ইন্টারন্যশনাল ডেস্ক

০১ ফেব্রুয়ারি , ২০১৮ ২৩:২৭

রাখাইনে পাঁচটি গণকবরের সন্ধান

মিয়ানমারের রাখাইনের একটি গ্রামে অন্তত পাঁচটি গণকবরের সন্ধান পাওয়া গেছে বলে জানা গেছে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, এসব গণকবরে অন্তত ৪০০ মৃতদেহ তারা দেখেছেন।

বার্তা সংস্থা এপি বৃহস্পতিবার প্রত্যক্ষদর্শী ও সংশ্লিষ্টদের বরাত দিয়ে এ সংক্রান্ত খবর প্রকাশ করে। খবরে জানা যায়, এসব মানুষকে হত্যার পর মাটি চাপা দেয় মিয়ানমারের সেনারা। এরপর চেহারাও বিকৃত করা হয় এসিড দিয়ে, যাতে চেনা না যায়।

বার্তা সংস্থাটি জানায়, স্যাটেলাইট চিত্র এবং রোহিঙ্গাদের ভাষ্য অনুযায়ী মিয়ানমারের রাখাইনের গু দার পাইন গ্রামে অন্তত পাঁচটি গণকবরের সন্ধান মিলেছে। গ্রামটির উত্তর দিকে তিনটি বড় গণকবর, আর গ্রামের কাছে পাহাড়ের পাশে আরো দুটি।

প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাত দিয়ে জানানো হয়, সেনারা অনেককে নদীতে ফেলে হত্যা করা হয়, অনেককে জীবন্ত কবর দেওয়া হয়। এসিডে দগ্ধ করা হয় অনেকের শরীর। কমপক্ষে ৪০০ মানুষকে হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়, যাদের ২০ জন শিশু ছিল।

এপি আরো জানায়, গু দার পাইন গ্রামের একটি স্কুলে মিয়ানমারের ২০০ সেনা ঘাঁটি গেড়েছিল। হত্যাকাণ্ড চালানোর জন্য তারা শুধুই রাইফেল, ছুরি, গ্রেনেড ও রকেট লঞ্চারই সঙ্গে আনেনি;  এসিডও নিয়ে এসেছিল।

বার্তা সংস্থার বরাতে এক প্রত্যক্ষদর্শী রোহিঙ্গা বর্ণনা দেন, ফুটবল মাঠে বৃষ্টির মতো গুলি চালিয়েছিল মিয়ানমারের সেনারা। নিহতদের চেহারা বিকৃত হয়ে গিয়েছিল, মুখের একটি অংশ ছিল এসিডে দগ্ধ এবং বুলেট-বিদ্ধ।

এপি জানায়,  মিয়ানমার সরকার ওই গ্রামে কাউকে প্রবেশ করতে দেয়নি। কতজন মারা গেছে তার জানা যায়নি। তবে বাড়িঘর পুড়িয়ে দেওয়ার কিছু ভিডিও তারা পেয়েছে।

এদিকে, গণকবরের খবরের জাতিসংঘের মিয়ানমার বিষয়ক বিশেষ দূত ইয়াংহি লি জানান, এটি গণহত্যার আলামত। পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে তদন্ত কমিটি গঠনের প্রয়োজনীয়তার কথাও জানান তিনি।

গত বছর ২৫ আগস্ট রাখাইনে অভিযান শুরু করে মিয়ানমারের সেনারা। এরপর গণহত্যা, গণ-ধর্ষণের মুখে সাত লক্ষাধিক রোহিঙ্গা পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়। মিয়ানমারের নেত্রী অং সান সু চি বিভিন্ন দেশের সমালোচনার মুখে পড়েছেন।

এর মধ্যে বাংলাদেশ থেকে রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনে মিয়ানমার চুক্তি করে ঢাকার সঙ্গে। কিন্তু বিভিন্ন দেশের কূটনীতিকরা বলছেন, মিয়ানমারে নিরাপত্তা নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠানো ঠিক হবে না।





আপনার মন্তব্য

আলোচিত