সিলেটটুডে ডেস্ক

০১ এপ্রিল, ২০২৪ ১৮:৪৪

ছাত্ররাজনীতি: বুয়েট উপাচার্য বললেন, আদালতের আদেশ আমাকে মানতে হবে

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বুয়েট) ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধের সিদ্ধান্ত স্থগিত করে হাইকোর্ট যে আদেশ দিয়েছেন, তা অনুসরণ করা হবে বলে জানিয়েছেন উপাচার্য অধ্যাপক সত্য প্রসাদ মজুমদার।

তিনি বলেছেন, ‘আদালত যেটা বলবেন, আমাকে সেটা মানতে হবে। আদালতের আদেশ শিরোধার্য। আমরা আদালত অবমাননা করতে পারব না।’

সোমবার (১ এপ্রিল) দুপুরে বুয়েটে সব রাজনৈতিক সংগঠন ও এর কার্যক্রম নিষিদ্ধ ঘোষণার ‘জরুরি বিজ্ঞপ্তির’ কার্যক্রম স্থগিতের আদালতের আদেশের পর ক্যাম্পাসে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের উপাচার্য এসব কথা বলেন।

চার বছর আগে বুয়েট শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনার পর আন্দোলনের মুখে ক্যাম্পাসে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ হয়। ২০১৯ সালের ১১ অক্টোবর বুয়েটে সব রাজনৈতিক সংগঠন ও এর কার্যক্রম নিষিদ্ধ করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ‘জরুরি বিজ্ঞপ্তি’ জারি করে।

সম্প্রতি মধ্যরাতে বুয়েট ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগের প্রবেশের পর ক্যাম্পাসে ছাত্ররাজনীতির বিরুদ্ধে ও পক্ষ নিয়ে আন্দোলন-পাল্টা আন্দোলন চলছে। এর মধ্যে বুয়েট কর্তৃপক্ষের ওই ‘জরুরি বিজ্ঞপ্তি’র বৈধতা নিয়ে আজ হাইকোর্টে একটি রিট হয়। রিটটি করেন বুয়েটের পুরকৌশল বিভাগের ছাত্র ইমতিয়াজ হোসেন। তিনি ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য। বুয়েটে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের প্রবেশে তার সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে সাধারণ শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে তার হলের সিট বাতিল করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

রিট আবেদনে ওই নিষেধাজ্ঞার কার্যকারিতা সোমবার স্থগিত করে আদেশ দেন হাইকোর্ট। এর ফলে দেশে প্রকৌশল শিক্ষার শীর্ষ এ বিদ্যাপীঠে ছাত্ররাজনীতি চর্চায় আর কোনো বাধা থাকছে না।

আদালতের আদেশের পর বুয়েটের পদক্ষেপ কী হবে, জানতে চাইলে বুয়েট উপাচার্য সত্য প্রসাদ মজুমদার বলেন, ‘এ বিষয়ে আমাদের আইনজীবীদের সঙ্গে আলোচনা করতে হবে। আদালতকে তো আমরা ভায়োলেট (আদেশ লঙ্ঘন) করতে পারব না। আমাদের আদালতের নিয়মে চলতে হবে। আইন ও নিয়ম অনুযায়ী আমাদের এগোতে হবে।’

তিনি আরও বলেন, আদালতের আদেশ না দেখে তিনি কিছু বলতে পারছেন না। আদেশ দেখার পর বুয়েটের আইন উপদেষ্টার পরামর্শ অনুযায়ী তারা এগিয়ে যাবেন।

বুয়েটে ছাত্ররাজনীতি চালু হলে আবার আবরার ফাহাদ হত্যাকাণ্ডের মতো ঘটনা ঘটবে কি না, এক সাংবাদিকের এমন প্রশ্নের জবাবে উপাচার্য বলেন, ‘আমি ভবিষ্যদ্বাণী করতে পারব না। কী হবে না হবে, সেটা কি আমি-আপনি জানি?’

বুয়েটে ছাত্ররাজনীতি চালু হলে পরিবেশ ঠিক থাকবে কি না– জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘রাজনৈতিক পরিবেশ ঠিক রাখার জন্য ছাত্র-শিক্ষক, প্রশাসন সবাই মিলে সিদ্ধান্তে আসতে হবে। সেজন্য আমাদের আলোচনা প্রয়োজন। আগে ইউকসু তথা ইঞ্জিনিয়ারিং ইউনিভার্সিটি সেন্ট্রাল স্টুডেন্টস ইউনিয়ন ছিল। এখন তার কার্যক্রম বন্ধ আছে।

‘শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা কী চায়, তা বিবেচনায় নিয়ে একটা কিছু করতে হবে। একা কিছু করলে, তা বাস্তবায়ন করা যাবে না। সেটা সিন্ডিকেটে অনুমোদিত হতে হবে, অর্ডিন্যান্সে যুক্ত হতে হবে। রাষ্ট্রপতি ও বিশ্ববিদ্যালয়ের চ্যান্সেলরের অনুমোদন নিতে হবে। তা না হলে এটা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্ডিন্যান্সে ঢুকবে না। তাদের সীমাবদ্ধতা আছে। তারা আদালতের আদেশ পালন করেন। বিশ্ববিদ্যালয় তার নিয়মে চলে। কিন্তু আদালতের আদেশ শিরোধার্য,’ বলেন উপাচার্য।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত