সিলেটটুডে ডেস্ক

০৩ মে, ২০১৮ ১১:১৪

১২ মাসে ১২০ সাংবাদিক নিহত

বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম দিবস আজ

গত ১২ মাসে সারাবিশ্বে ১২০ জন সাংবাদিক নিহত হয়েছেন। এরমধ্যে গত বছরের এপ্রিল থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত মারা যান ৮৮ জন। নিহতদের ৪৬ জন দুর্নীতিবিষয়ক খবর সংগ্রহে জড়িত ছিলেন।

২০১৮ সালের প্রথম চার মাসেই এক নারীসহ ৩২ জন সাংবাদিক নিহত হয়েছেন। গড়ে প্রতি মাসে বিশ্বজুড়ে নিহত হচ্ছেন ৮ জন সাংবাদিক। ওয়ার্ল্ড প্রেস ইন্সটিটিউটের (ডব্লিউপিআই) এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে।

বৃহস্পতিবার বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম দিবসকে সামনে রেখে প্রকাশিত এই প্রতিবেদনে বলা হয়, গত বছর নিহত ৮৮ সাংবাদিকের মধ্যে ছয়জন নারী।

২০১৭ সালের শেষ আটমাসে নিহত হয়েছিলেন ৫৫ জন সাংবাদিক। তাদের বেশিরভাগকেই টার্গেট করে হত্যা করা হয়েছিল। তারা দুর্নীতি নিয়ে অনুসন্ধান করছিলেন এবং প্রকাশের চেষ্টা করছিলেন।

চলতি বছর স্লোভাকিয়াতেই সরকারের দুর্নীতির অনুসন্ধান করতে গিয়ে প্রাণ হারাতে হয়েছে সাংবাদিক জ্যান কুসিয়াককে। ২২ ফেব্রুয়ারি তার বাড়িতে গিয়ে প্রেমিকা ও তার মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এই হত্যাকাণ্ডের পর পদত্যাগে বাধ্য হন দেশটির প্রধানমন্ত্রী রবার্ট ফিকো।

ডব্লিউপিআইয়ের ডেথ ওয়াচ প্রকল্প থেকে জানা গেছে, ১৯৯৭ সাল থেকে দায়িত্বপালন করতে গিয়ে নিহত হয়েছেন ১৮০১ জন সাংবাদিক। সবচেয়ে বেশি ছিল ২০১২ সালে। ওই বছর নিহত হন ১৩৩ জন। পরের বছর এই সংখ্যা ছিল ১২১ জন।

সংস্থাটির অনুসন্ধানে উঠে এসেছে, গত ১২ মাসে হত্যাকাণ্ডের শিকার সাংবাদিকদের মামলার অগ্রগতি তেমন হয়নি। কয়েকজনকে আটক করলেও খুব বেশি তদন্ত আগায়নি। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো স্লোভাকিয়ার ঘটনা, মালটায় গাড়িবোমা হামলা, ভারতে নিজ বাড়ির সামনে খুন হওয়া গৌরি লঙ্কেশ, মেক্সিকোর অনুসন্ধানী প্রতিবেদক জ্যাভিয়ের ভালদেস কার্দেনাসের মৃত্যু।

ইউরোপে সাংবাদিক হত্যার বিষয়টি সারাবিশ্বে আলোচনায় আসলেও আরও অনেক মৃত্যু খুব একটা মনোযোগ পায় না। লাতিন আমেরিকায় সবচেয়ে বেশি সাংবাদিক হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন। তারা বেশিরভাগই সেখানকার মাদক পাচার ও দুর্নীতি নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করছিলেন। শুধু মেক্সিকোতেই প্রাণ হারিয়েছেন ১২ জন।

সাংবাদিকরা সবসময়ই জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কাজ করে যান। অনেক সময় হত্যাকাণ্ডেরও শিকার হতে হয়। সম্প্রতি মধ্যপ্রাচ্যেও এমন ঘটনা ঘটেছে। ইসরায়েলি বাহিনীর গুলিতে প্রাণ হারিয়েছেন ফিলিস্তিনি দুই সাংবাদিক।

ডব্লিউপিআইয়ের নির্বাহী পরিচালক বারবারা ত্রিনোফি বলেন, সাংবাদিককে হত্যা করা হচ্ছে সংবাদকে দমিয়ে রাখার নৃশংসতম পন্থা। সত্য জানার অধিকার সবার আছে। আর এটা নিশ্চিত করার চেষ্টা করেন সাংবাদিকরা। ডেথ ওয়াচের মাধ্যমে আমরা দেখি, এই মৃত্যু শুধু সাংবাদিকের পরিবার, স্বজন ও বন্ধুদের জন্যই কষ্ট নয় বরং গণতন্ত্রের জন্যও হুমকি নিয়ে এসেছে।

১৯৫০ সাল থেকে কাজ করা এই সংস্থাটি সব সরকারকেই সাংবাদিকদের নিরাপত্তা দেওয়ার জন্য আহ্বান জানিয়ে আসছে।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত