সিলেটটুডে ইন্টারন্যাশনাল ডেস্ক

২৫ সেপ্টেম্বর, ২০১৭ ১২:৩৮

রাখাইন রাজ্যে গণকবরের সন্ধান, দাবি মিয়ানমার সেনাবাহিনীর

মিয়ানমারের সেনাবাহিনী দাবি করেছে, তারা রাখাইন রাজ্যে একটি গণকবরের সন্ধান পেয়েছেন, যেখানে শুধু হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের লাশ রয়েছে। এদেরকে রোহিঙ্গা মুসলিম জঙ্গিরা হত্যা করেছে বলে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর দাবি।

রোহিঙ্গা মুসলিমদের ওপর অত্যাচার-নির্যাতনের দীর্ঘ এক মাস পর এসে রোববার সেনাবাহিনী এই দাবি করল। তবে ওই এলাকায় চলাচলের ওপর নিয়ন্ত্রণ থাকায় সেনাবাহিনীর দাবি যাচাই করা সম্ভব হয়নি।

গত ২৫ আগস্ট রাখাইনে সহিংসতা শুরু হবার পর এখন পর্যন্ত ৪ লাখ ৩০ হাজারের বেশি রোহিঙ্গা মুসলিম পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে। তাদের সঙ্গে বসবাস করা ৩০ হাজার হিন্দুও বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছেন। তারা এখানে এসে নিজেদের স্বজনদের হত্যার নির্মম বর্ণনাও দিয়েছেন।

মিয়ানমার সেনাবাহিনীর এই অভিযানে ৫ হাজারের উপরে রোহিঙ্গা নিহতের খবর দিয়েছে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলো। যদিও মিয়ানমার সরকারের দাবি, নিহতের এই সংখ্যা ৪শ’।

রোববার নিজস্ব ওয়েবসাইটে এক বিবৃতির মাধ্যমে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী বলছে, ‘উত্তরাঞ্চলীয় রাখাইন প্রদেশের গ্রাম থেকে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা একটি গণকবর খুঁড়ে মোট ২৮টি লাশ পেয়েছেন। এদের সবাই হিন্দু ধর্মাবলম্বী এবং বেশিরভাগই নারী। তাদের হত্যা করেছে জঙ্গিগোষ্ঠী আরসা’র বাঙালি (রোহিঙ্গাদের বাঙালি বলে থাকে মিয়ানমার) সন্ত্রাসীরা।’

আরসা বা দ্য আরাকান স্যালভেশন আর্মিই গত ২৫ আগস্ট অন্তত ৩০টি পুলিশ চৌকি ও একটি সেনা ক্যাম্পে হামলা চালালে সংঘাতের শুরু হয় বলে দাবি মিয়ানমারের।

বর্মি সেনারা জানায়, রাখাইনের ইয়ে বাউ কিয়া গ্রামে উৎকট গন্ধ থেকে এই কবরের সন্ধান পায় নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা।এরপর সেখানকার দুটি কবর খুঁড়ে ২০ নারী ও ৮ পুরুষের লাশ উদ্ধার করে। এদের মধ্যে ৬ জন রয়েছে, যাদের বয়স ১০ বছরের নিচে।

মিয়ানমার সরকারের মুখপাত্র জ হুতাই এএফপিকে বলেছেন, পুলিশের এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা এই গণকবরের সন্ধান পান।

এদিকে, জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা ইউএনএইচসিআর’র প্রধান ফিলিপ্পো গ্র্যান্ডি বিবিসিকে বলেছেন, নির্মম হত্যাকাণ্ড, ধর্ষণ এবং বাড়িঘর আগুনে জ্বালিয়ে দেয়ার কারণে রোহিঙ্গারা আতঙ্ক আর উদ্বেগে দিন কাটাচ্ছে।

রাখাইনে চলমান সহিংসতাকে ‘জাতিগত নিধন’ বলে বর্ণনা করেছে জাতিসংঘ। যদিও শুরু থেকেই এই অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে মিয়ানমার।

তথ্যসূত্র: এএফপি ও এনডিটিভি।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত