সিলেটটুডে ইন্টারন্যাশনাল ডেস্ক

০৫ ডিসেম্বর, ২০১৬ ১৮:৪৬

নদীর তীরে পড়ে আছে রোহিঙ্গা শিশুর মরদেহ, ফেসবুকে তোলপাড়

মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষী পুলিশ (বিজিপি) রাখাইন রাজ্যে নিরাপত্তা বাহিনীর গণহত্যা ও গণধর্ষণ থেকে রেহাই পেতে পলায়নরত রোহিঙ্গাবাহী নৌকায় গুলি চালিয়েছে।

এই গুলিতে তিনটি নৌকাডুবির ঘটনায় চার শিশুসহ অন্তত ১৫ জন নিহত হয়েছেন। এছাড়া আরো ৩১ জন নিখোঁজ রয়েছেন বলেজানা গেছে।

রোববার রাতে রাখাইনের মংডুর উত্তরাঞ্চলে নাফ নদীতে এই ঘটনা ঘটে। সোমবার (৫ ডিসেম্বর) মিয়ানমার সময় সকাল ৭টার দিকে নাফ নদীর তীরে দুটি শিশু এবং একজন নারীর মরদেহ পড়েছিল।

ছোট্ট দুই শিশুর নিথর দেহ নদীর তীরের এটেঁল মাটিতে মুখ থুবড়ে পড়ে আছে। এরই মধ্যে একটি শিশু মাটিতে এমনভাবে পড়েছিল যার সঙ্গে গত বছরের ২ সেপ্টেম্বরে সিরিয়ার শরণার্থী শিশু আইলান কুর্দির মরদেহের সাদৃশ্য পাওয়া গেছে।

মালয়েশিয়াভিত্তিক রোহিঙ্গা ভিশন টিভির মাধ্যমে এই ছবিটি প্রচার হয়েছে যা ফেসবুকসহ এরই মধ্যে বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়ে গেছে।  

শিশু হত্যার এই বিভৎস চিত্র দেখে অনেকেই মিয়ানমারের হাত থেকে রোহিঙ্গা শিশুদের উদ্ধারে দেশটিতে জাতিসংঘের হস্তক্ষেপেরও দাবি জানিয়েছেন।

আরভিশন টিভি জানিয়েছে, ডুবে যাওয়া নৌকাগুলোর আরোহীদের বেশির ভাগই উত্তর মংডুর রাইমাবিল গ্রাম থেকে পালিয়ে এসেছিলেন।

উল্লেখ্য, ৯ অক্টোবর বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী রাখাইন প্রদেশের মংডু এবং পার্শ্ববর্তী রাতেডং শহরের তিনটি চৌকিতে অজ্ঞাত পরিচয়ধারীদের হামলায় ১৩ জন সীমান্তরক্ষী নিহত হয়। এ ঘটনার জন্য রোহিঙ্গা মুসলমানদের অভিযুক্ত করে তাদের গ্রামগুলোতে অভিযান শুরু করে মিয়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনী।

জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা জানিয়েছে, অভিযানের নাম করে মিয়ামার সেনাবাহিনী, বিজিপি ও পুলিশের নেতৃত্বে রোহিঙ্গাদের ওপর ব্যাপক নির্যাতন চালানা হচ্ছে। তারা নারীদের ধর্ষণ, হত্যা এবং বাড়িঘর জ্বালিয়ে দিচ্ছে। এ অভিযানে এখন পর্যন্ত ২৫০ জন রোহিঙ্গা নিহত, সহস্রাধিক গ্রেপ্তার এবং বহু নারী ও কিশোরী ধর্ষণের শিকার হয়েছেন। অন্যদিকে প্রাণ বাঁচাতে বাংলাদেশে ১০ হাজারেরও বেশি রোহিঙ্গা আশ্রয় নিয়েছেন।

জাতিসংঘ রাখাইনে রোহিঙ্গাদের উপর পরিচালিত নির্যাতনকে 'জাতিগত নিধন' বলে উল্লেখ করেছে।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত