সিলেটটুডে ইন্টারন্যাশনাল ডেস্ক

০৮ আগস্ট, ২০১৬ ০১:৩৭

এভারেস্টের বেসক্যাম্প আবর্জনাময় করে আসেন অভিযাত্রীরা!

সারা বিশ্ব অভিযাত্রীদের সুনাম রয়েছে পরিবেশ বান্ধব আচরণের জন্য। তবে এভারেস্টের বেসক্যাম্পে এই চিত্র ভিন্ন।

সেখানে দেখা যায় বরফের মধ্যে থেকে কোথাও উঁকি মারছে অক্সিজেন সিলিন্ডারের মুখ৷ কোথাও হাঁ মুখ নিয়ে আকাশপানে তাকিয়ে ট্রেকিং শু৷ কোথাও বা গুচ্ছ পাকানো দড়ির মধ্যে ধাতব সিঁড়ির ভাঙাচোরা অংশ৷ অনেকটা পাড়ার ডাস্টবিনের মত , এটা অন্নপূর্ণা বা এভারেস্টের বেসক্যাম্প৷ যেমন আমরা দই খেয়ে ভাঁড় ছুড়ে ফেলি, তেমনই শিখর ছোঁয়ার অদম্য নেশাক্রান্ত পর্বতারোহী এই সব ছড়িয়ে ছিটিয়ে ফেলেন৷ ফেলতে থাকেন৷ এবং জমতে জমতে যেন আর এক পাহাড়ের চেহারা নেয় এইসব পরিত্যক্ত সামগ্রীর স্তূপ৷

এই স্তূপ নিয়ে ক্ষোভের অন্ত নেই নেপালে৷ কিন্তু হাজার বিধিনিষেধেও কাজ হচ্ছে না! না পারতে  একাধিক সংগঠন অভিযান চালিয়ে পরিষ্কার করছে শৃঙ্গ পথ৷ এসব আবর্জনার ওজন জানলে অনেকে অবাক হয়েও যেতে পারেন।  সর্বশেষ পরিষ্কার  অভিযানে পাহাড় থেকে সমতলে নামানো হয় প্রায় দশ টন আবর্জনা৷

সেই পরিষ্কার অভিযানের সদস্য  এভারেস্ট সামিটার্স অ্যাসোসিয়েশনের কর্তা দিবাস পোখরেল বিরক্তিভরে বলছেন, “সবার কাছে সগরমাতা যেন পিকনিক স্পট হয়ে দাঁড়িয়েছে৷ রান্নাবান্না, খাওয়া-দাওয়া সেরে সবাই যেমন এঁটো কাঁটা ফেলে যায়, এও তেমন৷”

কেমন? ২৯ মে যেহেতু হিলারি ও তেনজিং নোরগে এই শিখরে চড়েছিলেন তাই সেই দিনটাতেই এভারেস্ট সাফসুতরো কাজ করে সামিটার্স অ্যাসোসিয়েশন৷ নেপাল সেনাও হাত লাগায়৷ ‘সেভিং মাউণ্ট এভারেস্ট ক্লিন আপ’ নামে শপথ পালনে নেমে তাঁরা দেখেন, বেস ক্যাম্প থেকে চূড়া পর্যন্ত যাত্রাপথে যেন মণিমাণিক্য ছড়ানো৷ একই ছবি অন্নপূর্ণা সার্কিটেও৷ পোখরায় নেপাল মাউন্টেনিয়ারিং অ্যাসোসিয়েশন-এর বিশাল হলঘরে থরে থরে সাজানো ট্রেকারদের পরিত্যক্ত সামগ্রী৷

রান্নার স্টোভ, গ্যাস, তাবু, দড়ি, অক্সিজেন সিলিন্ডার, সিঁড়ি, ছেঁড়া ফাটা জুতো, নানাবিধ স্নে্া-বাইট প্রতিরোধী মলমের ফাঁকা টিউব এবং এখানেই শেষ নয়৷ এগুলির পাশেই সাজানো আছে সামান্য হলেও গুটখার প্যাকেট, লাইটার৷ এসবের সঙ্গী তাসের প্যাকেট৷

নেপাল মাউণ্টেনিয়ারিং অ্যাসোসিয়েশনের সহ-সভাপতি শান্তাবীরলামা বললেন, “আমরা প্রশিক্ষণ থেকে শুরু করে অনুমোদন, প্রতি পদে আবেদন করি, পাহাড় না বাঁচলে অভিযানটা করবেন কোথায়? কেউ কথা শোনে না৷”

আপনার মন্তব্য

আলোচিত