, জরুরী বিভাগ ছাড়া সব বিভাগই বন্ধ রয়েছে। বহির্বিভাগে কোন সেবা পাননি সাধারণ মানুষ। বন্ধ রাখা হয়েছে প্যাথলজি বিভাগও। এতে করোনার নমুনা সংগ্রহসহ চিকিৎসাও বন্ধ রয়েছে।

এদিকে, চিকিৎসা সেবা অব্যাহত রাখার আহবান জানাতে গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে হাসপাতালে যান জেলা প্রশাসক ইশরাত জাহান। এ সময় তিনি হাসপাতালে চিকিৎসক, নার্স, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের সাথে বৈঠক করেন। তিনি সবাইকে ধৈর্য ধরে চিকিৎসা সেবা স্বাভাবিক রাখার আহবান জানান।

তিনি বলেন, ‘মেডিকেল টেকনোলজিস্ট সাইফুলের হত্যার ঘটনায় আমরা সকলেই মর্মাহত হয়েছি। আমরা প্রশাসনের লোকজন সাইফুলের পরিবার এবং সহকর্মীদের পাশে আছি। আমি হাসপাতালের কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ সবাই অনুরোধ করব আপনারা ধৈর্য ধরে চিকিৎসা সেবা অব্যাহত রাখুন। আমরা যত দ্রুত সম্ভব হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের গ্রেপ্তার করে সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করব।’
এদিকে, ঘটনার তিনদিনেও পুলিশও কাউকে আটক করতে পারেনি।

এ ব্যাপারে হবিগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি তদন্ত) দৌস মোহাম্মদ বলেন, ‘আমরা সিসিটিভি ফুটেজ দেখে ইতোমধ্যে আসামীদের শনাক্ত করেছি। বৃহস্পতিবার রাতে নিহতের বোন মামলা দায়ের করেছেন। জড়িতদের গ্রেপ্তারে অভিযান চালাচ্ছে পুলিশ। যত দ্রুত সম্ভব আমরা তাদেরকে গ্রেপ্তার করব।’

এর আগে, মঙ্গলবার দুপুরে শহরের টাউনহল রোড এলাকায় জুনিয়র হাইস্কুল এন্ড কলেজের প্রবেশ মুখে মেডিকেল টেকনোলজিস্ট (ল্যাব) সাইফুলকে পিটিয়ে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। বুধবার রাতে জানাজা শেষে তার দাফন সম্পন্ন হয়।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত