রাবি প্রতিনিধি

০৮ ফেব্রুয়ারি , ২০১৭ ২১:০৩

রাবি ছাত্রলীগ কর্মী ফারুক হত্যার বিচার ৭ বছরেও সম্পন্ন হয়নি

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগকর্মী ফারুক হোসেন হত্যাকান্ডের বিচার সাত বছরেও সম্পন্ন হয়নি। দ্রুত বিচারকার্য শেষ করে আসামিদের শাস্তির দাবি জানিয়েছেন ফারুকের শোকার্ত পরিবার ও ছাত্রলীগের রাবি শাখার নেতাকর্মীরা।

বুধবার (৮ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে শহীদ ফারুক হোসেনের সপ্তম মৃত্যুবার্ষিকীতে ক্যাম্পাসে শোক র‌্যালি ও সমাবেশে করেছে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। ছাত্রলীগের দলীয় টেন্ট থেকে র‌্যালি নিয়ে শহীদ ফারুক হোসেনের স্মৃতি বিজড়িত শাহ্ মখদুম হলের সামনে তার অস্থায়ী প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে। পরে সেখানে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।

বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ফয়সাল আহমেদ রুনুর সঞ্চালনায় সমাবেশে বক্তব্য রাখেন সভাপতি গোলাম কিবরিয়া ও ফারুকের বড় বোন আসমা বেগম।

এসময় বক্তারা ফারুক হত্যা মামলার অভিযোগপত্রভুক্ত পলাতক আসামিদের দ্রুত গ্রেফতার ও বিচারের আওতায় আনার দাবি জানায়। এছাড়া আসামিদের রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় প্রদত্ত সনদপত্র বাতিল ও শহীদ ফারুক স্মরণে স্মৃতিফলক নির্মাণের দাবি জানায়।

এদিকে বাদ আসর শহীদ ফারুকসহ সকল শহীদের স্মরণে শাহ মখদুম হল অডিটোরিয়ামে দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়।

জানা যায়, ফারুক হত্যা মামলার আসামিদের বেশিরভাগ জামিনে রয়েছেন। কয়েকজন মারাও গেছেন। সাক্ষীরা সময়মতো আদালতে হাজির না হওয়ায় বিচার কার্যক্রম থমকে আছে।

রাজশাহী মহানগর আদালতের পিপি আব্দুস সালাম বলেন, ‘মামলাটি এখনো বিচারাধীন। মামলার অবস্থা সম্পর্কে বিস্তারিত কিছু জানি না। মামলার স্বাক্ষীরা সময়মতো আদালতে না আসায় বিচারকার্য শেষ হয়নি।’

বিশ্ববিদ্যালয় ও ছাত্রলীগ সূত্রে জানা গেছে, আবাসিক হল দখলের ঘটনাকে কেন্দ্র করে ২০১০ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি গভীর রাতে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের ওপর হামলা চালায় জামায়াত-শিবির ক্যাডাররা। এ ঘটনায় ছাত্রলীগকর্মী ফারুক হোসেনকে হত্যা করে তার লাশ ম্যানহোলে ঢুকিয়ে রাখা হয়। ঘটনার পরদিন বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক মাজেদুল ইসলাম অপু বাদী হয়ে নগরীর মতিহার থানায় অসংখ্য অজ্ঞাতনামাসহ শিবিরের ৩৫ নেতাকর্মীর নাম উল্লেখ করে হত্যা মামলা দায়ের করেন।

ঘটনার প্রায় আড়াই বছর পর ২০১২ সালের ২৮ জুলাই মামলার তদন্ত কর্মকর্তা জিল্লুর রহমান আদালতে ১২৬৯ পৃষ্ঠার অভিযোগপত্র দাখিল করেন। এতে জামায়াতে ইসলামীর তৎকালীন কেন্দ্রীয় আমির মতিউর রহমান নিজামী, সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মুহাম্মদ মুজাহিদ, নায়েবে আমির দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী, রাজশাহী মহানগর আমির আতাউর রহমান, রাবি ছাত্র-শিবিরের সভাপতি শামসুল আলম গোলাপ, সেক্রেটারি মোবারক হোসেন, নবাব আব্দুল লতিফ হল শাখা ছাত্রশিবিরের সভাপতি হাসমত আলী, শহীদ হবিবুর রহমান হলের সভাপতি রাইজুল ইসলাম, শিবিরকর্মী রুহুল আমিন ও বাপ্পীসহ ১১০ জনকে অভিযুক্ত করা হয়।

পরে এই হত্যা মামলাটি দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে স্থানান্তর করা হয়। মামলার আসামীদের মধ্যে জামায়াত নেতা মুজাহিদ ও নিজামীর মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে মৃত্যুদন্ড কার্যকর করা হয়েছে। আর যাবজ্জীবন কারাদন্ড ভোগ করছেন সাঈদী। তবে অভিযুক্ত শিবির নেতাকর্মীদের অধিকাংশই জামিনে রয়েছে।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত