সিলেটটুডে ওয়েব ডেস্ক

১০ ফেব্রুয়ারি , ২০১৫ ১১:৫৯

বাংলাদেশের জন্য সুখবর নিয়ে অাসছে ফেসবুক

দুই-এক দিনের মধ্যেই সেই সুখবর ঘোষণা করা হতে পারে। এই ঘোষণার মধ্য দিয়ে প্রমাণিত হবে বাংলাদেশও ফেসবুকের কাছে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক বাংলাদেশের জন্য সুখবর নিয়ে অাসছে। দুই-এক দিনের মধ্যেই সেই সুখবর ঘোষণা করা হতে পারে। এই ঘোষণার মধ্য দিয়ে প্রমাণিত হবে 'বাংলাদেশও ফেসবুকের কাছে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে' বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

প্রসঙ্গত, বাংলাদেশে এক কোটি ৬০ লাখের বেশি ফেসবুক ব্যবহারকারী রয়েছে।

বাংলা ভাষায় ফেসবুক, বাংলাদেশে ফেসবুকের অফিস নাকি বাংলাদেশে ফেসবুকের অ্যাডমিন বা কন্ট্রোল প্যানেল বসছে এ নিয়ে রীতিমতো 'গুঞ্জন' উঠেছে তথ্যপ্রযুক্তি অঙ্গনে। তবে এ তিনটির যে-কোনও একটি যে বাস্তব রূপ পেতে যাচ্ছে, তা এরই মধ্যে সংশ্লিষ্টদের কথা-বক্তব্যে পরিস্কার হয়ে গেছে।

চলতি মাসের ৯-১২ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিতব্য ডিজিটাল ওয়ার্ল্ডে যোগ দিতে অাসছেন ফেসবুকের এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের পরিচালক অাঁখি দাশ। তিনি ডিজিটাল ওয়ার্ল্ডে বিভিন্ন পর্বে (সেমিনার, কর্মশালা, বিভিন্ন সেশন) অংশ নেবেন। এ সময় তিনি সরকারের সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলোর সঙ্গেও অালোচনাসহ দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করবেন বলে জানা গেছে। এ সময় অাঁখি দাশের কাছে বাংলাদেশের অাগ্রহের কথা তুলে ধরা হবে।

তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (অাইসিটি) বিভাগের প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ অাহমেদ পলক এ বিষয়ে বলেন, 'ফেসবুকের কাছ থেকে শিগগিরই অামরা একটা সুখবর পাব বলে অাশা করছি। অাঁখি দাশ বাংলাদেশে অাসছেন। ডিজিটাল ওয়ার্ল্ডের এ কর্মযজ্ঞ দেখে নিশ্চয় তিনি কোনও ইতিবাচক সিদ্ধান্ত নেবেন।'

২০১৪ সালের মে মাসে অাইসিটি বিভাগের প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ অাহমেদ পলকের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালিতে ফেসবুকের অফিস পরিদর্শন করেন। এ সময় ফেসবুক কর্তৃপক্ষের কাছে বাংলাদেশে বাংলা ভাষায় ফেসবুক চালু এবং গবেষণা ও উন্নয়ন (অার অ্যান্ড ডি) কেন্দ্র স্থাপনের অাহ্বান জানায় প্রতিনিধি দল। ওই সময় বিষয়টি বিবেচনা করবে বলে অাশ্বাস দিয়েছিল ফেসবুক কর্তৃপক্ষ।

ওই প্রতিনিধি দলে ছিলেন বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার ইনফরমেশন সার্ভিসেস (বেসিস) সভাপতি শামীম অাহসান। জানতে চাইলে তিনি বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, 'এবারও অামরা অাঁখি দাশের কাছে একই অাহ্বান জানাব।' তিনি মনে করেন, এরই মধ্যে বাংলা‌‌‌দেশে ফেসবুকের একটি বিশাল বাজার তৈরি হয়েছে। ব্যবহারকারীর সংখ্যা দেড় কোটিরও বেশি উল্লেখ করে তিনি বলেন, 'অামার ধারণা ভবিষ্যতে ফেসবুক বাংলাদেশে তার অফিস চালু করবে।'

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ফেসবুক এ দেশে অফিস খুলে গবেষণা-উন্নয়ন কেন্দ্র চালু করলে প্রচুর কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হবে। তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ে পড়াশোনা করলেই সুযোগ তৈরি হবে ফেসবুকে ক্যারিয়ার গড়ার। সূত্রমতে, গুগল, ইয়াহুর ‌‌‌‌‌‌চেয়ে ফেসবুকের কর্মীদের বেতনের অংকটা বেশ মোটা। ওই সূত্র জানায়, পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে ফেসবুকের একাধিক অফিস রয়েছে। ওইসব অফিসে দেশটির বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় এবং ইনস্টিটিউটে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীরা পড়াশোনা শেষ হওয়ার অাগেই মোটা মাইনে যোগ দিচ্ছে।

সম্প্রতি ভারতের 'দ্য ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি খড়গপুর' (আইআইটি খড়গপুর) -এর শিক্ষার্থীরা মোটা বেতনের চাকরির প্রস্তাব পান ফেসবুক থেকে। তবে ফেসবুক এক শিক্ষার্থীকে সর্বোচ্চ বার্ষিক আড়াই লাখ ডলার বা প্রায় এক কোটি ৫৫ লাখ রুপির বেতন প্রস্তাব করে। সংশ্লিষ্টদের ধারণা, ফেসবুক দেশে এলে বাংলাদেশেও এমন চিত্র দেখা যাবে।

এদিকে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিটিঅারসির সচিব ও পরিচালক (এনফোর্সমেন্ট) সারোয়ার অালম জানিয়েছেন, দেশে ফেসবুকের কাছে 'অ্যাডমিন প্যানেল' স্থাপনের অাহ্বান জানিয়ে চিঠি পাঠালে তারা উত্তর পাঠায়। ওই চিঠিতে ফেসবুক কোনও 'নেতিবাচক' কিছু লেখেনি বলেও তিনি জানান।

সারোয়ার অালম বলেন, 'ফেসবুক কর্তৃপক্ষ অারও কিছু ‌‌‌বিষয় ফিরতি চিঠিতে উল্লেখ করেছে। ওই বিষয়গুলো অামরা বিবেচনা করব। সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের সঙ্গে অালাপ অালোচনা করেই সবকিছু চূড়ান্ত করে তাদের অাবার ‌‌‌চিঠি দেওয়া হবে। উত্তর পেলে পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে' বলেও তিনি জানান।

দেশে অ্যাডমিন প্যানেল বসলে ফেসবুক কেন্দ্রিক সব ধরনের সমস্যার সমাধান করা সম্ভব। অার ফেসবুক যদি অফিস চালু করে, তাহলে কর্মসংস্থানসহ সম্ভাবনার অনেক দুয়ার খুলবে বলে সংশ্লিষ্টদের অাশা।

 

আপনার মন্তব্য

আলোচিত