সিলেটটুডে ইন্টারন্যাশনাল ডেস্ক

২৩ জুলাই, ২০১৬ ২১:২৮

মিউনিখ হামলার পেছনে উগ্র খ্রিস্টান ডানপন্থি ব্রেইভিক, সন্দেহ পুলিশের

আদালতে ব্রেইভিক

জার্মানির মিউনিখে অলিম্পিয়া শপিংসেন্টারে হামলায় আইএস বা কোনো ইসলামি জঙ্গিগোষ্ঠী জড়িত থাকার প্রমাণ পায়নি পুলিশ। পুলিশ জানিয়েছে, হামলাকারী নরওয়ের উগ্র খ্রিস্টান ডানপন্থি ব্রেইভিকের কাছ থেকে অনুপ্রেরণা পেয়ে থাকতে পারে। কারণ ২০১১ সালের এই দিনেই (২২ জুলাই) ব্রেইভিক ৭৭ জনকে হত্যা করেছিল।

শুক্রবার (২২ জুলাই) বিকেলে ১৮ বছর বয়সী ইরানি বংশোদ্ভূত এক তরুণ একাই এ হত্যাযজ্ঞ চালায়। এ ঘটনায় ১০ জন নিহত হয়। আহতদের মধ্যে ১০ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছে পুলিশ। হামলাকারী তরুণের জার্মানি ও ইরান দুদেশেরই পাসপোর্ট ছিল। তবে তার নাম এখনও প্রকাশ করেনি পুলিশ।

প্রথম দিকে এই হত্যাকাণ্ডের জন্য ইসলামি জঙ্গিবাদকে দায়ী করা হলেও মিউনিখ পুলিশ এখন বলছে, ওই তরুণের সঙ্গে কোনো জঙ্গী গোষ্ঠির যোগাযোগ ছিল না। তরুণটি মানসিক অবসাদগ্রস্ত ছিল এবং তার চিকিৎসাও চলছিল বলে জানা যাচ্ছে। পুলিশ বলছে, হামলাকারী একজন ছাত্র এবং গুলি করে গণহারে হত্যাকাণ্ড ঘটানোর প্রতি তার একটা অন্ধ আকর্ষণ ছিল বলে তথ্য প্রমাণও পাওয়া গেছে।

হামলাকারীর বাসায় তল্লাশি করে পুলিশ যেসব কাগজপত্র পেয়েছে, তার মধ্যে রয়েছে বিভিন্ন পত্রিকায় বের হওয়া হামলা সংক্রান্ত নানা খবরের কাটিং এবং ‘ছাত্ররা কেন হত্যা করে’ শিরোনামে একটি নিবন্ধ।

পুলিশ জানায়, গুলি চালানোর আগে ওই তরুণ কিছু একটা বলে চিৎকার করছিল, কিন্তু তদন্তকারীরা এখনও পর্যন্ত বের করতে পারেনি ওই তরুণ আসলে কী বলেছিল। তবে মোবাইলে ধারণ করা ভিডিওতে ‘আমি জার্মান’ কথাটি কাউকে বলতে শোনা গেছে। আর এর পরই এমন ধারণা জোরালো হয়েছে যে উগ্র ডানপন্থি মতাদর্শের কোনো সমর্থক এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়ে থাকতে পারে।

পুলিশ বলছে, নরওয়ের গণহত্যাকারী অ্যান্ডারস বেহরিং ব্রেইভিক ২০১১ সালের ২২ জুলাই ৭৭ জনকে হত্যা করেছিল, তার সঙ্গে এই তরুণের যোগাযোগের প্রমাণও তারা পেয়েছে। ব্রেইভিক নরওয়ের রাজধানী অসলোতে বোমা মেরে আট জন এবং উটোয়া আইল্যান্ডে মধ্যবামপন্থি দলের গ্রীষ্মকালীন যুবসম্মেলনে এলোপাতাড়ি গুলি চালিয়ে ৬৯ জনকে নির্বিচারে হত্যা করে।

বর্তমানে ব্রেইভিকের বয়স ৩৭ বছর। ২০১২ সালে নরওয়ে আদালত তার ২১ বছরের সাজা দেন। সে বর্তমানে কারাগারে রয়েছে। ব্রেইভিক উগ্র ডানপন্থায় বিশ্বাসী ছিল এবং তার ভাষ্যমতে, ইউরোপে মুসলিমদের অভিবাসন ঠেকানোই ছিল তার উদ্দেশ্য।

পুলিশ মনে করছে, মিউনিখ হামলাকারী ওই তরুণ নরওয়ে গণহত্যার বার্ষিকীর দিনটি বেছে নেয়ার কারণ সে ব্রেইভিকের কাছ থেকে অনুপ্রেরণা পেয়ে থাকতে পারে।

তদন্তকারী পুলিশের সন্দেহ, একজন মেয়ের ছদ্মনামে ফেসবুকে ভুয়া অ্যাকাউন্ট খুলে খুন করার জন্য লোকজনকে ম্যাকডোনাল্ড-এর দোকানে ডেকে এনেছিল হামলাকারী।

শপিং সেন্টারের ভেতর একজন প্রত্যক্ষদর্শী স্থানীয় একটি টিভি চ্যানেলকে জানিয়েছেন, হামলাকারী সেনা স্টাইলের বুট পরেছিল এবং তার পিঠে ব্যাগ ছিল। যেমনটি পরেছিল নরওয়ের ব্রেইভিকও। ঘটনার পরপরই অবশ্য সে আত্মহত্যা করে। তার হাতে ছিল নাইন এমএম গ্লোক পিস্তল এবং ৩০০টি বুলেট।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত