নিজস্ব প্রতিবেদক

১৮ জানুয়ারি, ২০২২ ১২:৩৭

শাবি শিক্ষার্থীদের আন্দোলন অব্যাহত, দাবি উপাচার্যের পদত্যাগ

পুলিশি হামলার ঘটনায় উপাচার্য ফরিদ উদ্দিন আহমদের পদত্যাগ দাবিতে আন্দোলন অব্যাহত রেখেছেন শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবি) শিক্ষার্থীরা। মঙ্গলবার (১৮ জানুয়ারি) সকাল থেকেই বিভিন্ন হল থেকে একের পর এক মিছিল নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের গোলচত্বরে জড়ো হতে থাকেন তারা।

গোলচত্বর থেকে মিছিল নিয়ে সোমবারের মতো উপাচার্যের বাসভবনের সামনে অবস্থান নেবেন বলে জানিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থীদের একটাই দাবি উপাচার্যকে পদত্যাগ করতে হবে। একইসঙ্গে দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হওয়ায় প্রক্টরিয়াল কমিটি এবং ছাত্র উপদেষ্টাকেও সরে যেতে হবে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের গোল চত্বরে অবস্থান নেওয়া ক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা জানান, বেলা এগারোটার পর বিশ্ববিদ্যালয়ের পোস্ট অফিসে রাষ্ট্রপতি বরাবর লিখিত খোলা চিঠিটি পোস্ট করবেন তারা। এরপর উপাচার্যের বাসভবনের সামনে অবস্থান নেওয়ার পাশাপাশি রোড পেইন্টিং করবেন বলে জানান তারা। রাষ্ট্রপতি বরাবর খোলা চিঠি পাঠানোর ৪৮ ঘণ্টার ভিতরে উপাচার্যের পতন নিশ্চিত না হলে আন্দোলনের পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করা বলে জানান তারা। তবে এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত তারা গোল চত্বরেই অবস্থান করছেন।

প্রসঙ্গত, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবি) বেগম সিরাজুন্নেসা চৌধুরী ছাত্রী হলের প্রভোস্ট সহযোগী অধ্যাপক জাফরিন আহমেদ লিজার বিরুদ্ধে ‘অসদাচরণের’ অভিযোগে এনে প্রভোস্ট কমিটির পদত্যাগসহ তিন দফা দাবি আদায়ে গত বৃহস্পতিবার থেকে আন্দোলনে নামেন ওই হলের ছাত্রীরা। বৃহস্পতিবার রাত ৯টা থেকে ৩টা পর্যন্ত উপাচার্যের বাসভবনের সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করেন বেগম সিরাজুন্নেসা চৌধুরী ছাত্রী হলের শিক্ষার্থীরা।

এ নিয়ে প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠক হলেও দাবি পূরণ না হওয়ায় আন্দোলন চালিয়ে আসছিলেন তারা। এরই মধ্যে শনিবার সন্ধ্যায় আন্দোলনরতদের ওপর হামলার অভিযোগ ওঠে ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে। প্রতিবাদে অনির্দিষ্টকালের জন্য সকল বিভাগের ক্লাস পরীক্ষা বর্জনের ঘোষণা দেন শিক্ষার্থীরা।

রোববার বেলা আড়াইটার দিকে একাডেমিক কাউন্সিলের মিটিং শেষে রেজিস্ট্রার ভবন থেকে বের হলে উপাচার্যের পিছু নেন আন্দোলনকারীরা। এ সময় উপাচার্য ড. এমএ ওয়াজেদ মিয়া আইসিটি ভবনে আশ্রয় নিলে শিক্ষার্থীরা সেখানে তাকে অবরুদ্ধ করে রাখেন। পরে রোববার বিকেলে এসে সহিংসতায় রূপ নেয় আন্দোলন।

এদিকে পুলিশের হামলায় ছত্রভঙ্গ শিক্ষার্থীরা আবারও জড়ো হলে পরে ছাত্রলীগ তাদের ধাওয়া করে। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে অনির্দিষ্টকালের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করে কর্তৃপক্ষ। সোমবার দুপুর ১২টার মধ্যে শিক্ষার্থীদের হল ত্যাগেরও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

তবে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধের ঘোষণা প্রত্যাখ্যান করেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। একই সঙ্গে উপাচার্যের পদত্যাগের একদফা দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন তারা। সোমবার বিকেলে শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের সব প্রশাসনিক ভবনে তালা ঝুলিয়ে দেন। পরে তারা উপাচার্যের বাসভবনের সামনে অবস্থান নেন।

এদিকে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা ও সংঘর্ষের ঘটনায় ৮ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির প্রধান করা হয়েছে গণিত বিভাগের অধ্যাপক ডা. রাশেদ তালুকদারকে।


আপনার মন্তব্য

আলোচিত