মোনাজ হক, জার্মানি থেকে

০৩ জুলাই, ২০১৭ ২১:১১

হামবুর্গে জি-২০ শীর্ষম্মেলনে অংশগ্রহণকারী দেশগুলির বিরুদ্ধে বিক্ষোভ

হাজার হাজার মানুষ জার্মানির হামবুর্গের জি-টোয়েন্টি শীর্ষ সম্মেলন এর প্রতিবাদে অংশ নিয়েছে রোববার। আগামী সপ্তাহে জি-টোয়েন্টি শীর্ষ সম্মেলন গ্রুপের বৈঠক, তাই প্রায় ৫ হাজার মানুষ বিশ্বের প্রধান ২০টি উন্নত ও উদীয়মান অর্থনীতির দেশগুলির জলবায়ু এবং বাণিজ্য নীতির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করার জন্য রোববার শহরের কেন্দ্রস্থলে প্রবেশ করেছিল।

আগামী সাত এবং আট জুলাই জার্মানির হামবুর্গ শহরে জি-টোয়েন্টি শীর্ষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হচ্ছে৷ বিশ্বের ২০টি শিল্পোন্নত দেশের শীর্ষনেতারা এই সম্মেলনে অংশ নেবেন৷

প্রতিবাদকারীরা হামবুর্গের পার্কে কার্যত একটি তাঁবু শহর গড়তে চাচ্ছেন, যেখানে দশ হাজার মানুষ তিন হাজার তাঁবু টাঙিয়ে জুলাইয়ের নয় তারিখ অবধি থাকবেন৷ শহর কর্তৃপক্ষ এ ধরনের ক্যাম্প পার্কে তৈরি আইনবিরুদ্ধ দাবি করে প্রতিবাদকারীদের তা স্থাপন করতে দেয়নি৷ এখন সর্বোচ্চ আদালতের নির্দেশনার পর নতুন করে ভাবতে হচ্ছে নগর কর্তৃপক্ষকে ৷

অবশেষে এই বিষয়ে দীর্ঘ আইনি লড়াইয়ের পর জার্মানির সর্বোচ্চ আদালত বিক্ষোভকারীদের পক্ষে এই রায় দিয়েছেন যে, জি-টোয়েন্টি সম্মেলনের সময় প্রতিবাদ কর্মসূচিতে অংশ নিতে হামবুর্গে যাওয়া ব্যক্তিরা চাইলে শহরে তাঁবুতে থাকতে পারবেন৷
 
কেন এই প্রতিবাদ?
জি-২০ বিশ্ব নেতাদের এই শীর্ষ সম্মেলনে পুঁজিবাদী বিশ্বকে প্রাধান্য দিয়ে একটি ধনতান্ত্রিক সমাজ গঠনের প্রচেষ্টা করা হচ্ছে যেখানে  আন্তর্জাতিক জলবায়ু চুক্তি যেমন "প্যারিস চুক্তিকে" পাশ কাটিয়ে বিশ্ব নেতারা আলোচনা করবেন সেটার প্রতিবাদে  জনগণ সোচ্চার। কয়েক হাজার প্রতিবাদকারী কণ্ঠ হামবুর্গ রাস্তায় নিতে এই গণসংযোগ জি -২০ এর বিরুদ্ধে বিক্ষোভের সপ্তাহ ২ জুলাই শুরু হয় এবং জলবায়ু পরিবর্তন, পুঁজিবাদ এবং "প্রতিবাদমুক্ত ওয়েভ" -তে বিশ্বব্যাপী সংঘর্ষের প্রতি কমপক্ষে ৫০.০০০ মানুষ প্রতিবাদ  করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

জার্মান ট্রেড ইউনিয়নের কনফিডেশন এবং অক্সফাম নামে গ্রিনপিসের শিরোনাম, ১২ টি অন্যান্য সংস্থা সহ সমর্থক যারা সহিংস বিক্ষোভকে সমর্থন করে রাস্তায় বের হবেন।  হামবুর্গের বিক্ষোভ ওয়েভের মুখপাত্র সোনিয়া এঞ্জেনেন্ড্টে-এর মতে, তারা উল্লেখযোগ্য রাজনৈতিক পরিবর্তনের জন্য জি -২০ শীর্ষ সম্মেলনটি ব্যবহার করবে।

তিনি বলেন, "আমরা গণতন্ত্রকে শক্তিশালী করতে, আমাদের জলবায়ুকে আরো ভাল সুরক্ষা, জার্মানির বিশ্বজুড়ে সামাজিক ন্যায়বিচার এবং আমরা একটি সুষ্ঠু বৈশ্বিক বাণিজ্য শাসনের দাবি জানাচ্ছি।"

সম্মেলনে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পও অংশ নেবেন তাই প্রতিবাদকারীরা সংগঠিত হয়েছে, ১২ টি অন্যান্য সংস্থা  ছাড়াও বামপন্থী গ্রীনপার্টি এবং সরকারি দল এসপিডি এর একঅংশ এই প্রতিবাদে অংশ নিচ্ছে।

এদিকে, বুধবার সকালে প্রতিবাদকারীরা হামবুর্গ এলবে নদীর উপরে একটি সেতুতে একটি ব্যানার টাঙিয়েছে যেখানে লেখা আছে, ‘‘সেতু তৈরি কর, দেয়াল নয়’’ (ট্রাম্প এর উদ্দেশ্যে)৷ পশ্চিমা ধনী রাষ্ট্রগুলোর অভিবাসননীতির বিরোধিতা করে এই ব্যানারটি প্রদর্শন করা হচ্ছে৷ এছাড়াও প্রচুর প্রতিবাদী গণসংগীত, জ্যাজ, রক ইত্যাদি অনুষ্ঠানের বিশাল আয়োজন রয়েছে।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত