আন্তর্জাতিক ডেস্ক

২৪ ডিসেম্বর, ২০২৩ ১৩:৪২

এবার বড়দিনের উৎসব হচ্ছে না যীশুর জন্মস্থানেই

খ্রিস্টানদের সবচেয়ে বড় উৎসব ক্রিসমাস ডে বা বড়দিনে যীশুর জন্মস্থান হিসেবে পরিচিত বেথলেহেমে এবার উৎসবের আমেজ নেই। গাজায় নির্বিচারে মানুষ হত্যার সরাসরি প্রভাব পড়েছে পশ্চিম তীরের বেথলেহেমে। ফিলিস্তিনি এ ভূখণ্ডের খ্রিস্টানদের মাঝে এবারের উৎসব শোক-শঙ্কার। সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার এক প্রতিবেদনে উঠে এসেছে উৎসবে নিরানন্দ এক অন্যরকম বেথলেহেমের চিত্র ।  

প্রতিবেদনের শুরুতে বেথলেহেম পরিস্থিতির বর্ণনা উঠে এসেছে ৮৭ বছর বয়সী ফিলিস্তিনি খ্রিস্টান নোহা হেলমি তারাজির বক্তব্যে। সাধারণত বাড়িতে বড় ক্রিসমাস ট্রি বর্ণিল সাজে সাজিয়ে, রঙিন আলোয় আলোকিত করে আনন্দ উৎসবে মাতে নোহার পরিবার। যে যেখানেই থাকুক বড়দিনে বাড়িতে আসে সবাই, জমে ওঠে চাঁদেরহাট। ক্রিসমাস ট্রির নিচেই থরে থরে সাজানো উপহারে তার পরিবারের সদস্যরা আনন্দ ভাগাভাগি করেন নেয়।

কিন্তু এবার কেউ বাড়িতে আসতে পারেনি। এমনকি শিশুদের মাঝেও উৎসবের আনন্দ নেই। নোহা বললেন,’আমাদের হৃদয়ে এবার আনন্দ নেই।’

আল জাজিরা বলছে, যীশুর জন্মস্থান বেথলেহেমে এবার বড়দিনের উৎসব হচ্ছে না। প্রতি বছর যীশুর জন্মদিনে সমগ্র বিশ্ব থেকে খ্রিস্টানরা আসেন এই তীর্থে। অথচ এবার গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসনে থমথমে অবস্থা বেথলেহেমে। একই সঙ্গে নেই ক্রিসমাসের বেচাকেনা, অর্থনীতি স্থবির হয়ে গেছে।  

বেথলেহেমে বড়দিনের উৎসবের কেন্দ্র নেটিভিটি স্কয়ার, রাস্তাঘাট, জমায়েত চত্বরগুলো ফাঁকা, বলতে গেলে জনমানবহীন। অথচ প্রতিবছর এসব জায়গা বড়দিনে হয় লোকারণ্য। বেথলেহেমে প্রবেশের সব রাস্তা ইসরায়েলি সেনারা বন্ধ করে দিয়েছে। শুধু তা-ই নয়, শহরের অনেক বাড়িতে হামাস-ইসলামিক জিহাদ যোদ্ধাদের খোঁজে ব্যাপক তল্লাশি চালিয়েছে ইসরায়েলি সেনারা।

অন্যদিকে গাজার সঙ্গে সংহতি জানিয়ে, এবারের বড়দিনের সব উৎসব স্থগিত রেখেছে ফিলিস্তিনের সব গীর্জা । সব মিলিয়ে চলমান পরিস্থিতিতে সবচেয়ে বড় ধাক্কা লেগেছে বেথলেহেমের ক্রিসমাস পর্যটনে। যেটি দুই বছর করোনা মহামারির ধাক্কা সামলে সবে ভালো দিন দেখতে শুরু করেছিল।

ফিলিস্তিনের পর্যটন ও সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় জানায়, প্রতিবছর বড়দিনের সময় বেথলেহেমে ১৫ লাখের বেশি পর্যটকের সমাগম ঘটে। স্থানীয় কুটির শিল্প ব্যবসায়ী জ্যাক ইসা জাকমান বলেন, ‘গাজায় যা হচ্ছে তা যেন আমাদের সবাইকে শাস্তি দেওয়া। এই যুদ্ধ আমাদের হোটেল, ব্যবসা এবং বেথলেহেমের সমগ্র পর্যটনখাতকে পঙ্গু করে দিয়েছে।’  

ফিলিস্তিনের পর্যটন মন্ত্রী রুলা মায়াহ বলেন,’ যখন পুরো বিশ্ব ক্রিসমাসের আনন্দে মেতেছে তখন বেথলেহেম শোক, নিরবতা, কষ্টে নিমজ্জিত, অবরুদ্ধ।’   

প্রসঙ্গত, গত ৭ অক্টোবর থেকে গাজায় ইসরায়েলের ক্রমাগত হামলায় ২০ হাজার ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। আহত হয়েছে অর্ধ লক্ষাধিক মানুষ। গাজা ছাড়িয়ে ইসরায়েলি আগ্রাসনের ভিন্ন ভিন্ন রূপ দেখছে ফিলিস্তিনের পশ্চিম তীর।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত