সিলেটটুডে ইন্টারন্যাশনাল ডেস্ক

০৬ জুলাই, ২০১৬ ১৭:২১

বাংলাদেশ অভিযোগ করলে জাকির নায়েককে নিষিদ্ধ করতে পারে ভারত

বিতর্কিত বক্তব্যের কারণে যুক্তরাজ্য, কানাডা ও মালয়েশিয়ায় ইতিমধ্যে নিষিদ্ধ হয়েছেন জাকির নায়েক।  বিতর্কিত এই ইসলামী চিন্তাবিদ, বক্তা ও লেখকের বক্তৃতায় উদ্বুদ্ধ হয়ে দক্ষিণ এশিয়ার বহু তরুণ জঙ্গিবাদে ঝুঁকছে বলে অভিযোগ রয়েছে।

গুলশান হামলায় জড়িত দুই জঙ্গির ক্ষেত্রে যদি জাকির নায়েকের প্রভাব প্রমাণিত হয়, তাহলে এবার ভারতেও নিষিদ্ধ করা হতে পারে তাকে। এক প্রশ্নের জবাবে ভারতীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সেদেশের এনডিটিভিকে জানিয়েছে, বাংলাদেশ প্রমাণ সরবরাহ করলে সে ব্যাপারে চিন্তা করতে পারে ভারত।

ভারতের স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী কিরেন রিজ্জু সংবাদমাধ্যমকে বলেন, “আমরা যদি ঢাকা থেকে অনুরোধ পাই, তাহলে জাকির নায়েককে নিষিদ্ধের বিষয়টি আমরা গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করব।”

নিহত জঙ্গিদের দুজন- রোহান ইমতিয়াজ এবং নিবরাস ইসলাম জাকির নায়েককে অনুসরণ করত।  রোহান গত বছর জাকির নায়েকের পিস টিভির একটি অনুষ্ঠান তার ফেসবুক পেজে পোস্ট করেছিল।

ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস টাইমস এর প্রতিবেদনে বলা হয়, ৫০ বছর বয়সী জাকির নায়েক মুম্বাইয়ের ইসলামিক রিসার্চ ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা।  অন্য ধর্মকে নিয়ে বিদ্বেষমূলক বক্তব্য দেওয়া এবং ওসামা বিন লাদেনকে সন্ত্রাসী আখ্যা দিতে অস্বীকৃতি জানানোর কারণে বিভিন্ন সময়ে সমালোচিত হয়েছিলেন তিনি।

২০১০ সালে এক প্রেস কনফারেন্সে জাকির নায়েকের কাছে জানতে চাওয়া হয়, যুক্তরাজ্য কেন তাকে নিষিদ্ধ করেছে। জবাবে তিনি জানান, সকল মুসলিমকে সন্ত্রাসী হওয়ার অনুপ্রেরণা দেওয়ার কারণে তাকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। তিনি তখন বলেছিলেন, ‘আমি মুসলিমদের বলেছিলাম, সকল মুসলিমের সন্ত্রাসী হওয়া প্রয়োজন। টেররিস্ট বা সন্ত্রাসী হলো সেই ব্যক্তি যে অন্যদের টেররাইজ বা ভীত সন্তস্ত্র করতে পারে। যখন একজন ডাকাত পুলিশকে দেখে তখন সে ভয় পায়। সেকারণে একজন ডাকাতের জন্য পুলিশ একজন সন্ত্রাসী। সেদিক থেকে সব মুসলিমেরই ডাকাতের কাছে সন্ত্রাসী বলে বিবেচিত হওয়া প্রয়োজন।’

পিস টিভিতে সম্প্রচারিত জাকির নায়েকের এ বক্তব্যটি গত বছর ফেসবুকে শেয়ার করেছিল রোহান। এদিকে নিবরাস ইসলাম জাকির নায়েক ছাড়াও আনজেম চৌধুরী এবং শামী উইটনেসকে ২০১৪ সাল থেকে টুইটারে অনুসরণ করে আসছিল। শামী উইটনেস নামের টুইটারটি চালান ২৪ বছর বয়সী মেহেদি বিশ্বাস।  তাকে ২০১৪ সালে ভারত থেকে আটক করা হয়।  মেহেদি বিশ্বাসকে আইএসের টুইট একাউন্টের সঙ্গে সম্পৃক্ততা থাকার কারণে বিচারের মুখোমুখি করা হয়।

বাংলাদেশের জঙ্গি হামলার ঘটনায় জাকির নায়েকের প্রভাব প্রমাণিত হলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে কিনা সে ব্যাপারে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কাছে এনডিটিভির পক্ষ থেকে জানতে চাওয়া হয়।  ভারতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, জাকির নায়েকের ব্যাপারে বাংলাদেশ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে কোনও অনুরোধ জানানো হয়নি। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী কিরেন রিজ্জু বলেন, তাকে (জাকির নায়েককে) গ্রেফতারের জন্য আমাদেরকে আদালতের সামনে প্রমাণ হাজির করতে হবে।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত