নিজস্ব প্রতিবেদক

৩০ আগস্ট, ২০১৫ ১৪:১১

ক্ষুব্ধ, অপমানিত জাফর ইকবাল চোখের জল লুকালেন বৃষ্টির জলে!

শিক্ষকদের ওপর ছাত্রলীগের হামলায় বিস্ময়ে বিমূঢ়, ক্ষুব্ধ, অপমানিত শিক্ষাবিদ ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল নিজের চোখের জল লুকালেন বৃষ্টির জলে। শিক্ষকদের ওপর হামলার পর ক্যাম্পাসে নেমে আসা বৃষ্টিতে তিনি বসে থেকে ভিজলেন, যেন অপমানের কান্না লুকাতে চান বৃষ্টির আড়ালে।

আন্দোলনরত অন্যান্য শিক্ষকরা যখন ছাতা নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছিলেন তাঁর দিকে কিন্তু তিনি কোন কথা না বলে সে ছাতা গ্রহণ না করার ইঙ্গিত করেন; ভিজতে থাকেন অহর্নিশ।

রবিবার (৩০ আগস্ট) কাল আটটায় প্রশাসনিক ভবন-২ (উপাচার্য ভবন) এর সামনে ছাত্রলীগ কর্তৃক লাঞ্ছিত হন মুহম্মদ জাফর ইকবালের স্ত্রী ড. ইয়াসমীন হক সহ অন্যান্য শিক্ষকেরা। ড. ইয়াসমীন জাফর ইকবালের সঙ্গে আমেরিকা না থেকে সিলেটের শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করছেন।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বিশ্ববিদ্যালয় পূর্ব ঘোষিত একাডেমিক কাউন্সিল ঠেকাতে রবিবার সকাল ৯টা থেকেই প্রশাসনিক ভবন-২(উপাচার্য ভবন) এর সামনে অবস্থান কর্মসূচী ছিল আন্দোলনকারী 'মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ' শিক্ষক পরিষদের।

অন্যদিকে শিক্ষকদের অবস্থান কর্মসূচি ঠেকাতে সকাল ৭টা থেকেই একই স্থানে অবস্থান নেয় ছাত্রলীগ। পরে সকাল সাড়ে ৭টায় আন্দোলনকারী শিক্ষকরা উপাস্থিত হলে ছাত্রলীগের সাথে বাক-বিতন্ডা হয়। এসময় ছাত্রলীগ কর্মীরা নিজেদের সাধারণ শিক্ষার্থী বলে দাবী করলেও ছাত্রলীগ সহ-সভাপতি আবু সাঈদ আকন্দ, সহ-সভাপতি অঞ্জন রায় ও যুগ্ম সম্পাদক সাজিদুল ইসলাম সবুজ উপস্থিত ছিলেন।

এ সময় ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা ‘শাবিপ্রবির মাটি/ছাত্রলীগের ঘাঁটি’ স্লোগান দিয়ে শিক্ষকদের উপর হামলাও চালায়। ছিনিয়ে নেয় শিক্ষকদের ব্যানার। ছাত্রলীগের নেতাকর্মী কর্তৃক লাঞ্ছিত হন আন্দোলনকারী শিক্ষক ড. ইয়াসমীন হক, দীপেন দেবনাথ, সৈয়দ সামসুল আলম, মো. ফারুক উদ্দিন, মোস্তফা কামাল মাসুদ, মোহাম্মদ ওমর ফারুকসহ আরো কয়েকজন। হামলায় হাতে আঘাতপ্রাপ্ত হন অধ্যাপক ড. মো. ইউনুছ।

বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টর, সহকারী প্রক্টর ও পুলিশ প্রশাসনের উপস্থিতিতেই এ ঘটনা ঘটে।

পুলিশের উপস্থিতিতে হামলার বিষয়ে জানতে চাইলে জালালাবাদ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আখতার হোসেন কোন মন্তব্য করতে রাজি হননি।

আন্দোলনকারী শিক্ষকদের নেতা ফারুক আহমদ বলেন, ছাত্রলীগ বর্বেরাচিতভাবে হামলা চালিয়েছে। শিক্ষকদের উপর এই হামলার ঘটনা পুরো বিশ্ববিদ্যালয়কে কলঙ্কিত করেছে।

প্রসঙ্গত, উপাচার্যের বিরুদ্ধে নিয়োগে অনিয়ম ও আর্থিক অস্বচ্ছতার অভিযোগ এনে তার পদত্যাগ দাবিতে গত ১৩ এপ্রিল থেকে আন্দোলন করে আসছে ‘মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ' আওয়ামীপন্থী শিক্ষকরা।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত