সিলেটটুডে ডেস্ক

০৫ অক্টোবর, ২০১৭ ১২:২৬

প্রিন্স চার্লসের মিয়ানমার সফর বাতিল

দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া সফরের অংশ হিসেবে ব্রিটিশ যুবরাজ প্রিন্স চার্লসের মিয়ানমারে যাওয়ার কথা থাকলেও শেষ পর্যন্ত তা বাতিল করা হয়েছে।

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান জানিয়ছে, যুবরাজের চূড়ান্ত সফর সূচিতে মিয়ানমারের নামটি বাদ দেয়া হয়েছে। মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে রাখাইনে জাতিগত নিধনযজ্ঞ ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটনের অভিযোগ ওঠার ওর সফরসূচিতে এ পরিবর্তন এলো।

চলতি মাসের শেষের দিকে ব্রিটিশ সরকারের পক্ষে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া সফর করবেন প্রিন্স চার্লস। গত মাসের বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত খবরকে উদ্ধৃত করে গার্ডিয়ান জানায়, এ সফরের অংশ হিসেবে মিয়ানমারেও যাওয়ার পরিকল্পনা ছিল চার্লসের। তার সহযোগীরাও স্বীকার করেছেন, মিয়ানমারকেও সফরসূচিতে রাখার কথা বিবেচনায় ছিল। তবে যুবরাজের চূড়ান্ত সফরসূচিতে মিয়ানমারের নামটি বাদ দেয়া হয়েছে।

বুধবার ইস্যুকৃত চূড়ান্ত সফরসূচিতে দেখা যায় সেখানে মিয়ানমারের নাম নেই। ব্রিটেনের ফরেন অ্যান্ড কমনওয়েলথ অফিসের বিভাগীয় প্রধান ফিলিপ মেলন বলেন, আমরা জানাচ্ছি যে, আমরা সিঙ্গাপুর ও মালয়েশিয়া সফরে যাব- মেলন ও রাজপরিবারের সহযোগীরা এ ব্যাপারে বিস্তারিত বলতে আস্বীকৃতি জানিয়েছেন।

সফলের শুরুতে চার্লস ও তার স্ত্রী ক্যামিলা প্রথমে সিঙ্গাপুর ও মালয়েশিয়া যাবেন এবং তারপর ভারত সফর করবেন। ভারত সফরে তিনি দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন।

মিয়ানমারের বাহিনীর অবরোধের মুখে ২৪ আগস্ট মধ্যরাতের পর রোহিঙ্গা যোদ্ধারা অন্তত ২৫টি পুলিশ স্টেশনে হামলা ও একটি সেনাক্যাম্পে প্রবেশের চেষ্টা চালায়। এতে মিয়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে তাদের সংঘর্ষ শুরু হয়। এরপর রোহিঙ্গা অধ্যুষিত এলাকাগুলোতে অভিযান শুরু করে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী। একের পর এক রোহিঙ্গা গ্রাম জ্বালিয়ে দেয়া হয়। মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে নির্বিচারে গুলি করে ও কুপিয়ে হত্যা এবং নারীদের গণধর্ষণের অভিযোগ ওঠে। দাদের হত্যাযজ্ঞ থেকে রেহাই পায়নি বয়োবৃদ্ধ নারী এবং শিশুরাও। নিহত হয়েছেন প্রায় ৫ হাজার রোহিঙ্গা। প্রাণ বাঁচাতে রোহিঙ্গারা বাংলাদেশে আসতে শুরু করে।

জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক হাইকমিশনারের (ইউএনএইচসিআর) কার্যালয় জানায়, গত এক মাসে ৫ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে।

সহিংসতার কারণে গত মাসে মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর প্রশিক্ষণ কর্মসূচিকে স্থগিত করে ব্রিটেন এবং এ ইস্যুতে দেশ দুটির মধ্যকার কূটনৈতিক সম্পর্কের অবনতি ঘটে। মানবাধিকার সংগঠনগুলো মিয়ানমারে চার্লসের সফরের বিরোধিতা করে আসছিল।

মিয়ানমার ক্যাম্পেইন ইউকের ডিরেক্টর মার্ক ফারম্যানর বলেন, ‘প্রিন্স চার্লসের মতো মর্যাদাসম্পন্ন ব্যক্তির কোনো দেশ সফর করাকে একটি পুরস্কার হিসেবে দেখা হয় এবং তিনি মিয়ানমার সফর করলে সেটা হবে- বর্তমানে আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘনকারী সরকার ও সামরিক বাহিনীকে বৈধতা প্রদান করবে।’ ৩১ অক্টোবর সিঙ্গাপুর সফর দিয়ে শুরু হবে চার্লস ও ক্যামিলার সফর। এরপর তারা মালয়েশিয়া যাবেন। সেখানে তারা ব্রিটিশ উপনিবেশ থেকে স্বাধীন হওয়ার পর ৬০ বছরের কূটনৈতিক সম্পর্ক উদযাপন করবেন। ভারত সফরের মধ্যমে ১১ দিনের এ সফরের ইতি টানবেন।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত