সিলেটটুডে ইন্টারন্যাশনাল ডেস্ক

০৬ আগস্ট, ২০১৬ ১২:৪৪

মানবাধিকার হরণে পাকিস্তানই এক নম্বর

লোকসভায় ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিং

ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিং বলেছেন, মানবাধিকার হরণের ক্ষেত্রে সারা বিশ্বে পাকিস্তানই ১ নম্বর দেশ। দলমত-নির্বিশেষে ভারতের সব প্রধানমন্ত্রীই প্রতিবেশীদের সঙ্গে সম্পর্কের উন্নতির জন্য চেষ্টা করে গেছেন। কিন্তু এই প্রতিবেশী এখনো তা মানতে পারছে না।

সার্ক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীদের সম্মেলনে যোগ দিতে রাজনাথ সিং ২৪ ঘণ্টার জন্য ইসলামাবাদ গিয়েছিলেন। বৃহস্পতিবার দেশে ফিরে তিনি বলেছিলেন, যা বলার তা সংসদেই বলবেন। ভারতীয় সংসদের উভয় কক্ষেই তিনি এই সফর নিয়ে বিবৃতি দেন।

লোকসভায় বলেন, সন্ত্রাসবাদীদের পাকিস্তান যেভাবে লালন-পালন করে চলেছে, তার বিরুদ্ধে তিনি কড়া বার্তা দিয়ে এসেছেন। জানিয়েছেন, শুধু সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিলেই চলবে না, আশ্রয়দাতা দেশের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া দরকার। অন্যথায় এই বিপদের হাত থেকে রক্ষা নেই। রাজনাথ বলেন, ‘সার্ক সদস্য দেশগুলোকে আমি অনুরোধ করেছি, দয়া করে সন্ত্রাসবাদীদের মদদ দেবেন না। তাদের স্বাধীনতাসংগ্রামী বলবেন না।’

এই সম্মেলনে ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর ভাষণ পাকিস্তান সম্প্রচার করেনি। ভারতীয় সংবাদমাধ্যমকেও সম্মেলনে থাকতে দেওয়া হয়নি। রাজ্যসভার সদস্যরা এই মনোভাবের কড়া সমালোচনা করেন। রাজনাথ এর জবাবে বলেন, এটা ঠিক যে তাঁর ভাষণ সম্প্রচারিত হয়নি, ভারতের সাংবাদিকদেরও থাকতে দেওয়া হয়নি।

তবে এ নিয়ে তিনি কোনো মন্তব্য করবেন না। প্রটোকলের বিষয়টি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে না জেনে কোনো কথা বলবেন না। বিকেলে পররাষ্ট্র মন্ত্রকের মুখপাত্র বিকাশ স্বরূপ জানান, সম্মেলনের প্রটোকল লঙ্ঘিত হয়নি।

রাজনাথ সিংয়ের সঙ্গে যে ব্যবহার পাকিস্তানে করা হয়েছে, দলমত-নির্বিশেষে রাজ্যসভার সদস্যরা তার নিন্দা করেন। মধ্যাহ্নভোজের প্রসঙ্গও সদস্যরা তোলেন। রাজনাথ এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মধ্যাহ্নভোজের আয়োজক ছিলেন। কিন্তু তিনি সেখানে না গিয়ে চলে যান। আমিও চলে আসি। আমি ওখানে ভোজ খেতে যাইনি।’

রাজনাথ সিংয়ের এই সম্মেলনে যোগ দেওয়া নিয়ে শুরু থেকেই একটা দোলাচল ছিল। শেষ পর্যন্ত ঠিক হয়, যেহেতু সম্মেলনটি বহুদেশীয়, তাই সেখানে যাওয়া যেতেই পারে। গেলে সন্ত্রাস সম্পর্কে কড়া বার্তাও রাজনাথ দিতে পারবেন। দ্বিপক্ষীয় কোনো বিষয়ের অবতারণা করা হবে না, সম্মেলনের বাইরে কোনো দ্বিপক্ষীয় বৈঠকেরও প্রশ্ন নেই। এই বিবেচনার পরই রাজনাথের সফর পাকা হয়। পাঠানকোট-কাণ্ডের পর এই প্রথম কোনো ভারতীয় নেতার পাকিস্তান সফর। কিন্তু সেই সফরে তিক্ততা বেড়ে গেল।

সার্ক সম্মেলনে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী যে ভাষণ দিয়েছেন তাতে স্পষ্ট, দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক ভালো হওয়ার কোনো সম্ভাবনা এখনই নেই। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক সূত্রের মতে, পাকিস্তানে এই মুহূর্তে ক্ষমতার একটা টানাপোড়েন চলছে। নির্বাচিত সরকারের সঙ্গে সেনাবাহিনীর শুরু হয়েছে তীব্র রেষারেষি। এই সুযোগে সন্ত্রাসবাদী সংগঠনগুলোও ভারতবিরোধী প্রচার তুঙ্গে তুলেছে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় মনে করছে, এই অবস্থায় দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক স্বাভাবিক হওয়ার সম্ভাবনা খুব ক্ষীণ।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত