অঞ্জন আচার্য

১৮ জুলাই, ২০১৫ ১৮:০১

ঈদে রেখা’র দ্বিতীয় এ্যালবাম ‘রঙের মানুষ’

দিনাজপুরের রেখাদের পরিবারটি ছিল পুরোদস্তুর সঙ্গীত-পরিবার। মা-বাবা, ভাই-বোন সবার কণ্ঠেই ছিল গান। দিনের বেশির ভাগ সময়ই কাটতো গান গেয়ে। তবে বাবার একান্ত উৎসাহে গানের জগতে প্রবেশ রেখার।

সেই ছোট্ট রেখা আজ লোকপরিচিতি লোকসঙ্গীত শিল্পী লাইলুন নাহার রেখা। পাঁচ বছর বয়সেই শিল্পী গোপালচন্দ্র সরকারের কাছে হাতেখড়ি তাঁর। বাবাই আয়োজন করেন সব। তারপর দীর্ঘ প্রায় সাত বছর শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের ওপর তালিম নেন তিনি শিল্পী অনুপ কুমার দাশের কাছে। ক্ল্যাসিক্যালে মিউজিকের ওপর আরো দীক্ষা নেন শিল্পী বরকত হোসেনের কাছে।

দিনাজপুর থেকে ঢাকায় পদার্পণ, সঙ্গে সঙ্গীত-শিক্ষা। তাই তো ২০০০ সালে নিজের যোগ্যতায় হয়েছেন বাংলাদেশ বেতার ও টেলিভিশনের তালিকাভুক্ত শিল্পী। গানের জগতে প্রবেশ সম্পর্কে জানতে চাইলে শিল্পী রেখা বলেন- ‘ভালবাসার টানেই গান করা আমার। ছোটবেলা থেকেই গান শিখে আসছি আমি। রবীন্দ্রসঙ্গীত, নজরুলগীতি, লোকগীতি, আধুনিক সব গানই শিখেছি। কিন্তু মাটির গানই আমাকে সবসময় টেনেছে বেশি। তবে এরজন্য আমি সম্পূর্ণ কৃতজ্ঞ আমার বাবার কাছে। বাবাকে এখন মিস করি খুব।’

বর্তমানে আপনি একজন প্রতিষ্ঠিত লোকসঙ্গীত শিল্পী। বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলেও আপনি পরিচিত মুখ। এই যে পথচলা, গানের একটা দিক বেছে নেয়া, সেটা কি ওই ভালবাসার টানেই সম্ভব হয়েছে? এমন প্রশ্ন রাখা হলে রেখা বলেন- ‘লালন সাঁইয়ের খুব ভক্ত আমি। তাঁর গান আমাকে বিশেষ টানে। লালনের গানের মাঝে আমি খুঁজে পাই আমাকে। তাছাড়া মাটি ও মানুষের গান গাইতে আমার হৃদয় টানে সবসময়ই। তাই এটা নিয়েই কাজ করি বেশি। যতটুকু পরিচিতি পেয়েছি, এর জন্যই পেয়েছি। জানি, এখনও অনেক পথ পাড়ি দেয়া বাকি।’

গানের এ্যালবাম সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন- ‘২০১০ সালে আমার প্রথম একক এ্যালবাম প্রকাশিত হয়। অডিও প্রতিষ্ঠান ‘গাঙচিল’-এর ব্যানারে প্রকাশিত ‘গোপন ভালবাসা’ নামের ওই এ্যালবামটির সঙ্গীত আয়োজন করেন শিল্পী ফকির শাহবুদ্দিন। সেসময় দারুন সাড়া ফেলে সেটি। এতে গান লিখেছিলেন শহিদুল্লাহ ফরাজীসহ আরো অনেক খ্যাতিমান গীতিকার। এছাড়া আগে-পরে আরো ৩টি মিশ্র এ্যালবামও আছে আমার।’

ঈদে রিংগার-এর ব্যানারে প্রকাশিত হয়েছে দ্বিতীয় একক এ্যালবাম ‘রঙের মানুষ’ বলে জানান শিল্পী রেখা। এ্যালবামটির বিষয়ে লাইলুন নাহার বলেন, ‘এ্যালবামটির সঙ্গীতায়োজন করেছেন মুশফিক লিটু। গানের কথা লিখেছেন নাজির মাহমুদ, শহিদুল্লাহ ফরাজী, দেলোয়ার আরজুদা শরফসহ আরো অনেকে। এটির বেশিরভাগ গানই সুফিবাদের। আধ্যাত্মিকতাবাদের এ গানগুলো আশা করছি শ্রোতাদের মন ছুঁয়ে যাবে।’

সঙ্গীত নিয়ে ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা সম্পর্কে জানতে চাইলে শিল্পী বলেন, ‘শুদ্ধ সঙ্গীতের সাথে থাকতে চাই। গান নিয়েই বেঁচে থাকতে চাই।’

পরবর্তী গানের এ্যালবামের প্রস্তুতি সম্পর্কে তিনি জানান, লালন গীতি নিয়ে একটা কাজ করার পরিকল্পনা আছে। সব ঠিকঠাক থাকলে দ্রুতই তা সম্পন্ন করতে চাই, উপহার দিতে চাই শ্রোতাদের।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত