নিজস্ব প্রতিবেদক

১৭ জানুয়ারি, ২০২২ ১৪:০৮

বহিরাগতদের ইন্ধনে আন্দোলন, দাবি শাবি ভিসির

বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণার পরও যারা আন্দোলনের নামে ক্যাম্পাসে অবস্থান করছে তাদের অনেকেই বহিরাগত বলে মন্তব্য করেছেন উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদ।

তিনি বলেন, ‘বহিরাগতদের ইন্ধনে এখন আন্দোলন চলছে। রোববার রাত থেকেই ক্যাম্পাসে বহিরাগতরা প্রবেশ করেছে বলে আমার কাছে তথ্য আছে।’

তবে উপাচার্যের এমন দাবি নাকচ করেছেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। তারা বলছেন, ঘটনা ধামাচাপা দিতে মিথ্যাচার করছেন উপাচার্য। ক্যাম্পাসে পুলিশ ছাড়া বহিরাগত কেউ নেই।

সোমবার দুপুর ১টার দিকে নিজ বাসভবনে উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ে অনেক বহিরাগত ঢুকে পড়েছে। তারা সাধারণ শিক্ষার্থীদের বিভ্রান্ত করছে। তাদের ইন্ধনে শান্তিপূর্ণ ক্যাম্পাসে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টা চলছে।

‘আমাদের শিক্ষার্থীরা অনেক ভালো। তারা প্রশাসনের প্রতি আস্থাশীল। আজকের আন্দোলনের সঙ্গে সাধারণ শিক্ষার্থীদের তেমন সম্পৃক্ততা নেই।’

কারও ইন্ধনে শিক্ষার্থীরা যাতে আর বিভ্রান্ত না হয় সেদিকে সজাগ থাকার আহ্বান জানিয়ে উপাচার্য বলেন, ‘রোববারের যে ঘটনা ঘটেছে তা তদন্তে কমিটি করা হয়েছে। তাদের দাবি মেনে হল প্রভোস্টও পদত্যাগ করেছেন। শিক্ষার্থীদের আরও যে দাবি রয়েছে সেগুলো আমি বাস্তবায়নের উদ্যোগ নিয়েছি।’

উপাচার্যের অভিযোগের বিষয়ে আন্দোলনে নেতৃত্ব দেয়া শিক্ষার্থী সৌরভ চাকমা বলেন, ‘রোববারের ঘটনা ধামাচাপা দিতে ভিসি এমন কথা বলছেন। তারা (প্রশাসন) অভিযোগ করছে, বহিরাগতরা এসে গুলি চালিয়েছে। কিন্তু সত্য হলো পুলিশ ছাড়া কেউ গুলি চালায়নি। পুলিশের গুলিতেই শিক্ষক-কর্মকর্তা ও শিক্ষার্থীরা আহত হয়েছেন। এখনে পুলিশ ছাড়া কেউ বহিরাগত নেই। পুলিশকে উপাচার্য ডেকে এনেছেন।

উপাচার্যকে মিথ্যাবাদী আখ্যা দিয়ে শিক্ষার্থী সাব্বির আহমেদ বলেন, ‘তিনি একের পর এক মিথ্যা বলে যাচ্ছেন। আমরা আর এই উপাচার্যকে এক মুহূর্ত চাই না। তাকে শাবি ছাড়াতে হবে।’

উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদের পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান প্রক্টরিয়াল বডির পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলন করছেন শিক্ষার্থীরা। সেই সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয় ও হল বন্ধের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছেন তারা।

সোমবার সকালে মুক্তমঞ্চের সমাবেশ থেকে উপাচার্যকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হয়েছে। এর আগে ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল করেন শিক্ষার্থীরা। নানা স্লোগানে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ করছেন তারা।

বেগম সিরাজুন্নেসা হলের প্রাধ্যক্ষ জাফরিনের পদত্যাগসহ তিন দফা দাবিতে গত বৃহস্পতিবার রাত থেকে আন্দোলনে নামেন ওই হলের ছাত্রীরা। রোববার আন্দোলনের চতুর্থ দিনে এসে তা সহিংসতায় রূপ নেয়।

রোববার বিকেলে শিক্ষার্থীরা উপাচার্যকে ধাওয়া দিয়ে অবরুদ্ধ করে। এর জেরে সন্ধ্যায় আন্দোলনকারীদের ওপর পুলিশ হামলা চালায়। এতে রীতিমতো রণক্ষেত্রে পরিণত হয় ক্যাম্পাস।

রাতে জরুরি সিন্ডিকেট সভা ডেকে বিশ্ববিদ্যালয় অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধের ঘোষণা দেন উপাচার্য। সেই সঙ্গে সোমবার দুপুর ১২টার মধ্যে আবাসিক শিক্ষার্থীদের হল ছাড়ার নির্দেশ দেয়া হয়।

শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা ও সংঘর্ষের ঘটনায় ৮ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির প্রধান করা হয়েছে গণিত বিভাগের অধ্যাপক ডা. রাশেদ তালুকদারকে।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত