০৫ মে, ২০২০ ২১:২৩
শপিংমল খোলার আগে- মহামারি প্রতিরোধী সামগ্রী যেমন মাস্ক, জীবাণুমুক্তকরণ সামগ্রী ইত্যাদি সংগ্রহ করুন; জরুরি আপদকালীন পরিকল্পনা তৈরি করুন; আপদকালীন পৃথকীকরণ এলাকা স্থাপন করুন; বর্জ্য নিষ্কাশন ব্যবস্থা স্থাপন করুন; সকল কর্মচারীর এবং সকল বিভাগের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করুন, প্রত্যেক কে দায়িত্ব ভাগ করে দিন ও এসব কাজ এর বাস্তবায়ন এর বাধাগুলো দূর করতে চেষ্টা করুন; শপিংমলের কর্মীদের প্রশিক্ষণ জোরদার করুন দরকার হলে প্রয়োজনীয় রিফ্রেশার প্রশিক্ষণ প্রশিক্ষণ দিন। [প্রশিক্ষণের মধ্যে জনস্বাস্থ্যের বিষয়গুলো যেমন মাস্ক এর সঠিক ব্যবহার, হাঁচি- কাশির শিষ্টাচার, শারীরিক দূরত্ব, হাত ধোয়া, জীবাণুমুক্ত করণ গুরুত্ব পাবে]। বাড়িতে স্বেচ্ছা অন্তরীণ থাকাকালীন কিভাবে নিজের শরীর ও মনের যত্ন নিতে হবে তা শেখাতে হবে। মৃদু উপসর্গসমূহে বাড়িতে কি করে নিজের যত্ন ও চিকিৎসা নিবেন এগুলো শেখানো হতে পারে।
বিজ্ঞাপন
২. কর্মীদের স্বাস্থ্য পর্যবেক্ষণের ব্যবস্থা [Health Monitoring system] প্রতিষ্ঠা করুন, প্রতিদিন কর্মীদের স্বাস্থ্য বিষয়ক অবস্থা রেকর্ড/ নথিভুক্ত করুন এবং যারা অসুস্থতা অনুভব করবেন তাদের সঠিক সময়ে চিকিৎসা নিতে হবে।
৩. শপিংমলে যারা ঢুকবে তাদের তাপমাত্রা মাপার জন্য শপিংমলের লবিতে তাপমাত্রা পর্যবেক্ষণকারী যন্ত্র স্থাপন করুন এবং শুধুমাত্র স্বাভাবিক তাপমাত্রা সম্পন্ন ব্যক্তিরাই ঢুকতে পারবে। মাস্ক ছাড়া কোন কর্মচারীর ভেতরে প্রবেশ সংরক্ষিত করুন। প্রয়োজনে প্রবেশপথে অতিরিক্ত মাস্ক এর ব্যবস্থা করুন। কেও ভুল করে না আনলে তাকে সতর্ক করে একটি মাস্ক দিয়ে দিন।
৪. বায়ু চলাচল বৃদ্ধি করুন। সেন্ট্রাল এয়ার কন্ডিশনার ব্যবহার করার ক্ষেত্রে এয়ার কন্ডিশনারের স্বাভাবিক সচলতা নিশ্চিত করুন, বিশুদ্ধ বাতাস বৃদ্ধি করুন এবং সকল এয়ার সিস্টেমের (all air system)ফিরে আসা বাতাসকে বন্ধ রাখুন।
৫. বারবার সংস্পর্শে আসা সুবিধাসমূহ এবং অন্যান্য সর্বসাধারণের ব্যবহার্য সুবিধাসমূহ নিয়মিত পরিষ্কার ও জীবাণুমুক্ত করুন (যেমন লকার, এলিভেটর বাটন, এস্কেলেটরের হাতল, বাথরুমের দরজার হাতল, জনসাধারণের ব্যবহার এর জন্য ময়লার ক্যান ইত্যাদি)
৬. এলিভেটর, তথ্যকেন্দ্র এবং সেলস এরিয়া পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখুন এবং ময়লা সময়মতো পরিষ্কার করুন।
৭. গণশৌচাগারগুলোতে হাত ধোয়ার জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণে তরল সাবান (বা সাধারণ সাবান) প্রদান করতে হবে এবং পানি সরবরাহের সাধারণ কার্যকারিতা যেমন কলের মাধ্যমে নিশ্চিত করতে হবে।
৮. ক্রেতাদেরকে মূল্য প্রদান ও বের হওয়ার লাইনে দাঁড়ানোর সময় নিরাপদ দূরত্ব বজায় রাখার কথা মনে করিয়ে দেয়ার জন্য লাইনে ১ মিটার দূরত্ব বজায় রাখার (লাইনে ১ মিটার দূরত্ব অন্তর অপেক্ষা করা) ব্যবস্থা স্থাপন করতে হবে। প্রয়োজনে রেখা টেনে দিন বা গোল চিহ্ন দিয়ে দিন এবং কড়াকড়ি ভাবে শারীরিক দূরত্ব তদারকি করুন। মাস্ক ছাড়া কোন ক্রেতা বা কর্মচারীর ভিতরে প্রবেশ সংরক্ষিত করুন।
৯. মানুষের চলাচলের প্রবাহকে নিয়ন্ত্রণ করুন এবং শপিংমলে ক্রেতার সংখ্যা সীমিত করুন।
১০. সেলফ-সার্ভিস শপিং ও স্পর্শ ব্যতিরেকে মূল্য পরিশোধের ব্যবস্থা ও সুপারিশ করুন, এবং লাইনে দাঁড়ানোর সময় কমিয়ে আনুন।
১১. স্টাফদের ব্যক্তিগত সুরক্ষা জোরদার করতে হবে এবং মাস্ক পরতে হবে; হাতের হাইজিনের প্রতি লক্ষ্য রাখতে হবে এবং হাঁচি দেয়ার সময় মুখ এবং নাক টিস্যু বা কনুই দিয়ে ঢাকতে হবে।
১২. ক্রেতাদেরকে অবশ্যই মাস্ক পরতে হবে এবং এলিভেটর ব্যবহার করার সময় একজনের থেকে আরেকজন দূরত্ব বজায় রাখতে হবে।
১৩. পোস্টার, ইলেকট্রনিক স্ক্রিন এবং বুলেটিন বোর্ডের মাধ্যমে স্বাস্থ্যজ্ঞান পরিবেশন ও প্রচার জোরদার করুন।
বিজ্ঞাপন
১৪. যদি নিশ্চিত কোভিড-১৯ রোগী থাকে তবে স্থানীয় সিডিসির স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নির্দেশনা অনুসারে সর্বত্র জীবাণুমুক্তকরণ করতে হবে, এবং একই সময়ে এয়ার কন্ডিশনিং ও ভেন্টিলেশন সিস্টেমকে পরিষ্কার ও জীবাণুমুক্ত করতে হবে, এবং স্থাপনাটির স্বাস্থ্যগত অবস্থা বা হাইজেনিক মূল্যায়ন হওয়ার আগে সেটি পুনরায় চালু করা উচিত না।
১৫. মাঝারি ও উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায়, শপিং মলগুলোকে তাদের বিজনেস আওয়ার সংক্ষিপ্ত করতে এবং ক্রেতার সংখ্যা কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ/সংরক্ষিত করতে প্রয়োজনীয় সকল ব্যবস্থা নিতে হবে।
ডা. মো. রিজওয়ানুল করিম শামীম: সহযোগী অধ্যাপক, ইপিডেমিওলজি; প্রোগ্রাম ম্যানেজার মেন্টাল হেলথ, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
আপনার মন্তব্য